বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪

মোঃ মোজা‌হিদুর রহমান।।
বাগেরহাটের ফকিরহাটে হীড বাংলাদেশ মাইক্রোফাইন্যান্স কর্মসূচির আওতায় বঙ্গবন্ধু উচ্চশিক্ষা বৃত্তি এবং ২০২৩ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪ ও ৫ প্রাপ্ত ১৮৩ জন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা ও এককালীর উপবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে।

বুধবার (২৭ মার্চ) বেলা ১১টায় উপজেলা অডিটোরিয়ামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বপন দাশ এসব শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেষ্ট ও বৃত্তির টাকা তুলে দেন। এতে সম্মানিত অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু।

হীড বাংলাদেশ’র সেন্ট্রাল ম্যানেজার অদ্বৈত কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্টানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ওসি (তদন্ত) বিপুল চন্দ্র দাস, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুর রহমান, মূলঘর ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. হিটলার গোলদার, পিলজংগ ইউপি চেয়ারম্যান মোড়ল জাহিদুল ইসলাম।

হীড বাংলাদেশ’র আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক বিমল কুমার সরকারের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার মো. সুজন আলী, মো. সেকেন্দার আলম, মো, ইকবাল হাওলাদার, শিক্ষার্থী আকাশ রায়, রাবেয়া খাতুন, রিতুপর্ণা দাসসহ অন্যান্যরা।

এসময় এসব শিক্ষার্থীদের ক্রেষ্ট দিয়ে দেয়া হয়েছে। এদিন ১৮৩ শিক্ষার্থীদের মাঝে ৭লাখ ৭২হাজার টাকা প্রদান করা হয়।

শিবা/জামান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ সরকারি বাঙলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ৩৩ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। কমিটিতে মো. ফয়েজ আহমেদ নিজুকে সভাপতি ও রুবেল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

বুধবার (২৭ মার্চ) ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

কমিটিতে সহ-সভাপতি হয়েছেন— আক্তারুজ্জামান হাওলাদার হাফিজ, সাইফুল বাদশা, মো. সাদ্দাম হোসেন, মো. রাসেল হাওলাদার, ফরহাদ হোসেন রানা, কাউসার আহমেদ জনি, মো. রাসেল মোল্লা, রবিউল আউয়াল সানি, ইসরাত খান বাবু, মো. আরিফ হোসেন, মো. আল-আমিন মজুমদার, কাজী অমিত, মো. শাহরিয়ার আল ইমাম সাগর, মো. শাহরিয়ার নাফিজ সজীব, মো. জিয়ারুল ইসলাম, মো. রবিউল হাসান, বিপ্লব মীর উজ্জ্বল, মোহাম্মদ শামীম ও হযরত আলী হিমু।

যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন— মো. আক্তার হোসেন, মো. হামিদুল্লাহ জিহাদ, মো. সাখাওয়াত হোসেন অর্নব, সোহাগ খান, মো. শিপন শিকদার ও মো. মাহাবুব আলম।

এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে— শরিফুল ইসলাম সাগর, মিঠুন হালদার আকাশ, মেহেদী হাসান, সালাহউদ্দীন সরকার, মো. শফিকুর রহমান ও আদনান হাবিব অল ইন।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৮/০৩/২০২৪

ঢাকাঃ দশম শ্রেণির পড়ালেখা শেষে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। তবে নতুন শিক্ষাক্রমে এ পাবলিক পরীক্ষার নাম পরিবর্তন করা হতে পারে। নতুন নাম কি হবে তা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।

  • শুধু দশমের পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে মাধ্যমিকের পাবলিক পরীক্ষা
  • প্রতিটি বিষয়ে এক কর্মদিবসে মূল্যায়ন হবে পাঁচ ঘণ্টায়
  • নম্বর নয়, রিপোর্ট কার্ডে শিখনকালীন মূল্যায়ন ও পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়নের ফল
  • তিন বিষয়ে বেশি খারাপ করলে কলেজে উত্তীর্ণ নয়
  • পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কাঠামোর সঙ্গে মিল রেখে বিদ্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেণির মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হবে

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী দশম শ্রেণি শেষে মাধ্যমিকে যে পাবলিক পরীক্ষা বা মূল্যায়ন হবে, তাতে লিখিত পরীক্ষাও থাকছে। প্রকল্পভিত্তিক কাজ, অ্যাসাইনমেন্ট সমস্যার সমাধান ইত্যাদির পাশাপাশি একটি অংশের মূল্যায়ন হবে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে। তবে এই লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তর দেওয়ার ধরন এখনকার মতো মুখস্থনির্ভর হবে না। একজন শিক্ষার্থী যেসব অভিজ্ঞতা অর্জন করবে, সেগুলোই মূলত সৃজনশীল উপায়ে লিখতে বলা হবে। এ জন্য প্রশ্নও করা হবে তার আলোকে।

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) পাবলিক পরীক্ষার যে মূল্যায়ন কাঠামোর খসড়া করেছে, তাতে এভাবে লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এ বছর যারা নবম শ্রেণিতে পড়ছে, তারাই নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রথমবারের মতো পাবলিক পরীক্ষা দেবে। আগামী বছর দশম শ্রেণি শেষ করে তারা এই পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেবে। এ জন্য চলতি বছরের শেষে পরীক্ষামূলকভাবে পাবলিক পরীক্ষার আদলে নবম শ্রেণির বার্ষিক মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

এনসিটিবি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এখন এই খসড়ার ভিত্তিতে মূল্যায়ন কাঠামো চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাবলিক পরীক্ষাগুলো হয় শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীনে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর সমন্বয় কমিটির প্রধান ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার বলেন, মূল্যায়নপদ্ধতি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলাপ–আলোচনা চলছে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি ভালো কিছু হবে বলে তাঁরা আশা করছেন।

গত বছর থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। প্রথম বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন এই শিক্ষাক্রম শুরু হয়। আর এ বছর নতুন করে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতেও চালু হয়েছে এই শিক্ষাক্রম। পর্যায়ক্রমে ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম। এই শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বড় অংশ হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকভাবে (শিক্ষাকালীন)। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পুরোটাই মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন ধরনের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। চতুর্থ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কিছু অংশের মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন এবং বাকি অংশের মূল্যায়ন হবে সামষ্টিকভাবে, মানে পরীক্ষার ভিত্তিতে।

নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন কাঠামো নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অস্পষ্টতা আছে। অভিভাবকদের একটি অংশ মূল্যায়নে লিখিত পরীক্ষা রাখার দাবি জানিয়ে আসছে। এমন অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে মূল্যায়ন কাঠামোয় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে আসছিল। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নপদ্ধতি চূড়ান্ত করতে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটিও করে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে মূল্যায়নপদ্ধতির খসড়া তৈরি করেছে এনসিটিবি। সেখানে নতুন শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেটের মতো পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কেমন করে হবে, সেটি বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে।

জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, তাঁরা মূল্যায়ন কাঠামোর খসড়াটি নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নপদ্ধতি চূড়ান্ত করার জন্য গঠিত কমিটির সামনে ইতিমধ্যে উপস্থাপন করেছেন। তাঁরা আশা করছেন, খুব তাড়াতাড়িই সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে এটি চূড়ান্ত হবে।

