নিজস্ব প্রতিবেদক, দিনাজপুরঃ জেলার ফুলবাড়ীতে মামলা আর পাওনাদারের ভয়ে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পলাতক রয়েছেন। এতে মাসিক বেতন-ভাতা উত্তোলন করতে পারছে না শিক্ষক-কর্মচারীরা। ফলে প্রাত্যহিক শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে, স্থবির হয়ে পড়ছে বিদ্যালয়ের যাবতীয় কাজকর্ম। বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার রাজরামপুর সরফ উদ্দিন (এসইউ) উচ্চ বিদ্যালয়ে।
জানা গেছে, বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রহমান চৌধুরী বিপ্লবের নামে ১৩ লাখ টাকার চেকের মামলা দায়ের করেছেন উপজেলার রাঙ্গামাটি গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে মেসার্স এফএ ট্রেডার্সের মালিক ফিরোজ আহম্মেদ।
এ মামলায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মামুনুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে, গ্রেপ্তার এড়াতে গা ঢাকা দেয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। এরপর থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতায় স্বাক্ষর করতে না পারায়, তাদের বেতন-ভাতা আটকে যায়। এদিকে চাকরি দেয়ার কথা বলে একাধিক ব্যক্তির নিকট থেকে নগদ অর্থ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে।
তারাও প্রতিদিন বিদ্যালয়ে গিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে খোঁজ করছে বলে অভিযোগ করছেন, বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক-কর্মচারীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।
এলাকাবাসীরা জানান, স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কোন মামলার আসামী কিনা কিংবা তার বিরুদ্ধে আগে কোন অভিযোগ আছে কি না এগুলো বোর্ড খতিয়ে দেখে না। মামলার আসামী কিংবা কোন অপরাধী যখন সভাপতি হয় তখন শিক্ষকদের বেতনভাতা আটকে থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মামুনুর রহমান চৌধুরী বিপ্লবের বাড়ি ও তার ইটভাটায় গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজারামপুর এসইউ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মামুনুর রহমান চৌধুরী বিপ্লব পলাতক থাকায় শিক্ষক কর্মচারীরা বেতন-ভাতা উত্তোলন করতে পারছে না ।
তিনি বলেন, কয়েক মাস পূর্বে কর্মচারী নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলেও, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অনুপস্থিত থাকায় সেই নিয়োগের প্রক্রিয়া করা সম্ভব হয়নি। এদিকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে অভিভাবকগণ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুর আলম।
তিনি জানান, এ উপজেলায় তিনি কয়েকদিন পূর্বে বদলি হয়ে এসেছেন, তাই পুরোপুরি বিষয়টি অবগত নয়, তবে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন বলেই জানান তিনি।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১০/০৩/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়