ঢাকাঃ সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে প্রথমবর্ষে ‘কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ, ২০২৩’-এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য শিগগির অধ্যাদেশটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে ইউজিসি। প্রক্রিয়া শেষে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করবেন। ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে এ অধ্যাদেশ মেনে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করতে চায় সরকার।
দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একক আওতাভুক্ত করে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে ইউজিসি গঠিত কমিটির সভায় বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সর্বসম্মতিক্রমে এ খসড়া চূড়ান্ত করা হয়।
কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি (এনটিএ) নামে পৃথক একটি কর্তৃপক্ষ গঠনের আগ পর্যন্ত এ অধ্যাদেশ অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে বলে সভায় জানানো হয়। ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে যা-ই থাকুক না কেন, এ অধ্যাদেশ প্রাধান্য পাবে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীরের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ম. তামিম এবং ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান।
অধ্যাদেশের খসড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘আপাতত বলবৎ কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন, সংবিধি, বিধি, প্রবিধি, প্রণীত আইন বা আইনের ক্ষমতাসম্পন্ন অন্য কোনো দলিলে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এ অধ্যাদেশের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করিয়া যোগ্য বিবেচিত না হইলে কোনো ভর্তিচ্ছু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তির জন্য উপযুক্ত মর্মে বিবেচিত হইবে না।’
ভর্তি কার্যক্রম বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ফলাফল প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় এ ফলাফল, শিক্ষার্থীদের ইতোপূর্বে সম্পাদিত এসএসসি বা সমমান ও এইচএস বা সমমান পরীক্ষার ফলাফল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব শর্তাবলি অনুযায়ী মেধাক্রমের ভিত্তিতে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করিবে।’
‘কোনো বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে সীমিত পর্যায়ে শুধুমাত্র সঙ্গীত, চারুকলা, নৃত্যকলা, নাট্যকলা, স্থাপত্যবিদ্যা বা এ জাতীয় অতি বিশেষায়িত বিষয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড অ্যাপটিটিউড টেস্ট গ্রহণ করিতে পারিবে।’
আরও পড়ুন: গুচ্ছ ভর্তিতে ‘এক গুচ্ছ’ সংকট
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘ভর্তি প্রক্রিয়া শিক্ষার্থীবান্ধব এবং দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করিবার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ নীতিমালা অথবা নির্দেশিকা প্রণয়ন করিবে, যাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বাধ্যকর হইবে।’
সভায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আলমগীর বলেন, রাষ্ট্রপতি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। তার অভিপ্রায় বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য অধ্যাদেশ জারি করা প্রয়োজন। অধ্যাদেশ জারি হলে এর বাইরে গিয়ে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের কোনো সুযোগ থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে স্নাতক পর্যায়ে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হলে শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের হয়রানি ও দুর্দশা কমবে এবং ভর্তি প্রক্রিয়া সহজ হবে। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশটি স্বল্প সময়ের মধ্যে জারি করা হলে এইচএসসির পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পরে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক পর্যায়ে প্রবেশে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সভায় ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশের খসড়ার বিস্তারিত দিক তুলে ধরেন। এছাড়া কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান সভার শুরুতে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার প্রেক্ষাপট ও গুরুত্ব তুলে ধরেন।
এর আগে গত ১০ অক্টোবর ইউজিসিতে অনুষ্ঠিত একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের জন্য গঠিত কমিটির সভায় রাষ্ট্রপতি তথা বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আচার্যের অভিপ্রায় অনুসারে ভর্তি পরীক্ষা কার্যকরভাবে নেওয়ার জন্য দ্রুত অধ্যাদেশ জারির সুপারিশ করা হয়।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৬/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়