দশম শ্রেণি শেষে পাবলিক পরীক্ষার নাম কী

এনসিটিবির সূত্রমতে, দশম শ্রেণি শেষে হবে এই পাবলিক পরীক্ষা। তবে নামটি এখনকার মতো মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষাও থাকতে পারে, আবার ভিন্ন নামও হতে পারে। নামের বিষয়টি এখনো ঠিক হয়নি। এত দিন নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে এসএসসি পরীক্ষা হতো। নতুন শিক্ষাক্রমে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে হবে এই মূল্যায়ন বা পরীক্ষা। ১০টি বিষয়ের প্রতিটির ওপরই হবে এই মূল্যায়ন। এর মধ্যে একটি অংশের মূল্যায়ন হবে বিদ্যালয়েই শিখনকালীন। বাকি আরেকটি অংশের মূল্যায়ন হবে কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীন। এখনকার মতোই কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা ঠিক করে হবে এই পরীক্ষা। শিখনকালীন ও পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন সমান গুরুত্ব পাবে।

মূল্যায়নের খসড়া অনুযায়ী, কেন্দ্রীয়ভাবে যে পরীক্ষা বা মূল্যায়ন কার্যক্রম হবে, তাতে প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়ন হবে এক কর্মদিবসের সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টায়। বিরতি দিয়ে হবে এই পরীক্ষা। এর মধ্যে একটি অংশের মূল্যায়নে অনুসন্ধান, প্রদর্শন, মডেল তৈরি, উপস্থাপন, পরীক্ষণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদি বিষয় থাকবে। মানে হাতে-কলমে শেখার বিষয়টি মূল্যায়ন করা হবে। আরেকটি অংশে থাকবে লিখিত পরীক্ষা। সেখানে লিখিত উত্তরপত্র ব্যবহার করা হবে। লিখিত পরীক্ষার অংশ বিষয়ভেদে এক ঘণ্টা থেকে দুই ঘণ্টাও হতে পারে। সময়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কাঠামোর সঙ্গে মিল রেখে বিদ্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেণিতে মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বিভিন্ন শ্রেণিতে বছরজুড়ে শিখনকালীন মূল্যায়নের পাশাপাশি বছরে দুটি সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। এর মধ্যে একটি হবে শিক্ষাবর্ষের ৬ মাস পর এবং আরেকটি হবে ১২ মাস পর। বিদ্যালয়ের এসব মূল্যায়নেও এক দিনে এক বিষয়ের মূল্যায়ন হবে। মূলত স্কুল সময়টিকে বিবেচনায় নিয়ে পাঁচ ঘণ্টার বিষয়টি ঠিক করা হয়েছে।

নতুন শিক্ষাক্রম ও মূল্যায়নপদ্ধতি তৈরির সঙ্গে যুক্ত আছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন কোর কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক এম তারিক আহসান। তিনি বলেন, নতুন পদ্ধতির মূল্যায়নে একটি অংশে লিখিত পরীক্ষা থাকলেও এখনকার মতো মুখস্থনির্ভর প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। একজন শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয়ে কতটুকু পারদর্শিতা অর্জন করতে পারছে, সেটিই মূলত সৃজনশীল উপায়ে লিখতে হবে। এ জন্য প্রশ্নপত্রের পদ্ধতিও হবে ভিন্ন।

অধ্যাপক এম তারিক আহসান বলেন, প্রতিটি বিষয়ে এক কর্মদিবসের পাঁচ ঘণ্টায় মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্তটি এসেছে বাস্তবতার ভিত্তিতে। কারণ, ইতিমধ্যে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে ছয় ঘণ্টা ধরে সামষ্টিক মূল্যায়ন পরিচালনা করা হয়েছিল। এমনকি একটি বিষয়ে একাধিক দিন এবং একই দিনে একাধিক বিষয়ে মূল্যায়ন কার্যক্রমও হয়েছে। তাতে শিক্ষার্থীদের ওপর কিছুটা চাপ পড়ে। সেটি বিবেচনায় নিয়ে এক দিনে এক বিষয়ে পাঁচ ঘণ্টায় মূল্যায়ন করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি এমনভাবে করা হচ্ছে তাতে শিক্ষার্থীরা চাপ অনুভব করবে না। আর এই পাঁচ ঘণ্টায় শিক্ষার্থীরা কেবল লিখিত পরীক্ষাও দেবে না। তারা নানা রকম হাতে–কলমে কাজেও নিয়োজিত থাকবে এবং বিরতিও থাকবে।

যেভাবে প্রশ্নপত্র তৈরি হবে

এনসিটিবির খসড়া মূল্যায়ন কাঠামো অনুযায়ী, বরাদ্দ করা সময় এবং শিক্ষার্থীর সক্ষমতা বিবেচনা করে বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নপত্র তৈরি হবে। শিক্ষা বোর্ডের নির্বাচিত ও প্রশিক্ষিত বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ও পরিশোধনকারীরা (মডারেটর) প্রয়োজনীয় নির্দেশনা, চেক লিস্টসহ প্রশ্নপত্র তৈরি করবেন। এই চেক লিস্টে দুটি অংশ থাকবে। পর্যবেক্ষণ ছক, যা প্রত্যাবেক্ষক (পরীক্ষার কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক) কেন্দ্রে শিক্ষার্থীর পারদর্শিতা (উপস্থাপন, প্রদর্শনী ইত্যাদি) পর্যবেক্ষণ করে একটি অংশ পূরণ করবেন। আরেকটি অংশ পরীক্ষক লিখিত মূল্যায়ন করে পূরণ করবেন।

পরীক্ষক কোনো শিক্ষার্থীর পর্যবেক্ষণ ছকে প্রাপ্ত তথ্য এবং লিখিত উত্তরপত্র মূল্যায়ন ছকের তথ্য বিবেচনা করে নৈপুণ্য অ্যাপের (মূল্যায়নের ফলাফলের তথ্য সংরক্ষণ হয় এই অ্যাপে) পারদর্শিতার নির্দেশকে (পিআই) ইনপুট দেবেন। তাতে এখনকার মতো নম্বর দেওয়ার ব্যবস্থা নেই।

এনসিটিবি বলছে, প্রতিটি পরীক্ষার শুরুতে শিক্ষার্থীর কী কী পারদর্শিতা মূল্যায়ন করা হবে, তা দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষার্থীদের স্পষ্ট জানিয়ে দেবেন। বিষয়ের ভিন্নতা অনুযায়ী কাগজ, পরীক্ষণ, মডেল, নকশা, গ্রাফ ইত্যাদি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের ব্যবস্থা থাকবে পরীক্ষার কেন্দ্রে। শিক্ষা বোর্ডই কেন্দ্র ঠিক করবে। তবে শিক্ষার্থীদের নিজ প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্র হবে না। এখনকার মতো অন্য প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্র হবে। মোদ্দাকথা, পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থাপনার কাজটি এখনকার মতোই শিক্ষা বোর্ডগুলো করবে।

এদিকে পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আগেই ‘রিসোর্স পুল’ গঠন করা হবে। আগামী মে মাসে কর্মশালার মাধ্যমে তাদের প্রস্তুত করা হবে।

