ঢাকাঃ দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগে রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আতিকুর রহমান খানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমানের সই করা চিঠিতে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়।
চিঠিতে বলা হয়, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান খান ২০০৪ সালের ২ অক্টোবর থেকে এ প্রতিষ্ঠানে উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। গত ৯ অক্টোবর আপনাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। ১২ অক্টোবর আপনি তার জবাব দিয়েছেন। আপনার জবাব সন্তোষজনক মনে হয়নি। বরং উদ্ধত মনে হয়েছে।
এতে বলা হয়, ১৭ অক্টোবর আপনাকে চিঠির মাধ্যমে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মতিঝিল অফিসে থেকে দাপ্তরিক কাজ করার বিষয়ে বলা হয়। আপনি সেই আদেশ যথাযথভাবে পালন না করে ইচ্ছামতো অফিসে আসা-যাওয়া করছেন। আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী সমিতির স্টেশনারি বেনামে চুক্তি করে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। চাকরিরত অবস্থায় অন্য একটি প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস বাজার নামে ব্যবসা করছেন। ভিশন-৭১ নামে একটি নির্মাণ কোম্পানি পরিচালনা করছেন, যেগুলো চাকরির বিধি পরিপন্থি।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আপনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতির ফিরিস্তি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠান প্রধানের আদেশ অমান্য, কর্তব্যে অবহেলা, পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আপনার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত চলছে। উল্লেখিত অভিযোগ সুষ্ঠুভাবে তদন্তের স্বার্থে আপনাকে ৭ নভেম্বর থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। কেন আপনাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবে না, তা তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
এদিকে, সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের এক তদন্ত প্রতিবেদনে আতিকুর রহমান খানের নিয়োগ অবৈধ বলে উল্লেখ করা হয়। এজন্য নিয়োগ পাওয়ার পর বেতন-ভাতা হিসেবে নেওয়া ৩৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯২০ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার সুপারিশ করেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের উপসহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) পদে ২০০৪ সালের ১২ অক্টোবর যোগ দেন মো. আতিকুর রহমান। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী— এ ধরনের কোনো পদ না থাকলেও আতিকুর রহমানকে নিয়োগ দেয় কর্তৃপক্ষ। নিয়োগের ক্ষেত্রেও মানা হয়নি কোনো শর্ত। পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়। কিন্তু তার অভিজ্ঞতা ছিল চার বছরের।
সার্বিক বিষয়ে জানতে উপসহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আতিকুর রহমান খানের সঙ্গে মোবাইলে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৭/১১/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়