যশোরঃ যশোরে আদর্শ বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিনকে দেড় ঘণ্টা ধরে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় মামলা হয়নি। থানায় অভিযোগ দিলেও মামলা নিতে পুলিশ গড়িমসি করছে।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) শিক্ষককে লাঞ্ছিত ও মারধরের ঘটনায় মানববন্ধন করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে-বাণিজ্যের নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ৮ নভেম্বর বুধবার যশোর শহরের খালধার রোডস্থ যশোর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সভাপতি মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী বাড়িতে ডেকে নিয়ে প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিনকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া যায়। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নূরুল আমিন বলেন, নির্যাতনের কারণে আমি এখন চোখে কম দেখছি। অসুস্থতার জন্য স্কুলেও যোগ দিতে পারিনি। এমনকি উপজেলা চেয়ারম্যানের ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। তারপরেও গত চার দিন ধরে থানাতে মামলা দিতে যাচ্ছি, থানা মামলা থেকে নিচ্ছে না। গত শনিবার রাতে থানার পুলিশ রাত ১২টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখেও মামলা নেয়নি। গড়িমসি তালবাহানা করছে। সর্বশেষ রোববার রাতে থানাতে গিয়ে মামলা না নিয়ে বসিয়ে রাখে। মামলার এজাহারে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারে ১ নম্বর আসামি মোস্তফা ফরিদকে রাখার কারণে পুলিশ বলে আমার এজাহারটি নেওয়া যাবে না। তারা বলেন, ‘আপনার মতো করে এজাহার নেওয়া হবে না। আমাদের মতো এজাহার করে দিচ্ছি, সেটাই মামলা রেকর্ড হবে! এক পর্যায়ে আমার এজাহার নিলে পুলিশ জানান আপনার এজাহার নিতে হলে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে নিতে হবে। পরে থানা থেকে আসার আগে একটি সাদা কাগজে আমার সাক্ষর করে নিয়েছে পুলিশ। এখনও পর্যন্ত পুলিশ এজাহার রেকর্ড করেনি।
তিনি বলেন, আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এমন সময়ে থানার আমার অভিযোগ রেকর্ড করছে না, কোন ব্যবস্থাও নিচ্ছে না। থানা মামলা না নিলে আদালতে মামলা দিচ্ছেন না কেন! এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং অসুস্থ থাকাতে মামলা করতে পারছি না। এই বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।
এদিকে, শিক্ষককে লাঞ্ছিত ও মারধরের ঘটনায় মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী শিক্ষকের শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুরে যশোর শহরের পশ্চিম বারান্দিপাড়াস্থ এলাকাতে আদর্শ বহুমুখী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেন বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। এসব স্লোগানে স্লোগানে শিক্ষক নির্যাতনের বিচারের দাবি জানান।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের জানান, রোববার রাতেই ওই শিক্ষকের অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত করে মামলা রেকর্ড করা হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৪/১১/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়