শিক্ষার্থীর বৈচিত্র্য, চাহিদা ও সক্ষমতা বিবেচনা করে মূল্যায়ন বা পরীক্ষা কার্যক্রমের কৌশলে নমনীয়তা ও বিকল্প উপায়ও রাখা হবে বলে জানিয়েছে এনসিটিবি।

নবম শ্রেণির ভিত্তিতে নিবন্ধন

এখন একজন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারবে কি না, সেটি নির্ভর করে দশম শ্রেণিতে হওয়া নির্বাচনী (টেস্ট) পরীক্ষার ভিত্তিতে। কিন্তু নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে একজন পরীক্ষার্থী দশম শ্রেণি শেষে পাবলিক পরীক্ষা দিতে পারবে কি না, সেটি নির্ভর করবে নবম শ্রেণিতে বিদ্যালয়ে হওয়া শিখনকালীন মূল্যায়নের ওপর। যদি কোনো শিক্ষার্থী নবম শ্রেণিতে শিখনকালীন মূল্যায়নে ভালো করে, তাহলে দশম শ্রেণিতে উঠবে এবং তার আলোকে নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) হবে। তারাই পাবলিক পরীক্ষা দেবে। এখনকার মতো নির্বাচনী পরীক্ষা হবে না। তবে দশম শ্রেণিতেও শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে।

এনসিটিবি বলছে, দশম শ্রেণির শিক্ষাবর্ষের শুরু থেকে এনসিটিবি প্রণীত নির্দেশিকা অনুসরণ করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকেরা শিখনকালীন মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। প্রতিটি শিখন অভিজ্ঞতা শেষে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রমাণের ভিত্তিতে পারদর্শিতার নির্দেশক (পিআই) অনুযায়ী নৈপুণ্য অ্যাপে ইনপুট দেবেন এবং প্রমাণগুলো সংরক্ষণ করবেন। তারপর শিক্ষা বোর্ড নির্বাচিত বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়নকারীরা (সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরের) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে দৈবচয়নের ভিত্তিতে নমুনা নিয়ে শিখনকালীন মূল্যায়নের প্রমাণ যাচাই করবেন।

সাত স্কেলে রিপোর্ট কার্ড

এনসিটিবি খসড়া মূল্যায়ন কাঠামো অনুযায়ী, মূল্যায়ন বা পরীক্ষা শেষ হওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ট্রান্সক্রিপ্ট ও রিপোর্ট কার্ড তৈরি হবে। ট্রান্সক্রিপ্টে একজন শিক্ষার্থী প্রতিটি বিষয়ে পারদর্শিতা কতটুকু অর্জন করল, তার তথ্য উল্লেখ থাকবে। আর রিপোর্ট কার্ডে শিখনকালীন মূল্যায়ন ও পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়নের জন্য আলাদাভাবে সাতটি স্কেলে ফলাফল প্রকাশিত হবে। সাতটি ছকের মাধ্যমে এই সাতটি স্কেল বোঝানো হয়েছে। নির্ধারিত পারদর্শিতা অনুযায়ী ছকগুলো পূরণ করা হবে। তাতে যোগ্যতা অনুযায়ী কোনো শিক্ষার্থীর ছয়টি ঘরও পূরণ হবে, আবার কারও বেলায় তা কমবেশি হবে। ধরা যাক, একজন শিক্ষার্থী নির্ধারিত সূচক অনুযায়ী ছয়টি পারদর্শিতা (পারফরম্যান্স) অর্জন করেছে, তাহলে ছয়টি ছক পূরণ করে বাকি একটি খালি রাখা হবে। এই রিপোর্ট কার্ডই সনদ হিসেবে বিবেচিত হবে।

তিন বিষয়ে বেশি খারাপ করলে কলেজে উত্তীর্ণ নয়

নতুন মূল্যায়ন কাঠামোর খসড়া তৈরির সঙ্গে যুক্ত একজন শিক্ষক বলেন, কোনো শিক্ষার্থী যদি তিনটি বিষয়ে পারদর্শিতার প্রারম্ভিক স্তরে থাকে, তাহলে তারা ওপরের ক্লাসে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে না। অর্থাৎ দশম শ্রেণি শেষে যে পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, তাতে কোনো শিক্ষার্থী তিন বিষয়ে এমন বেশি খারাপ করলে সে কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে না।

শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, মূল্যায়নে মিশ্র পদ্ধতি হতে পারে। কিন্তু সেটি অবশ্যই কার্যকরভাবে করতে হবে। লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন এমনভাবে করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীর জ্ঞান, বুঝতে ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা ইত্যাদি যাচাই করা যায়। আর ধারাবাহিক মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৮/০৩/২০২৪

ঢাকাঃ ফিলিস্তিনে গাজায় ইসরায়েলের হামলা চলছে ১৭২ দিন ধরে। এই হামলা শুরুর পর থেকেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগ নিয়ে জাতিসংঘের যে বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে, তাদের প্রতি সমর্থন বাড়ছে। বিভিন্ন দেশই এখন এই গণহত্যার অভিযোগ খতিয়ে দেখার আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

ফিলিস্তিনের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে কাজ করছেন ফ্রান্সেস্কা আলবানেজ। তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদকে গত সোমবার জানিয়েছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সংস্থাটির সদস্য দেশগুলোর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা এবং ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা উচিত।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এমন সময়ে গণহত্যার অভিযোগ জোরালো হচ্ছে, যখন আন্তর্জাতিক মহলের আহ্বান উপেক্ষা করে গাজার রাফাহ এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল বুধবার জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে হামলায় ৭৬ জন নিহত হয়েছে। এ নিয়ে গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় ৩২ হাজার ৪৯০ জন নিহত হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে গত সোমবার ফিলিস্তিনের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত আলবানেজ তাঁর বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, এই হামলা শুরুর পর থেকে গাজার বাসিন্দাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে ইসরায়েল। এই গাজাবাসীদের ওপর হামলা করা যায়, তাদের মেরে ফেলা যায়, এমনকি তাদের ধ্বংস করে ফেলা যায়—এমনটাই ধরে নিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের গণহত্যামূলক পদক্ষেপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তারা ফিলিস্তিন থেকে ফিলিস্তিনিদের মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

আলবানেজের এই প্রতিবেদনে সমর্থন দিচ্ছেন বিভিন্ন দেশের দূতেরা। ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনতে যাঁরা আলবানেজের এই প্রতিবেদনে সমর্থন দিচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে মুসলিম ও আরব দেশের দূতেরা যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন লাতিন আমরিকার দেশের দূতেরাও।

অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) হয়ে আলবানেজের এই প্রতিবেদনে সমর্থন দিয়েছে পাকিস্তান। ওআইসির পক্ষ থেকেও ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানানো হয়েছে। আলবানেজ জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে যখন এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন, তখন সেখানে উপস্থিত পাকিস্তানের প্রতিনিধি বলেন, ‘গাজায় গণহত্যার তথ্য নথিভুক্ত করার ক্ষেত্রে আপনার সাহসের প্রশংসা করি আমরা।’

