ঢাকাঃ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার পক্ষে মত দেওয়ায় উপাচার্যের সামনেই মারধরের ঘটনায় আজও বিচার পাননি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল কাদের। উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়ার ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও বিচারের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী।
জানা যায়, গত ৬ এপ্রিল উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫তম বিশেষ একাডেমিক কাউন্সিল সভায় অধ্যাপক আব্দুল কাদেরকে মারধর করেন তারই সহকর্মীরা। এ সময় স্বয়ং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ উপস্থিত ছিলেন। তারপরেও এ ঘটনার বিচারের দীর্ঘসূত্রিতায় শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ পত্রে অধ্যাপক আবদুল কাদের বলেন, সমন্বিত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় যুক্তি-তর্কের এক পর্যায়ে ৮-১০ জন শিক্ষক তাদের আসন থেকে উঠে এসে আমাকে শারীরিক নির্যাতন করে। কিন্তু তাদের সবাই আমাকে ফিজিক্যালি অ্যাটাক করেনি। পরবর্তীতে কেউ কেউ দাবি করছেন যে, এমন ঘটনা ঘটেনি। কারণ তারা সবাই আমাকে ফিজিক্যালি অ্যাসোল্ড করেনি। আশপাশে যারা দাঁড়িয়ে ছিলেন তাদের কারণে দূর থেকে দেখা যায়নি এখানে কী ঘটছে। সবাই শারীরিক নির্যাতনে অংশ নেয়নি। কয়েকজন পাশে ছিলেন, কিন্তু এর মধ্যে কেউ কেউ রোধ করেছেন। এর মধ্যেই ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ভিসি স্যার ট্রেজারার স্যারও ঘটনাটি করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর হয়নি। যা ঘটার তা ঘটে গেছে।
দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমি টেবিল চাপড়ানো ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করি। সবাইকে বলেছি ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য। এটাও বলেছি যে, আমি টেবিল চাপড়িয়েছি তার মানে আমাকে শারীরিকভাবে আঘাত করার অধিকার কারও নেই। আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। আপনারা আমার সঙ্গে যা করেছেন তা ঠিক হয়নি। তারপর আমি বের হয়ে গিয়েছিলাম উপাচার্যের অনুমতি নিয়ে। পরবর্তীতে নিজে স্থির হওয়ার চেষ্টা করেছি ও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছি। উপাচার্যের নিকট আবেদন করেছি যেন প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হয়। সেই সঙ্গে আমি ক্ষমা চেয়েছি একাডেমিক সভায়। এই শাস্তি যদি পর্যাপ্ত না হয় তাহলে বিধি মোতাবেক যে শাস্তি হবে তা মেনে নিতে প্রস্তুত আছি। আর আমার ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, তাদের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে যেন বিচার হয়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক আব্দুল কাদের বলেন, আমি অভিযোগ দেওয়ার পর আর তো সিন্ডিকেট হয়নি। আমার বিষয়টি সিন্ডিকেটে ওঠার কথা ছিল। এই সিন্ডিকেটে এখন আলোচ্য বিষয় থাকবে কিনা আমার জানা নেই।
তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার জানা মতে এ ঘটনায় কোনো তদন্ত কমিটি গঠন হয়নি।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি হয়নি। আমাদের উপাচার্য স্যারও তো অসুস্থ। তিনিই তো এসব দেখেন। সামনের সিন্ডিকেটে দেখা যাক কি হয়।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৯/১০/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়