ঢাকাঃ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির কারণে দেশের আট জেলায় ১২৩ শিশুর শিক্ষা ব্যাহত হয়েছে। জেলাগুলো হলো- সাতক্ষীরা, গাইবান্ধা, দিনাজপুর, সুনামগঞ্জ, পটুয়াখালী, কুড়িগ্রাম, বান্দরবান ও চট্টগ্রাম। আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা একশনএইডের জরিপে উঠে এসেছে এ তথ্য।
সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ মহিলা সমিতিতে জরিপটি প্রকাশ করা হয়। জলবায়ু পরিবর্তন কীভাবে শিশুদের ওপর প্রভাব ফেলে তা তুলে ধরার জন্য জানুয়ারি মাসে জরিপ করা হয়েছিল।
জরিপ অনুসারে, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ঝুঁকির কারণে ১২৩ জন শিশুর শিক্ষা ব্যাহত হয়েছে। ৬০ জন শিশু বলেছে যে তারা তাদের এলাকার পানিতে লবণাক্ততা অনুভব করছে। আর ৫৮ জন উত্তরদাতা বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তন তাদের এলাকায় চাষাবাদ কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে। ৫৩ জন শিশু জানিয়েছে তারা গত তিন বছরে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে এবং চারজন শিশু জানিয়েছে, তারা অ্যালার্জি এবং শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। এছাড়া দুজন শিশু বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগের কারণে তাদের পরিবার আবাসস্থল হারিয়েছে।
জরিপ প্রকাশ অনুষ্ঠানে ঢাকা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান বলেন, আমরা ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে চাই, যেখানে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি টেকসই ও সুন্দর পরিবেশে বসবাস করতে পারে।
তিনি বলেন, আমাদের পৃথিবী এক নজিরবিহীন জলবায়ু সংকটের মুখোমুখি, এবং এটি মোকাবিলার দায়িত্ব আমাদের সবার ওপর। খেয়াল রাখতে হবে আমাদের কোনো কর্মের ফলে যাতে শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তাই জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় তাদের অংশগ্রহণ কেবল গুরুত্বপূর্ণই নয়; বরং অপরিহার্য।
একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমান সময়ে অন্যতম প্রধান সমস্যা। আর বাংলাদেশ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি। বাংলাদেশে প্রতি তিনজন শিশুর মধ্যে একজন এবং প্রায় ২০ মিলিয়ন শিশু বিরূপ আবহাওয়া, বন্যা, নদীভাঙন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য পরিবেশগত সংকটের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সাবেক সচিব ড. অপরূপ চৌধুরী বলেন, জলবায়ু সংকট কেবল একটি পরিবেশগত ঘটনা নয়, এটি আমাদের শিশুদের ভবিষ্যৎ কেড়ে নিচ্ছে। তারা গৃহহীন হচ্ছে, তাদের শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি শিশু বিবাহ ও শিশুশ্রমের মতো কাজে যুক্ত হতে বাধ্য হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব অরিজীত চৌধুরী বলেন, যখন কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান অর্থ বরাদ্দ দেয়, তখন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিছু করছে কি না তা লক্ষ্য রাখতে হবে। যে কোনো সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের কার্যক্রমে পরিবেশ বিপর্যয়ের বিষয়টি মাথায় রাখার আহ্বান করছি।
শিশু প্রতিনিধি সিদরাতুল মুনতাহা প্রমি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শিশুরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ঠিক মতো হচ্ছে না।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১২/০৯/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়