আরব দেশগুলোর পক্ষ থেকে ওই বৈঠকে কথা বলেন মিসরের প্রতিনিধি। তিনি বলেন, গাজা উপত্যকাকে বসবাসের অযোগ্য করে তোলার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের কাঠামোগত এবং পদ্ধতিগত আক্রমণ নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন তাঁরা। বৈঠকে উপসাগরীয় দেশগুলোর পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করে কাতার। ইসরায়েল ফিলিস্তিনে যে যুদ্ধ চালাচ্ছে তা বন্ধে আন্তর্জাতিক মহলের পদক্ষেপ চায় তারা।

যা বললেন আলবানেজ
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের বৈঠকে ইসরায়েলকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন আলবানেজ। তিনি বলেন, গাজা ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েল। তিনি আরও বলেন, ‘গাজায় যেটা হচ্ছে তাতে গণহত্যার অভিপ্রায় স্পষ্ট। আমরা সেখান থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখতে পারি না। আমাদের এর মুখোমুখি হতে হবে, এই গণহত্যা আমাদের ঠেকাতে হবে এবং এই পদক্ষেপ যারা নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে।’

মানবাধিকার পরিষদের এই বৈঠকে ইসরায়েলের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। তবে গত মঙ্গলবারই তাঁর প্রতিবেদন খারিজ করেছে দেশটি। ইসরায়েলের দাবি, আলবানেজের এই প্রতিবেদন বাস্তবতা বর্জিত।

ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও আলবানেজের সমালোচনা করেছে। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই প্রতিবেদন ইসরায়েলবিরোধী।

গাজায় ত্রাণ ফেলা অব্যাহত
এদিকে গাজায় ত্রাণ না ফেলতে আহ্বান জানিয়েছিল হামাস। তাদের দাবি, এতে হতাহতের ঘটনা ঘটছে। তবে হামাসের এই বক্তব্য খারিজ করে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, আকাশ থেকে ত্রাণ ফেলার এই কার্যক্রম চলবেই।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৮/০৩/২০২৪

মুফতি আইয়ুব নাদীমঃ রমজান মাসের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত আমল। ইতিকাফ অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত, যার প্রভাব মানুষের মননে ও জীবনে অনেক বেশি। যেসব আমলের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য খুব সহজে লাভ করা যায়, এর মধ্যে অন্যতম ইতিকাফ। কোরআন-হাদিসের আলোকে ইতিকাফের কয়েকটি উপকারের কথা এখানে তুলে ধরা হলো—

নেক কাজ না করেও সওয়াব লাভ: ইতিকাফকারী ব্যক্তি ইতিকাফের কারণে যেসব নেক কাজ করতে পারছেন না, অথচ যাঁরা ইতিকাফ করছেন না, তারা বাইরে থাকার কারণে সে কাজগুলো খুব সহজেই করতে পারছেন, যেমন জানাজার নামাজ আদায় ইত্যাদি ইতিকাফকারীর আমলনামায় সেসব নেক আমলের সওয়াব লিখে দেওয়া হবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) সূত্রে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইতিকাফকারী সম্পর্কে বলেছেন, ‘সে গোনাহ পরিত্যাগকারী। সব সময় কোনো পুণ্যের কাজে অংশগ্রহণকারীর মতো সে সওয়াব লাভ করবে।’ (শুআবুল ইমান: ৩৬৭৮)

শবে কদর লাভ: ইতিকাফের মাধ্যমে শবে কদর লাভ করার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। রাসুলুল্লাহ (সা.) শবে কদর লাভের আশায় একবার রমজানের প্রথম ১০ দিন ইতিকাফ করেন। এরপর কয়েকবার ইতিকাফ করেন মাঝের ১০ দিন। এরপর একসময় শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করতে শুরু করেন এবং এরশাদ করেন, ‘তোমরা রমজানের শেষ দশকে শবে কদর অন্বেষণ করো।’ (বুখারি: ২০২০)

মসজিদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন: পুরো পৃথিবীর মধ্যে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় স্থান মসজিদ। তাই ইতিকাফকারী অবসর সময়ে কোনো আমল না করলেও দিনরাত তাঁর মসজিদে অবস্থান করাটাই ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়।

হজ-ওমরাহর সওয়াব লাভ: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করবে, সে দুটি হজ ও দুটি ওমরাহর সওয়াব লাভ করবে।’ (শুআবুল ইমান: ৩৬৮১)

লেখকঃ শিক্ষক ও মুহাদ্দিস

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৮/০৩/২০২৪

ঢাকাঃ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক তারিক মুর্শেদ। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে পড়তে গিয়েছিলেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগের অধীন রিফিউজি স্টাডিজ সেন্টার থেকে রিফিউজি এবং ফোর্সস মাইগ্রেশন স্টাডিজ বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেছেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জনে আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া কঠিন মনে হলেও অসম্ভব নয়। অ্যাকাডেমিক রেজাল্ট মানসম্পন্ন ও ভর্তি-নির্ধারিত বিষয়ে ভালো জ্ঞানসম্পন্ন হলে সহজেই ভর্তি হওয়া যায়।

আবেদনের প্রক্রিয়া শেষ
MSc in Refugee and Forced Migration Studies সহ অন্য অনেক মাস্টার্স প্রোগ্রামের আবেদনপ্রক্রিয়া সাধারণত অক্টোবরে শুরু হয়ে পরের বছরের জানুয়ারি মাসে শেষ হয়।

ভর্তির যোগ্যতা
⊲ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া বেশ প্রতিযোগিতামূলক। কেবল সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আন্তরিকভাবে পড়তে আগ্রহী একাডেমিকভাবে দক্ষ ও উদ্যমী শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগ দেওয়া হয়। কাজেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ন্যূনতম প্রথম শ্রেণি বা উচ্চতর দ্বিতীয় শ্রেণির স্নাতক ডিগ্রি বা সমমানের আন্তর্জাতিক যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন।

⊲ যাঁদের IB (International Baccalaureate), A- Level, SAT–এই ধরনের আন্তর্জাতিক মানের পরীক্ষার সনদ রয়েছে, ভর্তি কমিটি তাঁদের বিশেষ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে থাকে। এ ছাড়া বেশির ভাগ আবেদনকারীকে আইইএলটিএস বা টোফেলের মতো ইংরেজি ভাষা দক্ষতার প্রমাণ প্রদর্শন করতে হয়। আইইএলটিএসের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৭.৫ স্কোর অর্জন করতে হবে, যেখানে সাব-স্কোরের সব পর্যায়েই ন্যূনতম ৭ থাকতে হবে।

⊲ সহশিক্ষামূলক কার্যক্রম সব সময়ই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। অ্যাকাডেমিক পারফরম্যান্সের পাশাপাশি আবেদনকারীদের পাঠ্যক্রমবহির্ভূত কোনো কার্যকলাপ, ব্যক্তিগত অর্জন যেমন স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন ম্যানেজমেন্ট, কমিউনিটি সার্ভিস প্রজেক্ট, খেলাধুলা এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক ইভেন্টে অংশ নেওয়ার মতো সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমগুলো বিশেষভাবে বিবেচনা করে থাকে ভর্তি কমিটি।

⊲ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য আলাদা কোনো ভর্তি পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। মূলত আপনার আবেদন প্যাকেজ, সহায়ক ডকুমেন্টের ওপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন করা হবে। তবে কিছু মাস্টার্স প্রোগ্রাম ভর্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সাক্ষাৎকারের ব্যবস্থা থাকতে পারে।

