উত্তর লিখতে না পারায় পাঁচ শিক্ষার্থীকে পেটালেন শিক্ষক

ঝালকাঠিঃ জেলার রাজাপুরে প্রশ্নের উত্তর লিখতে না পারায় ও ক্লাসরুমে খেলা করার অজুহাত দিয়ে পঞ্চম শ্রেণির পাঁচজন শিশু শিক্ষার্থীকে স্কুল মাঠে ফেলে মধ্যযুগীয় কায়দায় অমানুষিক নির্যাতন ও বেত দিয়ে পিটিয়েছেন স্কুলের সহকারী শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন সোহাগ।

রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটায় উপজেলার সাতুরিয়া ইউনিয়নের ৯নং লেবুবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

আহত শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন এবং তাদের মধ্যে দুই শিক্ষার্থী মারধরের শিকার হয়ে জ্বরে আক্রান্ত। এঘটনায় অপর শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করায় ক্লাসে উপস্থিতি কমে গেছে।

আহত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন সোহাগ ব্লাকবোর্ডে দুটি প্রশ্ন লিখে তার উত্তর লিখতে বলে অন্য রুমে চলে যায়। কিছুক্ষণ পরে এসে শিশু শিক্ষার্থীরা লিখতে না পরায় এবং ক্লাসে বসে দুষ্টুমি করার অজুহাতে ক্ষিপ্ত হয়ে ৫ শ্রেণির মুরসালিন, আবু সালেহ, সিয়াম, নাজমুল, শাকিবকে প্রথমে চড় থাপ্পর মারেন। পরে বেত এনে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করতে করতে মাঠে নিয়ে যায়। পরে কোমলমতি ৫ শিক্ষার্থীদের মাঠে ফেলে বেধরক মারধর করে অসুস্থ করে ফেলে।

এ সময় অপর দুই ছাত্রী আয়শা ও সামিয়াকে মারধরের ভয় দেখালে এক শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়ে। এ ছাড়া স্কুলের অপর শিক্ষার্থীরা ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে কান্নাকাটি শুরু করলে বিদ্যালয়ের অন্য দুই শিক্ষক এসে অভিযুক্ত শিক্ষকের হাত থেকে বেত টেনে নিয়ে যায়।

এ ঘটনার পর ৫ম শ্রেণির ৩৯ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৪ শিক্ষার্থী ছাড়া অন্যরা ভয়ে স্কুলে আসেনি বলেও অভিযোগ অভিভাবকদের। অভিয্ক্তু শিক্ষকের বিচার ও আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি করে অভিভাবকসহ বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষক ও কমিটির সদস্যরা।

এ ব্যাপারে শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন সোহাগ বলেন, ক্লাসে বসে প্রশ্নের উত্তর না লিখে কলম নিয়ে খেলায় এবং বেয়াদবি করায় শিক্ষার্থীদের শাস্তি হিসেবে চড় থাপ্পার ও কয়েকটি বেত্রাঘাত করা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীদের মারধরের বিষয়টি শিক্ষা অফিসার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে জানানো হয়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকের এ ধরনের আচরণ দুঃখজনক। ঘটনার পর থেকে অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতও কমে গেছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ.কে.এম নুরুল আলম মৃধা জানান, বিষয়টি দুঃখজনক। সাতুরিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তাকে সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিতপূবর্ক অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগেও অভিযুক্ত এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের মারধর ও উগ্র আচরণের অভিযোগ রযেছে। তার বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি অভিভাবক ও এলাকাবাসীর।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৪/০৯/২০২৩     

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়