চবির সহিংসতার ঘটনায় দুই মামলা, আসামী ৯০০

চট্টগ্রামঃ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ভাঙচুর ও সহিংসতার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পৃথক দু’টি মামলায় সাতজন সাতজন করে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৯০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী দেখানো হয়েছে। ০৯ সেপ্টেম্বর (শনিবার) রাত ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কে এম নূর আহমেদ এবং প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা দুটি দায়ের করেন। চাঁদা দাবি ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলাগুলি দায়ের করা হয়েছে। একটি মামলায় ৪০০ এবং অন্য মামলায় ৫০০ অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তৈয়ব মোঃ আরিফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে উক্ত ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) শাটলের ছাদে নুইয়ে থাকা গাছের সাথে বাড়ি খেয়ে শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় ফুঁসে ওঠে চবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী এই দূর্ঘটনায় আহত হন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্যাম্পাসের মূল ফটক আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে হঠাৎ করেই একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তারা প্রথমে জিরো পয়েন্টে থাকা পুলিশ বক্সে হামলা চালান। এ সময় পুলিশ বক্স পুরোটা ভেঙ্গে ফেলা হয় এবং ভেতরে থাকা চেয়ার টেবিল জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এরপর উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালায়। সেখান থেকে তারা পরিবহন দপ্তরের দিকে যায় এবং তান্ডব চালায়। এছাড়া শিক্ষক ক্লাবেও হামলা চালায় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা।

এদিকে প্রশাসনের দায়ের করা মামলার প্রত্যাহারসহ ৪ দফা দাবিতে অবস্থান ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে প্রক্টর বরাবর তারা একটি স্বারকলিপি দেন।

রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

শিক্ষার্থীদের ৪ টি দাবি হলো,

১. শিক্ষার্থীদের নামে দেয়া অজ্ঞাতনামা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
২. আহত শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ সুস্থতার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিতে হবে।
৩. শাটল ট্রেনে সকলের সিট নিশ্চিত করতে হবে এবং ফিটনেস বিহীন বগি ও ইঞ্জিন সংস্করণ করতে হবে।
৪. চবি মেডিকেলে অভিজ্ঞ ডাক্তার এবং পর্যাপ্ত মেডিসিনের ব্যবস্থা করতে হবে।

সমাজতত্ব বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সামিহা ইসলাম বলেন, আমাদের মূলত আন্দোলন ছিলো শাটলের সিট সমস্যা সংক্রান্ত। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এটার সমাধান না করে ছাত্রছাত্রীদের নামে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামালা দিয়েছে।। আমরাও চাই দোষিদের খুঁজে বের করা হোক কিন্তু আমাদের সমস্যাগুলোর সমাধান দিতে হবে এবং মামলাগুলো প্রত্যাহার করতে হবে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১০/০৯/২০২৩     

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়