⊲ সহায়ক নথি: ট্রান্সক্রিপ্ট, ভাষা দক্ষতার প্রমাণ, ব্যক্তিগত বিবৃতিসহ আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা মূল্যায়নের জন্য আরও কিছু ডকুমেন্ট চেয়ে থাকে।
⊲ লেখার নমুনা: একটি বা দুটি অ্যাকাডেমিক নিবন্ধ বা অন্যান্য লেখা যা আপনার লেখার দক্ষতাকে ফুটিয়ে তুলবে।

⊲ রেফারেন্স লেটার: শিক্ষাবিদ বা পেশাদারদের কাছ থেকে আপনার ও আপনার কাজ সম্পর্কে লেখা সুপারিশমূলক চিঠি।

⊲ পড়াশোনা খরচ: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি ও আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা আছে। তা ছাড়া বিভিন্ন দেশের সরকার ও সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত বৃত্তি পেয়েও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া যায়। বিদেশি শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মাস্টার্স প্রোগ্রাম অনুযায়ী ভিন্ন হয়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের https://www.ox.ac.uk/admissions/ undergraduate/fees-and-funding এই ওয়েবসাইটে বর্তমান ফি কাঠামো দেখতে পারেন।

বিষয় ও কলেজ নির্বাচন: সঠিক প্রোগ্রাম নির্বাচন আপনার ব্যক্তিগত লক্ষ্য, আগ্রহ এবং পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতার ওপর অনেকটাই নির্ভর করে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রায় ২০০টি মাস্টার্স-স্তরের কোর্স অফার করে এবং প্রতিটি কোর্সের জন্য ওয়েবসাইটে নিজস্ব জায়গা আছে, যাতে কোর্স সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। সেখান থেকে আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত কোর্সটি নির্বাচন করুন।

অন্যান্য শর্ত
⊲ ইংরেজি ভাষায় যথেষ্ট দক্ষতা থাকতে হবে।
⊲ শিক্ষাজীবনের কোনো পর্যায়ে দ্বিতীয় বিভাগ থাকলে আবেদন করা যাবে না।

নতুনদের জন্য পরামর্শ: আবেদনের প্রতিটি পর্যায়ে আপনার পছন্দের প্রোগ্রামের প্রতি আন্তরিক আগ্রহ প্রদর্শন করবেন। অতীতের অ্যাকাডেমিক সাফল্য এবং প্রাসঙ্গিক সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমকে সামনে তুলে ধরবেন যা প্রোগ্রামের উদ্দেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সময় নিয়ে একটি আকর্ষণীয় ব্যক্তিগত বিবৃতি তৈরি করুন, যা আপনার প্রোগ্রামের প্রতি আগ্রহ, যোগ্যতা ও সম্ভাব্য অবদান তুলে ধরবে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৮/০৩/২০২৪

ঢাকাঃ ফ্রান্সের আইন অনুসারে, হিজাব মাথায় দিয়ে স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ। তাই নিজ স্কুলের এক শিক্ষার্থীকে মাথা থেকে হিজাব খুলে নিতে জোর করেছিলেন এক প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনার পর থেকেই একের পর এক হত্যার হুমকি পাচ্ছিলেন সেই শিক্ষক। প্রাণভয়ে শেষ পর্যন্ত শিক্ষকতাই ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে বুধবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাকরি ছেড়ে দেওয়া ওই প্রধান শিক্ষকের নাম গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়নি। তবে তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে স্কুলের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিল না এমন দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

অতীতে ফ্রান্সে অন্তত দুজন শিক্ষক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। তারপর থেকেই ফরাসি স্কুলগুলোর প্রতি ইসলামপন্থী হুমকিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। হত্যার শিকার ওই দুই শিক্ষকের মধ্যে স্যামুয়েল প্যাটি নামে একজনকে ২০২০ সালে প্যারিসের একটি শহরতলির রাস্তায় শিরশ্ছেদ করা হয়। ডমিনিক বার্নার্ড নামে আরেক শিক্ষক পাঁচ মাস আগেই ফ্রান্সের আরাসে অবস্থিত নিজের স্কুলে ছুরিকাঘাতে নিহত হন।

বিবিসি জানিয়েছে, প্যারিসের মরিস লাভেল লাইসি এলাকায় চাকরি ছেড়ে দেওয়া প্রধান শিক্ষক সহকর্মীদের কাছে একটি ইমেইল পাঠিয়ে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘নিজের এবং প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগের কারণে অবশেষে আমি আমার কাজ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

গত তিন সপ্তাহ ধরে সমর্থন দেখানোর জন্য সহকর্মীদের ধন্যবাদও জানান ওই শিক্ষক। জানা যায়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি স্কুলের মধ্যে হিজাব পরে এসেছিলেন তিন ছাত্রী। পরে প্রধান শিক্ষক তাদের হিজাব খুলে আইন মানার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ অবস্থায় দুজন মাথা থেকে হিজাব সরিয়ে নিলেও একজন শিক্ষকের কথা অমান্য করেন এবং বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন।

এ ঘটনার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হত্যার হুমকি পাচ্ছিলেন প্রধান শিক্ষক। এ বিষয়ে স্কুলের পক্ষ থেকে পরে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হটলাইনেও অভিযোগ করা হয়। বাড়ানো হয় স্কুলের চারপাশ ঘিরে পুলিশি নিরাপত্তা। এমনকি ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী পর্যন্ত ওই স্কুলটি পরিদর্শন করেন।

শিক্ষকের চাকরি ছাড়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফ্রান্সের বাম এবং ডান উভয়পন্থী রাজনীতিবিদেরা। কট্টর ডানপন্থী রাজনীতিবিদ ও সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মেরি লি পেন একটি অ্যাক্স বার্তায় লিখেছেন, ‘এই সরকার আমাদের স্কুলগুলোর নিরাপত্তা দিতে অক্ষম।’

সোশ্যালিস্ট পার্টির বরিস ভ্যালাউড বলেছেন—‘এটি মেনে নেওয়া যায় না। একজন প্রধান শিক্ষক মৃত্যুর হুমকির কারণে যখন পদত্যাগ করেন, তখন এটি একটি সম্মিলিত ব্যর্থতা।’

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৮/০৩/২০২৪

ঢাকাঃ  জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ সালেহ উদ্দিন আহমেদকে ওএসডি করেছে সরকার, সেই সঙ্গে ৫ যুগ্মসচিবের দপ্তর বদল করা হয়েছে। বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা আলাদা প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ সালেহ উদ্দিন আহমেদকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ওএসডি করা হয়েছে।

অন্যদিকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব অঞ্জনা খান মজলিসকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. মতিয়ার রহমানকে পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে পদায়ন করা হয়েছে।

পৃথক প্রজ্ঞাপনে ভারতের বাংলাদেশ হাইকমিশনে দায়িত্বপালন শেষে সদ্য যোগদান করা ড. এ কে এম আতিকুল হককে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বিএসএস প্রশাসন একাডেমির পরিচালক শারমিন জাহানকে যুগ্মসচিব হিসেবে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব (পিএস) মো. আল মামুনকে যুগ্মসচিব হিসেবে স্থানীয় সরকার বিভাগে বদলি করা হয়েছে।

