ক্যাডারদের কর্মবিরতিতে প্রশিক্ষণ পাননি নতুন কারিকুলামের ৪৮৪ প্রশিক্ষক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ  নতুন শিক্ষাক্রম বিস্তরণে জেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষক হতে মনোনীত ৪৮৪ প্রশিক্ষকের গতকাল সোমবার ঢাকার সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে প্রশিক্ষণ শুরু হলেও আজ মঙ্গলবার যথারীতি প্রশিক্ষণের জন্য উপস্থিত হয়েই প্রশিক্ষণ পাননি বলে জানা গেছে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা  সমিতির ডাকা তিন দিনের কর্মবিরতির প্রথম দিন ছিল আজ। ফলে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে কেউ অংশ না নেওয়ায় প্রশিক্ষণ পাননি উপস্থিত ৪৮৪ জন। ৪৮৪ জনের মধ্যে ১৫৪ জন শিক্ষক ও ৩৩০ জন একাডেমিক সুপারভাইজার।

জানা গেছে,  নতুন শিক্ষাক্রম বিস্তরণ স্কিমের আওতায় নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে জেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষক হতে আবেদন করে মনোনীত প্রথম ব্যাচের ৪৮৪ জন প্রশিক্ষককে প্রশিক্ষণ শুরু হয় গতকাল  সোমবার (৯ অক্টোবর)। ৯ অক্টোবর থেকে ঢাকার সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে জেলা পর্যায়ের প্রশিক্ষকদের প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। যা চলার কথা  ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ৪.৩০ টা পর্যন্ত  এ ব্যাচের প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা জানায় মাউশি। যথারীতি প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া ৪৮৪ জন প্রশিক্ষক গতকালের মত আজও সকাল নয়টায় উপস্থিত হলেও প্রশিক্ষণ নিতে পারেননি। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্যাডার–বৈষম্য, পদোন্নতিসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ মঙ্গলবার থেকে টানা তিন দিনের ‘সর্বাত্মক কর্মবিরতি’ শুরু করেছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির ডাকে দেশের সরকারি কলেজ, সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা, সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), শিক্ষা বোর্ডসহ শিক্ষাসংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোয় এ কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে। আগামী দুই দিনও এই কর্মসূচী চলবে। ফলে মাউশি কিংবা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, .ঢাকা থেকে তাঁদের এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি এই তিন দিন প্রশিক্ষণ হবে কিনা।

প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গতকাল থেকে আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত এই প্রশিক্ষণ সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৪.৩০ পর্যন্ত চলার কথা। গতকালও আমরা নির্ধারিত সময়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। এখন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি চলছে। মাউশি কর্মকর্তারাও এই কর্মসূচী পালন করছেন। তাহলে যে মাউশির নির্দেশে আমরা প্রশিক্ষণে অংশ নিলাম সেই মাউশি থেকে আমাদের জানানো উচিত ছিল এই তিন দিন প্রশিক্ষণ হবে কি’না। আমাদের ভোগান্তিতে ফেলানোর কি দরকার ছিল।

প্রশিক্ষণে উপস্থিত একজন একাডেমিক সুপারভাইজার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,  কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি চলছে। আমাদের প্রশিক্ষণ হবে না আজ আগে জানালেই পারত সেই সকাল নয়টায় যথারীতি উপস্থিত হয়েছি। এখন পর্যন্ত বসে আছি প্রশিক্ষণের কোনো খোঁজ নেই। আগামী দুই দিনেও এই প্রশিক্ষণ হবে কি না জানি না। কিন্তু আমাদের তো উপস্থিত হতেই হবে।

জানতে চাইলে ঢাকা সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ  অধ্যাপক মো. গোলাম ফারুক শিক্ষাবার্তা’কে বলেন, আমাদের কাছে মাউশি থেকে ভ্যেনু চাওয়া হয়েছিল প্রশিক্ষণের জন্য। সে হিসেবে আমাদের কলেজের ১২ টি রুম আমরা দিয়েছি। প্রশিক্ষণ চলছে নতুন শিক্ষাক্রম বিস্তরণ স্কিমের আওতায়। যেটা মাউশি প্রশিক্ষণ উইং চালাচ্ছে। প্রশিক্ষণে উপস্থিতির মধ্যে ক্যাডার কর্মকর্তা আছেন শুধু তারাই কর্মবিরতিতে আছেন। এখানে প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন না সেটা ঐ স্কিমের প্রশিক্ষকদের দেখা দায়িত্ব।  প্রশিক্ষণ পরিচালনার দায়িত্বে তো আমরা নেই। ঐ উইং এটা ভালো বলতে পারবে।

জানতে চাইলে মাউশির প্রশিক্ষণ উইং এর পরিচালক ড. প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য্য এবং স্কিম পরিচালক প্রফেসর সৈয়দ মাহফুজ আলী র মুঠোফোনে কল করা হলেও তারা  ফোন রিসিভ করেননি।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১০/১০/২০২৩     

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়