শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার পারবর্তী নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওহিদুর রহমানকে বহিষ্কার করে পদটি শূন্য ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসেন। পরে ওই শূন্য পদে আগে পরে দুটি চিঠি ইস্যু করে দুজনকে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ নিয়ে পরিষদের অন্য সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন সেবার জন্য ইউপি কার্যালয়ে গিয়ে জটিলতায় পড়ছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, গত ২২ জানুয়ারি ওহিদুর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়। এর আগে এই ইউনিয়ন পরিষদের কোনো প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন না হওয়ায় দাপ্তরিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। পরে ২৪ জানুয়ারি ইউপি সদস্য মো. কামরুজ্জামানকে প্যানেল চেয়ারম্যান-১, মাইন উদ্দিন ভূঁইয়াকে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ ও সংরক্ষিত ইউপি সদস্য (মহিলা) ইশরাত জাহান ফারজানাকে প্যানেল চেয়ারম্যান-৩ উল্লেখ করে একটি চিঠি ইস্যু করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। একই সঙ্গে কামরুজ্জামানকে চেয়ারম্যানের শূন্য পদে দায়িত্ব পালনের জন্য একটি লিখিত প্রজ্ঞাপন জারি করেন ইউএনও।
দুদিন পর কামরুজ্জামানকে বাদ দিয়ে ইউপি সদস্য মাইন উদ্দিন ময়ূরকে প্যানেল চেয়ারম্যান-১, ইশরাত জাহান ফারজানাকে প্যানেল চেয়ারম্যান-২ ও মাইন উদ্দিন ভূঁইয়াকে প্যানেল চেয়ারম্যান-৩ উল্লেখ করে আরেকটি চিঠি ইস্যু করেন ইউএনও। ভিন্ন আরেকটি স্মারকে মাইন উদ্দিন ময়ূরকে চেয়ারম্যানের শূন্য পদে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন নিয়ে দুই জনপ্রতিনিধির মধ্যে চরম দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে।
ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান-১ মো. কামরুজ্জামান বলেন, প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমাকে ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন ইউএনও। এরপর থেকে বিভিন্ন জন্মনিবন্ধন, নাগরিকত্ব সনদসহ বিভিন্ন সনদে স্বাক্ষর করি। জণগণকে সেবা দিয়ে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করে গত ২৯ জানুয়ারি ইউপি সদস্য মাইন উদ্দিন ময়ূর ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আরেকটি চিঠি এনে নিজেকে চেয়ারম্যান দাবি করছেন। কিন্তু আমাকে দায়িত্ব পালন স্থগিতের জন্যও ইউএনও কোনো চিঠি দেননি।
মাইন উদ্দিন ময়ূর বলেন, গত ২৬ জানুয়ারি ইস্যুকৃত চিঠির বিষয়টি ২৯ জানুয়ারি জানতে পারি। এরপর ৩১ জানুয়ারি পরিষদের দায়িত্ব গ্রহণ করি। তবে আগে দায়িত্ব দেওয়া কামরুজ্জামানকে কেন কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়নি, সে বিষয়ে কিছুই জানেন না তিনি।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন বলেন, কামরুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হলে পরিষদের বাকি সদস্যরা কামরুজ্জামানকে অনাস্থা দেবেন বলে স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরীকে মৌখিকভাবে জানান। পরে ওই সংসদ সদস্যের ডিও লেটার প্রাপ্তির মাধ্যমে প্যানেল চেয়ারম্যান পুনর্গঠন করে ইউপি সদস্য মাইন উদ্দিন ময়ূরকে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সংসদ সদস্যের ডিও লেটারের মাধ্যমে প্যানেল চেয়ারম্যান-১ পুনর্গঠন করা যায় কিনা—এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে তিনি সংবাদকর্মীদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করেন।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৪/০২/২৩