এছাড়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. মোতাহার হোসেনকে দুদকের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) যুগ্মসচিব শাহ আবদুল তারিককে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অতিরিক্ত মহাপরিচালক করা হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৮/০৩/২০২৪

কুমিল্লাঃ ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে উপজেলার চান্দলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দা তাহমিনা হক সভাপতি ও শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল হককে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. আবুল কাসেম ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শাহীন এ কমিটির অনুমোদন দেন।

কমিটিতে কুমিল্লা জেলা কমিটির সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন খান ও সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন মজুমদার এবং কুমিল্লা-৫ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবু জাহের সুপারিশ করেছেন।

কমিটিতে নির্বাহী সভাপতি হয়েছেন রাজিবুল হক, নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক শেখ রাবেয়া পলি, দপ্তর সম্পাদক রাকিব উদ্দিন এবং অর্থ সম্পাদক জামাল হোসেন। এছাড়াও বিভিন্ন দাপ্তরিক পদ ও কার্যনির্বাহী সদস্যসহ ৭১ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৮/০৩/২০২৪

ঢাকাঃ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমনের বিরুদ্ধে দুই বছর আগে এক শিক্ষার্থী যৌন হয়রানির অভিযোগ দিলেও বিভাগের পক্ষ থেকে সেই শিক্ষকেই এতদিন রক্ষা করার চেষ্টা করা হয়েছে।

অভিযোগ তুলে নিতে বাধ্য করার চেষ্টাসহ ওই শিক্ষার্থীকে নানাভাবে হেনস্তা ও হয়রানি করেন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম।

তবে দুই বছর পেরিয়ে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হবার পরও কারো বিরুদ্ধেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

অবশেষে, দুই বছর পর, গত ১৫ মার্চ আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার মৃত্যুর পর (ভিন্ন একটি যৌন হয়রানির ঘটনায় প্রতিকার না পেয়ে), এই অভিযোগটি আবার সামনে আসে।

এরপর গত ২১ মার্চ, অবন্তিকার মৃত্যুর পাঁচ দিনের মাথায়, ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষক ইমকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তাকে রক্ষা করে আসা অধ্যাপক জুনায়েদ হালিমকে বিভাগের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে ইমনের দ্বারা যৌন হয়রানির শিকার হন ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের এক শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে ২০২০ এবং ২০২১ সালে ওই শিক্ষার্থী বিভাগের প্রধানকে মৌখিক দেন। তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

উলটো, ২০২১ সালে ওই শিক্ষার্থীকে তার চতুর্থ সেমিস্টারের একটি মিড টার্ম পরীক্ষায় বসতে বাধা দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ওই শিক্ষার্থী।

তিনি বলেন, এক পর্যায়ে বাধ্য হয়েই ওই বছরের ডিসেম্বরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর যৌন হয়রানি এবং তাকে পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ার বিষয়ে অভিযোগ দেন। এর পরও অভিযোগের বিষয়টিকে আমলে নিয়ে তদন্তের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। একই ধরনের হয়রানির শিকার হয়ে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অবন্তিকা আত্মহত্যা করার পরই আবু শাহেদ ইমন ও জুনায়েদ হালিমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের সাময়িক বহিষ্কারে সন্তুষ্ট হতে পারেননি জানিয়ে ওই শিক্ষার্থী বলেন, 'এতদিন পর সাময়িক বরখাস্ত করা কোনো শাস্তিই হতে পারে না। তাদেরকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হোক।'

তিনি বলেন, ২০২১ সালের ২৬ ডিসেম্বর তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ইমদাদুল হক বরাবর প্রথম লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তিনি।

অভিযোগ করার পরপরই, তিনি দেশের নামকরা বেশ কয়েকজন শিল্পী/নির্মাতার কাছ থেকে ফোন কল পেতে শুরু করেন। তারা তাকে অভিযোগ তুলে নিতে ও দেখা করার জন্য নানাভাবে অনুরোধ করতে থাকেন। তবে তিনি কারও সঙ্গে দেখা করতে সম্মত হননি।

অভিযোগ দায়ের করার ঠিক আটদিন পর, ৬ জানুয়ারি ওই শিক্ষার্থীকে বিভাগের অফিসকক্ষে ডাকেন চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিম। সেখানে অন্যান্য শিক্ষকদের পাশাপাশি যৌন হয়রানিতে অভিযুক্ত শিক্ষক ইমনও উপস্থিত ছিলেন।

সেখানে উপস্থিত সবার সামনেই অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম ওই শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চাপ দেন। তবে তিনি তাতে রাজি হননি বলে জানান।

সেদিনই ওই শিক্ষার্থী তার মাকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য বরাবর আরও একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। কিন্তু সেবারও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

এর দুদিন পর রাজবাড়িতে ওই শিক্ষার্থীর গ্রামের বাড়িতে যান অভিযুক্ত ইমন এবং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক জুনায়েদ। পর পর দুই দিন ওই শিক্ষার্থীর বাবার সাথে দেখা করেন তারা।

শিক্ষার্থী দাবি অনুযায়ী, এই দুই শিক্ষক গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তার বাবাকে যৌন হয়রানির অভিযোগটি প্রত্যাহার করতে চাপ প্রয়োগ করেন। প্রত্যাহার না করলে, মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার, মানহানির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা, এমনকি হত্যার ও হুমকি দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তার বাবা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন বলে তিনি অভিযোগে জানান।

এরপর ৯ জানুয়ারি রাজবাড়ী থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরেই ওই শিক্ষার্থীকে ফোন করেন অধ্যাপক জুনায়েদ। তাকে বলা হয় যত রাতই হোক যেন তিনি দেখা করেন।

শিক্ষার্থীর অভিযোগ অনুযায়ী, সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও একপ্রকার জোর করেই সেদিন তাকে দেখা করতে বাধ্য করা হয়। সন্ধ্যা ৭টায় তাকে বিবিএ ভবনের নবম তলায় বিভাগের অফিস কক্ষে তাকে একা ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে উপস্থিত অন্য আরেকজন শিক্ষকের সামনে অধ্যাপক জুনায়েদ তাকে অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেন।

তবে তিনি এতে অসম্মতি জানিয়ে অফিস কক্ষ থেকে বের হয়ে যান বলে এই প্রতিবেদককে জানান।

এর পরদিন, সমস্ত ঘটনার কথা লিখে তিনি আবারও উপাচার্যকে চিঠি দেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেবারও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি।

এতে অবশ্য অধ্যাপক জুনায়েদ থেমে থাকেননি। অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য তিনি অনবরত ওই শিক্ষার্থী এবং তার বাবাকে ফোন করে গেছেন।

শিক্ষার্থী দাবি করেন, কোনো উপায় না পেয়ে তিনি ক্যাম্পাসে একাই আন্দোলনে নামেন।

আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২২ মার্চ প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেল এর অধীনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে।

তদন্তে যুক্ত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে যায়, তদন্ত চলাকালে তারা নানাভাবে হয়রানির সম্মুখীন হয়েছিলেন। কমিটির সদস্য অধ্যাপক হোসনে আরা বলেন, বিভিন্ন অপরিচিত নাম্বার থেকে তাদেরকে বারবার কল করা হতো। ফোনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হতো। বলা হতো, 'তোরা কিসের তদন্ত করছিস, এই তদন্ত করে কী হবে, এর উদ্দেশ্য কী?'

