সিলেটঃ জেলার জাফলংয়ে এসএসসি পরীক্ষার শেষ হওয়ার পর অনৈতিকভাবে উত্তরপত্র এবং ওএমআর শিট পূরণের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ৪ শিক্ষকের মাত্র দুই ও এক মাসের বেতন কর্তন আর তিন বছর পাবলিক পরীক্ষার দায়িত্বে না রাখার নির্দেশ দিয়েই দায় সারলো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা।
সচেতন অভিভাবকরা বলছেন, এমন লঘু দণ্ডের কারণে এ ধরনের অনৈতিক কাজ বার বার করতে উৎসাহিত করবে।
৩০ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা কর্মকর্তা (মাধ্যমিক-১) মিজানুর রহমানের সই করা এক আদেশে বলা হয়েছে, উপযুক্ত বিষয় ও সূত্রোক্ত স্মারক মোতাবেক সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলাধীন এসএসসি পরীক্ষা-২০২৩ আমির মিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষে উত্তরপত্রের ওএমআর শিট শিক্ষক কর্তৃক অবৈধভাবে পূরণ করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই শিক্ষকদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গোয়াইনঘাট আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামানের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের বেতন কর্তন ও পাবলিক পরীক্ষায় পরপর তিন বছর দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখা হয়। এছাড়া একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শরীফ উদ্দিন, ড. ইদ্রিস আলী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোখলেছির রহমান, হাজী সোহরাব আলী উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের সহকারী শিক্ষক রিয়াজ উদ্দিনের আগস্ট মাসের বেতন কর্তন ও পাবলিক পরীক্ষায় পরপর তিন বছর দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
এ আদেশের অনুলিপি সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, সিলেটের জেলা প্রশাসক, সিলেট অঞ্চলের উপ-পরিচালক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি-গভর্নিংবডিকে দেওয়া হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এমন আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২১ আগস্ট গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান সংশ্লিষ্ট তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আদেশ কার্যকর করতে পত্র দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গোয়াইনঘাট ইউএনও তাহমিলুর রহমান বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের আদেশ সংক্রান্ত পত্র পাওয়ার পরপরই আমি সংশ্লিষ্টদের আদেশ কার্যকর করতে পত্র দিয়েছি।
শিক্ষকদের গুরুতর অপরাধে লঘু দণ্ড দেওয়ার বিষয়ে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) এ এস এম কাশেম বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের বলার কিছু নেই। আমরা ঘটনা সম্পর্কে যা লিখে দেওয়ার তা লিখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের (শিক্ষা অধিদফতর) কাছে পাঠিয়েছি। তারা তাদের আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। লঘু দণ্ডের বিষয়ে তারাই বলতে পারবেন।
গেলো ২৩ মে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করে হলে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন ইউএনও।
উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) আহ্বায়ক এবং উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে সদস্য করা হয়।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৬/০৯/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়