শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ মামলায় হাজিরা, মামলা দায়ের কিংবা শুনানির জন্য বিচারপ্রার্থীকে গুণতে হয় ২০০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। টাকা কম হলে কথা বলেন না বিচারপ্রার্থীর আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীদের সঙ্গে। আর ঘুষও নেন প্রকাশ্যে। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী তুষার কান্তির চেম্বারে এসব নিত্যদিনের ঘটনা বলে জানা গেছে।
তুষার কান্তির ঘুষ নেওয়ার ভিডিও কালবেলার হাতে এসেছে। ভিডিওতে তাকে এক আইনজীবীর হাত থেকে টাকা নিয়ে ড্রয়ারে রাখতে দেখা গেছে। এ ছাড়া আরেকজনের সঙ্গে টাকা নিয়ে তর্ক করছেন। পরে জানা গেছে, সেই তর্ক ছিল টাকা কম দেওয়া নিয়ে।
আইনজীবীদের অভিযোগ, আদালতে ঘুষ লেনদেন স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। টাকা না দিলে কার্যতালিকায় মামলাও রাখেন না পেশকার।
তারা জানান, একটি মামলা দায়ের করতে দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হয়। হাজিরা দিতে ২০০, পুটআপ দিতে হলে ৩ হাজার, ভ্রাম্যমাণ আদালতের জামিন আবেদন করতে ৫ হাজার, মামলার নথি দেখতে ৫০ টাকা দিতে হয়। অন্যথায় আইনজীবীদের সঙ্গে কথাও বলেন না অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এ পেশকার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কক্সবাজার শহরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমাদের ওয়ারিশ সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে একটি মামলা করে প্রতিপক্ষ। ভূমি অফিসের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মামলাটি খারিজ করে দেন আদালত। যে দিন মামলাটি খারিজ করেছে ওইদিনই একই খতিয়ান-দাগে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে জানতে পেরেছি ১০ হাজার টাকায় মামলাটি নথিভুক্ত করেছেন পেশকার।’
ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে পেশকার তুষার কান্তি বলেন, ‘আইনজীবীরা মাঝেমধ্যে নাশতা খরচ দিয়ে থাকেন। জোর করে কারও কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয় না।’
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান বলেন, ‘কোনো আইনজীবী কিংবা ভুক্তভোগী কেউ আমাকে অভিযোগ দেননি। যদি কেউ তথ্য-প্রমাণ নিয়ে অভিযোগ দিতে পারেন তবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১২/০২/২৩