এ ছাড়া তারা কখন কোথায় যাচ্ছেন, ফোনে তা জিজ্ঞেস করা হতো। এ সব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা চেয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করতে বাধ্য হন তদন্তে যুক্ত তিন শিক্ষক।

এত বাধার পরও তদন্ত কমিটি, প্রায় আট মাস পর ২৪ নভেম্বর আবু শাহেদ ইমনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিতে সংশ্লিষ্ট থাকার কথা উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তারা।

প্রতিবেদন জমা পড়ার আট মাস পর, ১ আগস্ট বিভাগের শিক্ষক ইমনকে যৌন হয়রানির ঘটনায় অভিযুক্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে উল্লেখ করে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়।

অভিযোগ আমলে নিয়ে সিন্ডিকেট সভায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এর পরও বিভাগের সভাপতি জুনায়েদ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি।

এ বিষয়ে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলের তৎকালীন সদস্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, 'অনুষদের তৎকালীন ডিনকে দিয়েও অধ্যাপক জুনায়েদকে অনুরোধ করা হয়েছিল, যাতে তিনি ইমনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেন। তবে তিনি তা করেননি।'

একদিকে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, অন্যদিকে অভিযোগকারী শিক্ষার্থীকে তার শিক্ষা কার্যক্রমে নানা বাধা এবং হেনস্তার মুখোমুখি হতে হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। জানা যায়, ওই শিক্ষার্থীর অ্যাসাইনমেন্ট ইচ্ছা করে গ্রহণ করেননি অধ্যাপক জুনায়েদ। এর ফলে ওই শিক্ষার্থী সপ্তম এবং অষ্টম সেমিস্টারে অকৃতকার্য হন।

পরবর্তীতে গত বছরের নভেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বরাবর আরও একটি চিঠি লেখেন ওই শিক্ষার্থী। চিঠিতে তিনি যৌন হয়রানি থেকে শুরু করে, অভিযোগ দায়ের করার কারণে তাকে কী কী সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে সবই উল্লেখ করেন। এরপর অবন্তিকার আত্মহত্যার পর ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিমপি) গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) একই অভিযোগ করেন তিনি। এর পরদিন তিনি প্রতিকার চেয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর চিঠি লিখেন।

সার্বিক বিষয়ে  যৌন হয়রানির কথা অস্বীকার করেন অভিযুক্ত শিক্ষক ইমন। পরবর্তীতে গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন, কাল্পনিক।

 অধ্যাপক জুনায়েদ দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা।

তিনি বলেন, 'আমি ওই শিক্ষার্থীর এই অভিযোগের ব্যাপারে ২০২০ সালে শুনেছিলাম। সেসময় আমি নিজেই তাকে বলেছিলাম, লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে। যাতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হয়।'

যদি অভিযোগ দায়ের করতে বলে থাকেন, তবে আপনি কেন অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দিলেন? জবাবে তিনি বলেন, 'আমি কোনো চাপ প্রয়োগ করিনি।' তাহলে আপনি কেন ওই শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়েছিলেন? কেন তার বাবার সঙ্গে দেখা করার প্রয়োজন হলো? জবাবে তিনি বলেন, 'আমি স্বেচ্ছায় এটা করিনি। আমার ওপর চাপ ছিল। উপাচার্যের দপ্তর থেকে আমাকে তাগিদ দেওয়া হয়েছিল, ঘটনা যেহেতু আমার বিভাগে, তাই আমি যেন বিষয়টি অনানুষ্ঠানিকভাবে সমাধান করে ফেলি।'

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আপনাকে কেন বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দিল, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরই উপাচার্যের দপ্তর থেকে আমায় ডেকে পাঠানো হয়। বলা হয়, ঘটনাটি অত্যন্ত সংবেদনশীল। এর সঙ্গে আমার বিভাগ তো বটেই বিশ্ববিদ্যালয়েরও সম্মান জড়িত। তাই উপাচার্য নিজে আমাকে বিষয়টি হ্যান্ডেল করতে বলেন।'

তার ভাষ্য, 'এজন্যই আমি রাজবাড়ী গিয়েছিলাম।…আর তাছাড়া তখন রাজবাড়ীতে আমার অন্য একটা কাজও ছিল।'

আলাপের এক পর্যায়ে রাজবাড়ীতে গিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে শিক্ষার্থীর বাবার সঙ্গে দেখা করার কথাও স্বীকার করেন অধ্যাপক জুনায়েদ।

তিনি বলেন, 'আমি ওই শিক্ষার্থীর বাবার সঙ্গে দেখা করে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার ব্যাপারে কথা বলেছিলাম। পরবর্তীতে ইমনের উপস্থিতিতেই তাকে অভিযোগটি প্রত্যাহারের বিষয়ে কথা বলেছিলাম।'

তবে সেখানে কাউকে কোনো ভয় দেখানো কিংবা চাপ প্রয়োগ করা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন। ভয় দেখানে বা চাপ দেওয়ার উদ্দেশ্য না থাকলে কেন ওই শিক্ষার্থীকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন সন্ধ্যায় ডেকেছিলেন? জবাবে তিনি বলেন, 'তার বাবা, অভিযোগ প্রত্যাহারে রাজি হয়েছিলেন। সেকারণেই তাকে ডাকা হয়েছিল। তবে শিক্ষার্থী অভিযোগ প্রত্যাহার করতে সম্মত হননি। এক্ষেত্রে তাকে কোনো ধরনের চাপ দেওয়া হয়নি।'

এসব ঘটনার পর ওই শিক্ষার্থী এবং তার বাবাকে একাধিকবার ফোন করার কথাও স্বীকার করেন অধ্যাপক জুনায়েদ। তিনি বলেন, 'অভিযোগ প্রত্যাহারে রাজি হয়েও কেন প্রত্যাহার করল না, এটা জানতেই কল করেছিলাম। তবে তারা ফোনে কোনো রেসপন্স করেননি।'

অভিযোগ প্রত্যাহার করাতে ব্যর্থ হয়ে, ওই শিক্ষার্থীকে তার একাডেমিক বিষয়ে কোনো চাপ প্রয়োগ করেছেন কি না, তার অ্যাসাইনমেন্ট প্রত্যাখ্যান করেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।

তিনি বলেন, 'একজন শিক্ষক হিসেবে আমি এটা কীভাবে করতে পারি? ওই শিক্ষার্থী নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ার অনেক পরে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। আমি কেন সেটা গ্রহণ করব?'

প্রথমত একজন শিক্ষক, দ্বিতীয়ত বিভাগের সভাপতি হিসেবে কি আপনার শিক্ষার্থীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনায় প্রতিকারে সচেষ্ট হওয়া উচিত ছিল না? অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল না? জবাবে তিনি বলেন, 'অভিযোগকারী তো আমার শিক্ষার্থী, লিখিত অভিযোগটা সরাসরি আমার কাছে এলে হয়তো বিষয়টি ভিন্ন হতে পারতো। তবে যেহেতু উপাচার্য বরাবর গেছে, আর আমি তো উপাচার্যের অধীনেই কাজ করি। আমি কী করে তাদের কথার বাইরে যাই?'

