নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহীঃ জেলার বাগমারা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শামসুজ্জোহা সরকার বাদশা’র বিরুদ্ধে জাল সনদপত্রে (সার্টিফিকেট) চাকরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে মনোবিজ্ঞান বিষয়ে এমএসসি পাসকৃত সনদ দিয়ে উপজেলার মোহনগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে ২০০১ সালে প্রভাষক পদে নিয়োগ লাভ করেন। পরে তিনি পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক স্কেল প্রাপ্ত হন। পরে তদন্ত করে তাঁর ওই সনদটি জাল বলে প্রমাণ পেয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এর সম্প্রতি পর তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবগত হওয়ার পরে শামসুজ্জোহাকে লিখিতভাবে চিঠি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আগামী ১৪ মার্চ কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাও আহ্বান করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক ও বাগমারা উপজেলা বিএনপির বর্তমান সদস্য সচিব শামসুজ্জোহা সরকার বাদশা ২০০১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী প্রভাষক পদে মোহনগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে যোগদান করেন। একই বছরের মে মাসে তিনি এমপিওভূক্ত হন। তবে বিভিন্ন সময়ে নিরিক্ষা অধিদপ্তরের অডিটে তাঁর সনদপত্র জালের বিষয়টি ধরা পড়লেও অর্থের বিনিয়ে এতোদিন তিনি সেটিকে ধাপাচাপা দিয়ে আসছিলেন। তবে সম্প্রতি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্তে সেই বিষয়টি ধরা পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ মে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরের আদেশক্রমে কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দেওয়া হয় কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিকে। ওই চিঠিতে মনোবিজ্ঞান শামসুজ্জোহা সরকারের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ হয়। এছাড়াও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শামসুজ্জোহার জাল সার্টিফিকেটে অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়ে গৃহীত সরকারি অংশ এবং কলেজের অংশের বেতন ভাতাদিসহ সকল আর্থিক সুবিধাদি স্ব স্ব কোষাগারে জমা দানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে জাল সনদের বিষয়টি অস্বীকার করে সহাকারী অধ্যাপক শামসুজ্জোহা বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করে আসছি। এতোদিন কোনো অভিযোগ উঠলো না। হঠাৎ করে প্রতিহিংসা করে আমার সম্মান ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যে এই ধরনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। আমি বিষয়টি নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বরণাপন্ন হবো। প্রয়োজনে আদালতে মামলা করবো।’
এ ব্যাপারে মোহনগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুরুল হুদা বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যায় থেকে এই ধরনের একটি চিঠি পাওয়া গেছে। আমরা ওই শিক্ষকের সকল সনদ জমা দিতে তাঁকে চিঠি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। এছাড়াও আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি এ নিয়ে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই সভায় পরবর্তি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
যোগাযোগ করা হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) ফাহিমা সুলতানা বলেন, জাল সনদের বিষয়টি প্রতীয়মান হওয়ায় রাজশাহীর বাগমারার মোহনপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক শামসুজ্জোহার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য গভর্নিংবডির সভাপতিকে চিঠি প্রদান করা হয়েছে। তাঁরা পরবর্তি সিদ্ধান্ত নিবে।’