ঢাকাঃ ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বোমা হামলায় ধসে পড়া ভবনগুলোর নিচে— এক হাজারের বেশি মরদেহ পড়ে আছে বলে জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। যেসব মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছে সেগুলো মৃতের সংখ্যার সঙ্গে যুক্ত করা হয়নি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের সহযোগী এ সংস্থাটি। খবর: আল জাজিরা
গাজায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি রিচার্ড পিপারকর্ন শুক্রবার এমন তথ্য জানিয়ে বলেছেন, ‘আমরা হিসাব পেয়েছি যে, এক হাজারেরও বেশি মানুষ ধ্বংস্তূপের নিচে পড়ে আছেন। যাদের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা হয়নি।’ তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য দেননি তিনি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, তিন সপ্তাহ ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান হামলায়— সমুদ্রতীরবর্তী ছোট এ উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও ১ হাজারের বেশি মরদেহ পড়ে থাকার অর্থ হলো— গাজায় মৃতের সংখ্যা ৮ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনিদের এ মৃতের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি সংশয় প্রকাশের পর আজ শুক্রবার মৃতের সংখ্যার ২১২ পৃষ্ঠার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এতে তারা নিহত সবার নাম-পরিচয়ের বিস্তারিত প্রকাশ করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এমন তালিকা প্রকাশ করার পর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামাস ও ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধে যে অনেক বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে সে বিষয়টি স্বীকার করে তারা।
আল-আকসায় জুমার নামাজ আদায়ে বাধা
ফিলিস্তিনের জেরুজালেম শহরে অবস্থিত পবিত্র আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের জুমার নামাজ আদায়ে বাধা দিচ্ছে ইসরায়েলি পুলিশ। নামাজের জন্য আসা বেশিরভাগ মুসল্লিকে মসজিদে প্রবেশের আগেই ফিরিয়ে দিচ্ছে তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন শুক্রবার জানিয়েছে, দখলদার ইসরায়েলি পুলিশ মুসল্লিদের বাধা প্রধান করায় ও অল্প কয়েকজন মুসল্লিকে মসজিদে প্রবেশের সুযোগ দেওয়ায়— আল-আকসার আশপাশের এলাকার পরিস্থতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
তবে কেন মুসল্লিদের মসজিদে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না, সেটির কারণ ব্যাখ্যা করছে না পুলিশ। এ কারণে সেখান উপস্থিত সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে মুসল্লিদের দ্বন্দ্ব লাগে। তখন তাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়।
সিএনএন জানিয়েছে, পুলিশের এমন ঔদ্ধত্বপূর্ণ আচরণের ভিডিও করার সময়— তাদের সামনেই এক তরুণীকে প্রচণ্ড জোরে ধাক্কা মারে ইসরায়েলি পুলিশ।
বর্তমানে ওই এলাকা থেকে পুলিশ মুসল্লিদের সরিয়ে দিয়েছে এবং তরুণ বয়সী কাউকে সেখান দিয়ে হাঁটতেও দিচ্ছে না। এমনকি সংবাদ সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা সিএনএনের সাংবাদিক ও ক্রুদেরও সরে যেতে বলেছে তারা।
এর আগে গত মঙ্গলবার আল-আকসা মসজিদটি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। ওইদিন থেকে কোনো মুসল্লিকে আর পবিত্র এ মসজিদটিতে প্রবেশ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এর বদলে ইহুদিদের সেখানে অবাধে প্রবেশ করতে দেয় তারা। যা আন্তর্জাতিক আইনের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিভিন্ন অবৈধ বসতি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। তাদের ওই হামলার পর থেকে আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের প্রবেশ নিয়ে কড়াকড়ি আরোপ করছে ইসরায়েলি পুলিশ।
যুদ্ধবিরতি ছাড়া জিম্মি মুক্তি দেবে না হামাস
যুদ্ধবিরতি ছাড়া ইসরায়েল থেকে আটক ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্রগোষ্ঠী হামাস। রাশিয়া সফররত সংগঠনটির এক সদস্য স্থানীয় গণমাধ্যমকে এমনটি জানিয়েছেন।
আবু হামিদ নামের হামাসের এক সদস্য রুশ সংবাদমাধ্যম কমার্স্যান্তকে জানান, আটক ইসরায়েলিদের খোঁজ পেতে সময় প্রয়োজন।
হামাসের এ সদস্য বলেন, ‘শত শত মানুষকে আটক করা হয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। তাঁদের গাজায় খুঁজতে আমাদের সময় প্রয়োজন। এরপর তাঁদের মুক্তি দিতে হবে।’
এর আগে রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস জানায়, ইসরায়েল থেকে জিম্মি করা ব্যক্তিদের মুক্তির বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার মস্কোতে হামাসের একটি প্রতিনিধি দল ও রুশ সরকারের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৯/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়