‘আমার একটি কৃত্রিম পা চাই এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য’

নিজস্ব প্রতিবেদক, লালমনিরহাটঃ জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় তমা নামে এক শিক্ষার্থী এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী। পায়ের একটি টিউমার থেকে ছড়িয়ে পড়ে ক্যানসার। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে তার ডান পা কেটে ফেলা হয়। বর্তমানে টাকার অভাবে বন্ধ চিকিৎসা। এ কারণে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় বসা তার অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বুধবার (১৫ মার্চ) সকালে সরেজমিনে গিয়ে এ তথ্য পাওয়া যায়।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব ফকিরপাড়া গ্রামের তমির উদ্দিনের মেয়ে আমেনা খাতুন তমা (১৬)। তিনি গড্ডিমারী দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী। তারা তিন ভাই-বোন। দুই ভাই অটোরিকশা চালান।

জানা গেছে, তাদের পাঁচ শতক জমির ওপর বসতভিটা ছাড়া জায়গা-জমি কিছুই নেই। তমার বাবা অসুস্থ তাই কাজেও যেতে পারেন না। মা নাজমা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করেন।

আমেনা খাতুনের ভাই নাঈম ইসলাম জানান, ‘প্রায় এক বছর আগে বোনের হাঁটুর নিচে একটি টিউমার ধরা পড়ে। পরে রংপুর মেডিকেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান ডা. বিমল চন্দ্র জানান, বোনের পায়ে টিউমার ইনফেকশন হয়ে ক্যানসারে রূপ ধারণ করেছে। এখন তাকে বাঁচাতে হলে তার একটি পা কেটে ফেলতে হবে। মানুষের কাছ থেকে ধার-দেনা টাকায় তার একটি পা কাটা হয়। এখন চিকিৎসকরা বলছেন, নিয়মিত ওষুধ এবং ১০ দিন পরপর থেরাপি দিতে হবে। তা না হলে রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে।’

তিনি আরও জানান, ‘তমার সামনে তার এসএসসি পরীক্ষা। বোন কৃত্রিম পায়ে হেঁটে পরীক্ষা দিতে চায়। আমরা দিন আনি দিন খাই। তার চিকিৎসা চালানোর মতো টাকা আমাদের কাছে নেই। কৃত্রিম পা তো দূরের কথা। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে আমার জীবনটা সুন্দরভাবে চলতো।’

আমেনা খাতুন তমা জানান, ‘আমার একটি পা কেটে ফেলা হয়েছে। এখন চিকিৎসা করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। আমার বাবা-মা ও ভাইয়ের এত টাকা নেই। আমি আগের মতো হাঁটতে চাই। সামনে আমার পরীক্ষা। একটি কৃত্রিম পা খুবই প্রয়োজন। তাহলে হেঁটে পরীক্ষা দিতে যেতে পারব।’

এ বিষয়ে গড্ডিমারী দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, তমা আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থী। অদম্য মেধাবী তমার পরিবার খুবই গরিব। ক্যানসারের কারণে তমার একটি পা কেটে ফেলা হয়েছে।