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৮/০৩/২০২৪ 

নিজস্ব প্রতিবেদক।। 

১৫ রোজা দেখতে দেখতে চলে গেছে। আর কয়েকদিন পরেই ঈদুল ফিতর। অথচ জেলার বাজারগুলোতে এখনো ঈদের বাজার জমে ওঠেনি। গত বছর এই সময়ে ঈদের কেনাকাটার ধুম ছিল, আমরা দোকানিরা হিমশিম খেয়েছি। কিন্তু এবার সে রকম বিক্রি নেই। মানুষের হাত খালি, টাকা নেই।

মানুষের মধ্যে ঈদের আমেজ নেই। দোকানে তেমন ক্রেতাও নেই। বিক্রিও নেই। ঈদের বাজার ভালো না হলে পথে বসতে হবে অনেক দোকানিদের।

বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় নেই। মাঝে মধ্যে ক্রেতারা মার্কেটে ঢুকছেন, আবার দাম শুনেই খালি হাতে বের হয়ে যাচ্ছেন। একজন ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী বলেন, এবারের ঈদে বেচাকেনা অন্য বছরের তুলনায় কম। এখন পর্যন্ত দোকানে তেমন বিক্রি নেই।

অথচ গেল বছর এমন সময়ে ভালো বিক্রি ছিল। তবে আসা করা যায় আস্তে আস্তে বিক্রি বাড়বে।

 গত বছরের ঈদের তুলনায় এ বছর বিক্রি কিছুটা কম।  এ ছাড়া মানুষের হাতে টাকা নেই।

 কেনাকাটা করতে আসা শাহানারা বেগম বলেন, বাজারের দোকানিরা পোশাকের অতিরিক্ত দাম চাচ্ছেন। যার কারণে ইচ্ছা থাকলেও চাহিদামতো ঈদের কাপড় কিনতে পারছি না। রিকশাচালক কাদির মিয়া বলেন, দৈনন্দিন বাজার করেই কুল পাচ্ছি না। ঈদের বাজার করবো কখন।

সারাদিন রিকশা চালিয়ে রোজগার করি ৪-৫শ’ টাকা। সন্ধ্যার সময় বাজার করলে আর কিছু থাকে না। গার্মেন্টস ব্যবসায়ী রফিক মিয়া বলেন, এ বছর ঢাকায় প্রতি পিস কাপড় ৩০০-৫০০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হয়েছে। ইচ্ছা থাকলেও আমরা ক্রেতাদের কাছে কম দামে বিক্রি করতে পারছি না। রহিম নামের একজন কাপড় ব্যবসায়ী বলেন কাপড়ের এত দাম আমরা যারা সাধারন মানুষ নুন আনতে পানতা ফোরায় আমাদের কী এত বিলাসিতা করলে চলে।

মাসুদ নামের একজন শিক্ষক বলেন ,  কোনমতে বেচে আছি বাজার করতেই পারছি না, শিক্ষকদের আবার ঈদের কেনাকাটা।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৮/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।। 

বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ ও পূর্নাঙ্গ উৎসব ভাতাপ্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে দীর্ঘকাল। কর্মসূচি চলাকালে অনুষ্ঠিত সমাবেশে শিক্ষকরা বক্তব্য রাখছেন ।

তারা তাদের কম বেতনে মানবেতর জীবন যাপনের কথা বর্ণনা করেন। স্কুল কলেজের গর্ভনিং বডি ও পরিচালনা পরর্ষদে শিক্ষিত মানুষের অভাবে নানাবিধ সমস্যার কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা।

শিক্ষকরা বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে হবে আর এর প্রধান উপায় শিক্ষা খাতকে জাতীয়করণ। একইসঙ্গে শিক্ষকরা তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য দাবিগুলো পূরণের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানান।

এর পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের, গর্ভনিং বডি ও ব্যবস্থাপনা কমিটিতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করা, শূন্য পদে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের বদলীর ব্যবস্থা কার্যকর করাসহ, আসন্ন ঈদের আগেই পূর্নাঙ্গ উৎসব ভাতা প্রদানের দাবি করেন। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন।   মাঝে মাঝে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন আশ্বাস প্রদান করেন।

শিক্ষক ও কমর্চারীর সংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। তারা বলছেন আমরা বারবার আন্দোলন করছি, কিন্তু কেন আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে না। আমাদের অনেক শিক্ষক বিসিএস পাস করে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাকতা করছেন কিন্তু সরকারি না হওয়ায় আমরা সব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি না। তাই শিক্ষক হয়ে আমাদের যদি কষ্টে দিনানিপাত করতে হয় তাহলে আমরা শিক্ষাথীর্দের কি শেখাবো।  দাবি না মানলে আমরণ অনশনের হুমকি দেন। তারা বলেন, শিক্ষকের কিছু হলে এর দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে। এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয়করণ হলে এ দেশের সব শ্রেণিপেশার মানুষের সন্তানরা শহর ও গ্রামে একই মানের সরকারি স্কুলে কম বেতনে পড়ালেখা করতে পারবে। অভিভাবকদের শিক্ষা ব্যয় কমবে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা বর্তমানে সরকারি কোষাগার থেকে শতভাগ বেতন, বার্ষিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ও বার্ষিক ২০ শতাংশ বৈশাখি ভাতা পান। তবে তারা বাড়ি ভাড়া পান মাসিক এক হাজার টাকা, চিকিৎসা ভাতা মাসিক ৫০০ টাকা, উৎসব ভাতা পান ২৫ শতাংশ, যা অমানবিক। উৎসব ভাতা ও বাড়ি ভাড়া স্কেলভিত্তিক প্রদানসহ চিকিৎসা ভাতা এক হাজার ৫০০ টাকায় উন্নীত করলেই এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের কাজ অনেকদূর এগিয়ে যায়।এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা জাতীয় বেতন স্কেলের আওতার শতভাগে উন্নীত করা। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সব নিয়োগ সরকারের হাতে নিয়ে বদলি ও প্রমোশন অনতিবিলম্বে চালু। বিশেষ করে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ১ জানুয়াারি ২০২৪ থেকে ইএফটির মাধ্যমে বেতন ভাতা প্রদান।

 এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের শিক্ষা প্রশাসনে আনুপাতিক হারে প্রেষণে নিয়োগের ব্যবস্থা  করার আহবান জানান শিক্ষক নেতারা।  সকল সংগঠনের নেতারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দাবী নিয়ে মানবন্ধন থেকে শুরু করে অবস্থান ধর্মঘট, আমরণ অনশন, শিক্ষা- প্রতিষ্ঠানে তালা ঝোলানো সহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছেন দাবী পূরণের জন্য। কিন্তু বারবার ব্যর্থ হয়েছেন। এই ব্যর্থ তার জন্য শিক্ষকরা শিক্ষক নেতাদের দায়ী করেছেন আবার শিক্ষক নেতারা সাধারণ শিক্ষকদের দায়ী করেছেন। এবার আন্দোলন সংগ্রাম সফল না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করলেন শিক্ষক নেতা নজরুল ইসলাম রনি।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৮/০৩/২০২৪

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram