‘চুরির অপবাদে’ মারধর, ১৩ দিন ধরে নিখোঁজ শিক্ষার্থী

ঢাকাঃ সাভারের আশুলিয়ায় হেডফোন চুরির অপবাদ দিয়ে আব্দুল মোমিন মুন্না (১২) নামে এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা ঘটেছিল। তাকে মাদ্রাসার বদ্ধ কক্ষে আটকে গান বাজিয়ে মারধর করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে গত ১৩ ধরে ওই শিক্ষার্থী নিখোঁজ রয়েছে।

বিষয়টি জানতে পেরে পরিবারের লোকজন তার খোঁজ চেয়ে আশুলিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে উল্টো তোপের মুখে পরেছেন। অভিযোগ করার কারণে মাদ্রাসার সভাপতি আবু বক্কর নিখোঁজ ওই শিক্ষার্থীর বাসায় গিয়ে হুমকি দিয়েছেন। এতে আতঙ্কিত হয়ে ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশায় বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা।

নিখোঁজ আব্দুল মোমিন মুন্না (১২) রংপুরের পিরগাছা থানার বলিহাট গ্রামের ওমর ফারুকের ছেলে। তারা বাবা-মা তৈরী পোশাক কারখানায় কাজ করায় মুন্না আশুলিয়ার কাইচাবাড়ি আহমেদিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় পড়াশোনা করতো।

নিখোঁজ শিক্ষার্থী মুন্নার বাবা ওমর ফারুক বলেন, আমি এবং আমার স্ত্রী দুজনেই গার্মেন্টসে কাজ করি। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ১০ টার দিকে মুন্নার মাদ্রাসা থেকে আবু হানিফ নামে এক শিক্ষক আমাদের বাসায় আসেন। তিনি আমাদের বাসায় এসে জানতে চান মুন্না আছে কি না?

তিনি বলেন, শিক্ষক আবু হানিফ আমাকে জানান মুন্না ইয়ারফোন চুরি করেছে। এ জন্য তাকে শাস্তি দেওয়ায় সে মাদ্রাসা থেকে পালিয়েছে। পরে আমি মাদ্রাসায় গিয়ে দেখি সেখানে আমার ছেলে নেই।

মুন্নার মা রেশমা বেগম বলেন, আমরা থানায় জিডি করেছি। এ ঘটনায় মাদ্রাসার সভাপতি আবু বক্কর বাসায় এসে হুমকি দিয়ে জিডির কপি চান। না দেওয়ায় তিনি আমাদেরকে মারতে উদ্যত হন। বিষয়গুলো পুলিশকে জানালে থানা থেকে পুলিশ মাদ্রাসায় গিয়ে তদন্ত করে কিন্তু আমার ছেলেকে পায় না। আমি আমার ছেলেকে চাই, আর তাকে কেন মারধর করা হয়েছে তারও বিচার চাই।

অভিযুক্ত কাইচাবাড়ি আহমেদিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার সভাপতি আবু বক্কর বাক্কা বলেন, একটা ইয়ারফোন চুরির বিষয়ে শিক্ষকরা তাকে মেরে বিচার করেছে। এরপর শিশুটি কোথায় গেছে আমরা তাকে খুঁজছি। পুলিশও খুঁজছে। এছাড়া মুন্নার পরিবারকে হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা শুধু জিডির কপি চেয়েছিলাম।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ছেলেটি যেদিন পালিয়ে যায় সেদিন আমি ছুটিতে ছিলাম। আমি মাদ্রাসায় এসে শুনেছি আমাদের শিক্ষক ছেলেটিকে মেরেছেন। সেটার ব্যবস্থা আমরা নেব। আগে ছেলেটিকে খুঁজে পাই। আর ছেলেটির পরিবারের সাথে আমাদের সবসময় যোগাযোগ হচ্ছে।

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মিলন ফকির বলেন, আমি ঘটনার বিস্তারিত জানতে মাদ্রাসায় গিয়েছিলাম। ভুক্তভোগী পরিবারের সাথেও কথা বলেছি। এ ছাড়া আশপাশের বিভিন্ন থানায় শিশুটির তথ্য দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সবাইকে খুঁজতে বলেছি। আমরা সবাই ছেলেটিকে খুঁজছি।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৮/১০/২০২৩    

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়