শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোটের নেতৃত্বে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের একদফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি চলছে।
মঙ্গলবার প্রতীকী অনশনের ৫ম দিন। সমগ্র দেশ থেকে কয়েক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী প্রতিনিধি এ আন্দোলনে প্রতিদিনই অংশগ্রহণ করছে। তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেটে ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে তিনি তার উক্তি ‘শিক্ষার জন্য ব্যয় উত্তম বিনিয়োগ’ এর বাস্তব প্রমাণ রেখেছেন।
শুধু তা-ই নয় তিনি সে সময় বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য ৫ টাকা – ২৫ টাকার মাসিক বেতনকে ৫০ টাকায় উন্নীত করেন, কলেজ শাখার শিক্ষকদের ৫০ টাকার বেতনকে ১০০ টাকায় উন্নীত করেন; কর্মচারীদের জন্য রেশনিং এর ব্যবস্থা করেন। একজন রাষ্ট্রনায়ক কতটুকু বিচক্ষণ ও শিক্ষাবান্ধব হলে সদ্য স্বাধীন দেশ ও ভঙ্গুর অর্থনৈতিক নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষার জন্য এতো বড় পদক্ষেপ নিতে পারেন।
বর্তমানে এমপিওভুক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক-কর্মচারী ও অধ্যক্ষরা ২০০৪ সাল থেকে মূল বেতনের ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা পায়, কর্মচারী থেকে অধ্যক্ষ পর্যন্ত বাড়িভাড়া পায় মাসিক নির্ধারিত ১০০০/-টাকা এবং চিকিৎসা ভাতা পায় মাসিক নির্ধারিত ৫০০/-টাকা।
ভারত উপমহাদেশসহ পৃথিবীর কোথাও এমন নজীর শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য আছে বলে শিক্ষকদের জানা নাই। উৎসব ভাতা, বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতার জন্য সরকার যদি প্রতি অর্থ বছরে দুই থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা খরচ করে তাহলে অনায়াসেই এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ করা সম্ভব। সরকারের ৬ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার বাজেটে এ অর্থ বরাদ্দ করতে সমস্যা কোথায় এ প্রশ্ন সুশীল সমাজ ও শিক্ষকদের।
জোটের যুগ্ম-আহ্বায়ক- ১ অধ্যক্ষ মাওলানা দেলোয়ার হোসেন আজিজী বলেন, শিক্ষক-কর্মচারীরা আজ ১৯দিন রাজপথে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা সরকারের কোনো মহল শিক্ষকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা আজও করেনি যা দুঃখজনক ও হতাশাব্যাঞ্জক। বিশেষ করে শিক্ষকদের শ্রেণি কক্ষের পরিবর্তে রাজপথে থাকা একেবারেই বেমানান। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আশা করবো তিনি দ্রুতই শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করবেন এবং শিক্ষকদের শ্রেণি কক্ষে ফেরাবেন।
জোটের আহ্বায়খ অধ্যক্ষ মো. মাইন উদ্দীন ও সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন আহমদ সুস্পষ্টভাবে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয় সরকারি কোষাগারে জমা নিন এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ করে দিন।’ জোট নেতারা সরকারের কাছে আরও দাবি জানাচ্ছেন, সরকার তাদের সাথে আলোচনার টেবিলে বসলে জাতীয়করণের বিষয়ে একটি যৌক্তিক সমাধান বেরিয়ে আসবে।
সারা দেশের শিক্ষকরা ১২, ১৩, ১৪ মার্চ কর্মবিরতি পালন করায় জোটের পক্ষ থেকে তাদের কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানানো হয়। আগামী ১৫ মার্চ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব এর সামনে জোটের পক্ষ থেকে অমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় এবং সারা দেশের শিক্ষক সমাজকে এ আন্দোলনে শরীক হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়।
সারাদেশ থেকে আন্দোলনে আগত নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপাধ্যক্ষ আব্দুর রহমান, জসিম উদ্দিন শেখ, জহিরুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, আবু রায়হান, মোঃ মহসীন, ঝর্ণা বিশ্বাস, ইমরান হোসেন, আবুল বাশার, ফরিদ উদ্দিন, আমান উল্লাহ, আফজালুর রশিদ, মো. শাহ আলম, বেনী মাধব দেবনাথ, রতন কুমার দেবনাথ, আবুল বাশার নাদিম, মামুনুর রশিদ, মাইন উদ্দীন প্রিন্স, জি এম শাওন, কামরুজ্জামান চৌধুরী, আবু তালেব সোহাগ, তোফায়েল সরকার, মো. রবিউল, গোলাম মোস্তফা, ফয়েজ আহমেদ প্রমখ।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৪/০৩/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়