নিজস্ব প্রতিবেদক।।
সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবি না মানায় গলায় মুলা ঝুলিয়ে অভিনব উপায়ে প্রতিবাদ করেছেন ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ১০ দিনব্যাপী লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে ষষ্ঠ দিনে এমন প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা।
এ সময় তারা গলায় মুলা ঝুলিয়ে তাদের সাথে হওয়া ‘প্রহসনের’ প্রতিবাদ করেন। শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়ে কয়েকজন অভিভাবকও বক্তব্য রাখেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষিত চাকরি প্রার্থীরা প্রায় ১০ বছর ধরে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫ বছরে উন্নীত করার দাবি জানিয়ে আসছে।
করোনায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন থেকে দুই বছরের বেশি সময় নষ্ট হয়েছে। প্রায় সব চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষা বন্ধ ছিল। চরম বাস্তবতা হলো বাংলাদেশের প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়েই কম-বেশি সেশনজট রয়েছে। ফলে সেশনজটের কারণেও শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন থেকে মূল্যবান সময় নষ্ট হয়।
তারা বলেন, যে প্রাতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেট অর্জন করতে গড়ে ২৫-২৬ বছর সময় লাগে, সেই সার্টিফিকেটের মেয়াদ কখনো চার-পাঁচ বছর হতে পারে না। বিশ্বের ১৬২টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর, কোনো কোনো দেশে তা উন্মুক্ত। এমনকি আফগানিস্তানেও ৩৫ বছর বয়সসীমা।
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু বাংলাদেশ ও পাকিস্তানেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর। পৃথিবীর অনেক দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর বা তার বেশি থাকা সত্ত্বেও করোনার ক্ষতির কারণে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আরো দুই থেকে তিন বছর পর্যন্ত বাড়িয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে তা এখনো বাড়ানো হয়নি।
বক্তারা আরো বলেন, লাখ লাখ চাকরি প্রার্থীর প্রাণের দাবি-অনতিবিলম্বে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫ বছর করা হোক। চাকরি আবেদনের সময় শিক্ষার্থীদের চাকরিতে আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে। প্রয়োজনে সরকারকে ভর্তুকির উদ্যোগ নিতে হবে। একই তারিখে একই সময়ে একাধিক নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া যাবে না। করোনার কারণে সব চাকরির বিজ্ঞপ্তি বন্ধ করে দেয়া হয়।
তখন যাদের বয়স ২৭-২৮ ছিল তারা তো চাকরির আবেদন করার কোনো সুযোগ পাননি। আমরা আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের অধিকার ফিরিয়ে দেবেন। আমাদের দাবিগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছানোর সুযোগ দিচ্ছে না কিছু কুচক্রী মহল। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করে দাবিগুলো তার কাছে তুলে ধরব। প্রধানমন্ত্রী যদি মনে করেন আমাদের দাবি অযৌক্তিক তাহলে আমার আর আন্দোলনে যাব না।