ঢাকাঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসানের মেয়াদ শেষ হয়েছে গতকাল (৬ নভেম্বর)। ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর ‘ভারপ্রাপ্ত’ প্রক্টর থেকে পূর্ণ দায়িত্ব পান তিনি। সে হিসেবে গতকাল ৬ নভেম্বর পূর্ণ দায়িত্বে তার শেষ কর্মদিবস ছিল।
জাতীয় নির্বাচন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে চলমান অস্থিরতার এসময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ এ পদে পরবর্তীতে কে দায়িত্ব পাচ্ছেন এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে জোর আলোচনা।
ফিরোজের উত্তরসূরি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ এ দায়িত্বে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সহকারী প্রক্টরদের কথা ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ দৌড়ে সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন সহকারী প্রক্টর ও পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিকসের সহযোগী অধ্যাপক তাজউদ্দিন সিকদার। তিনি বর্তমানে নবনির্মিত শেখ রাসেল হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রক্টরের অনুপস্থিতিতে খন্ডকালীন দায়িত্বেও তিনি বেশ সফলতার পরিচয় দিয়েছেন।
এছাড়া তালিকায় আছেন পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আলমগীর কবীরের নাম। তিনি ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রক্টরের দায়িত্ব পেতে পারেন এমন শিক্ষকদের তালিকায় আছেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিকদার মো. জুলকারনাইন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আলবেরুনি হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন আন্দোলন ও বিক্ষোভে উপাচার্যের আস্থাভাজন হিসেবে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে তাকে। উপাচার্যের আস্থাভাজন তরুণ শিক্ষকরা এক্ষেত্রে প্রাধান্য পেতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। এদের মধ্যে আছেন শিক্ষক সমিতিতে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া সদস্য গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বির আলম। তিনি মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়াও প্রক্টর হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া। তিনি আ ফ ম কামাউদ্দিন হলের ওয়ার্ডেন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন টিআইবির অঙ্গসংগঠন ইয়েস গ্রুপের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। কনজ্যুমার ইয়ুথ সোসাইটির মতো ছাত্রসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনে যুক্ত থাকায় তার কথাও ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগমুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক পরিবেশও অস্থিতিশীল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন ভবনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়াও ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন প্রশাসনিক ভবনসহ চারটি একাডেমিক ভবনের নিমার্ণকাজও শুরু হওয়ার পথে। ইতোমধ্যেই তৃতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজের টেন্ডার খোলা হয়েছে। এরই মধ্যে আইবিএ ভবন নির্মাণকাজে গাছ কাটায় টানা তিনদিনের আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি অনেকটাই উত্তপ্ত। সব মিলিয়ে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দলসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের যেকোনো আন্দোলন মোকাবেলায় জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে প্রক্টরকে।
শিক্ষার্থীদের স্বার্থের কথা বিবেচনায় রেখে দায়িত্বশীল ও বিচক্ষণ কাউকে এ পদে নিযুক্ত করা হবে এমনটাই প্রত্যাশা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৭/১১/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়