ঘুষের টাকা ফেরত পেতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

নাটোরঃ জেলার গুরুদাসপুরে স্কুলে পিয়ন পদে চাকরি দেওয়ার নামে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়া অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। চাকরি না দেওয়ায় ঘুষের টাকা ফেরত পেতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

মঙ্গলবার গুরুদাসপুর আমলি আদালতে মামলাটি করেন ইটভাটা শ্রমিক সাইদুল ইসলাম। এ মামলায় উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজাহার আলীকে (৫৫) আসামি করা হয়েছে। তবে বুধবার পর্যন্ত বিষয়টি থানা পুলিশ বা প্রশাসন পর্যন্ত পৌঁছায়নি।

আদালতের নথি ও মামলার বাদীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শ্রমিক সাইদুল ইসলামের ছেলে মাসুদ রানাকে চন্দ্রপুর উচ্চবিদ্যালয়ে পিয়ন পদে চাকরি দেওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক আজাহার আলী ৭ লাখ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন। ৩ মাসের মধ্যে চাকরিতে দেওয়ার আশ্বাসে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে ২০২১ সালে অগ্রিম হিসেবে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা নেন শিক্ষক। বাকি ৩ লাখ টাকা যোগদানের সময় পরিশোধ করার কথা ছিল। প্রায় তিন বছর পার হলেও মাসুদ রানাকে চাকরি দেননি প্রধান শিক্ষক আজাহার আলী। পরে বাধ্য হয়ে মামলা করেছেন মাসুদ রানার বাবা সাইদুল ইসলাম।

মামলার বাদী সাইদুল ইসলাম জানান, দুই ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে তার সংসার। বাড়ির ৮ শতাংশ ভিটেমাটি ছাড়া সাইদুল ইসলামের কিছু নেই। ক্ষেত-খামারে কাজ করে সংসার চলে তার। ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে প্রধান শিক্ষকের প্রস্তাবে রাজি হন। পরে বসতভিটার ৬ শতক জায়গা বিক্রি করে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা প্রধান শিক্ষকের হাতে তুলে দেন। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ছেলেকে চাকরি বা ঘুষের টাকা ফেরত দেননি প্রধান শিক্ষক। এ নিয়ে গ্রামে অনেকবার সালিশ করেও লাভ হয়নি। উল্টো টাকা ফেরত চাওয়ায় নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম, আব্দুস সামাদ ও আবেদ আলী জানান, তাদের সামনেই মাসুদ রানাকে পিয়ন পদে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা নেন প্রধান শিক্ষক আজাহার আলী। এ নিয়ে কয়েক বছর ধরে সালিশ করেও কাজ হয়নি। অথচ ভিটেমাটি বিক্রি করে প্রধান শিক্ষককে টাকা দিয়েছিলেন সাইদুল ইসলাম।

এদিকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক আজাহার আলী বুধবার মুঠোফোনে বলেন, চাকরি দেওয়া বা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আর মামলার কোনো নোটিশ আমি পাইনি। নোটিশ পেলে পরবর্তী সময়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আকতার বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৮/১১/২০২৩  

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়