নোয়াখালীঃ জেলার চাটখিলে ডেকে এনে শিক্ষককে মারধর করল অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। উপজেলার পাঁচগাও ইউনিয়নের আফসারখিল গ্রামে দাওয়াতুল ঈমান মডেল বিজ্ঞান কারিগরি দাখিল মাদ্রাসায় এই ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম মো. সাব্বির হোসেন। সে চাটখিল উপজেলার পাঁচগাও ইউনিয়নের আফসারখিল গ্রামের বাবলুর ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) লাঞ্ছিত সেই শিক্ষক (৩৯) চাটখিল উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর এই বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১৫ নভেম্বর) বেলা ১টার সময় মাদ্রাসার ক্লাস নেওয়ার সময় অভিযুক্ত সাব্বির সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে মাদ্রাসার আরেক ছাত্রের মাধ্যমে ডেকে আনেন। এরপর অভিযুক্ত শিক্ষার্থী তার মায়ের উপস্থিতিতেই শিক্ষককে উপর্যুপরি লাথি মেরে রড দিয়ে মাথায় আঘাত করার চেষ্টা করে। এ সময় ওই শিক্ষকে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়। এ সময় ওই শিক্ষক দৌড়ে আত্মরক্ষা করেন।
লাঞ্ছিত সেই শিক্ষক বলেন, ‘দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে আমি শিক্ষকতা করে আসছি। সাব্বিরকে তার উচ্ছৃঙ্খল আচরণের জন্য শিক্ষক হিসেবে বিভিন্ন সময় অন্যান্য শিক্ষকদের মতো আমিও সতর্ক করে আসছি। সেই ক্ষোভ থেকে সে এভাবে আমার ওপর হামলা করে থাকতে পারে।’
স্থানীয়রা জানান, অভিযুক্ত সাব্বির হোসেন কিশোর গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য। তার নেতৃত্বে মাদ্রাসা এলাকায় কিশোর গ্যাং পরিচালিত হয়। কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিয়ে সাব্বির মাদ্রাসা এলাকায় প্রায় সময় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আসছে। তার বিরুদ্ধে উচ্ছৃঙ্খল আচরণের পাশাপাশি রাস্তায় মেয়ে শিক্ষার্থীদের উত্যক্ত করারও অভিযোগ রয়েছে। অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে কয়েকবার সে এই মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কৃত হলেও তার পিতা-মাতা ক্ষমা চাওয়ার প্রেক্ষিতে তার বহিষ্কার আদেশ বাতিল করে তাকে আবারও মাদ্রাসায় পড়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
চাটখিল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত সাব্বিরসহ কিশোর অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
অভিযুক্ত সাব্বিরের মা সালমা আক্তার নিজেও এই ঘটনায় তার ছেলের বিচার চান। ঠিক কী কারণে তার ছেলে এমন জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছে, তা তিনি নিজেও বুঝতে পারছেন না বলে জানান।
এই ঘটনায় বেসরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতি চাটখিল উপজেলার শাখার সভাপতি আবু তৈয়ব, বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি চাটখিল উপজেলা শাখার সভাপতি মো. মোরশেদ আলম স্বপন এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা জেনারেল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন চাটখিল উপজেলা শাখার সভাপতি মামুন হোসেন নিন্দা জানানোর পাশাপাশি অবিলম্বে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৬/১১/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়