শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।। 

চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী অথৈ ধর। চট্টগ্রাম শহরের  দক্ষিণ কাট্টালীর বাসন্তী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। সেই অথৈ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় অথৈ ধর বলেন, আমার অনেক ভালো লাগছে। রেজাল্ট ভালো হবে সেটা জানতাম, কিন্তু প্রথম হব সেটি চিন্তা করিনি। আমার টার্গেট ছিল এক থেকে ১০ এ থাকার।

পড়াশোনার কৌশল সম্পর্কে অথৈ বলেন, ‘পরিকল্পিত পড়াশোনা করছি। নিজেকে যাচাই করার জন্য অনেক প্রি এক্সামে অংশ নিয়েছি, যা আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যে টপিকগুলো থেকে প্রশ্ন হয়, সেগুলো ছাড়া বাড়তি কিছু পড়িনি। কোশ্চেন ব্যাংক সলভ করে টপিকগুলো নিয়ে ধারণা নিয়েছি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত ফল অনুযায়ী, এ বছর ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে প্রথম হয়েছেন অথৈ ধর। তার সর্বমোট প্রাপ্ত নম্বর ১০৫.৫০। ভর্তি পরীক্ষায় তার রোল নম্বর ছিল ৩২০৩৪৫১। তিনি চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী। তার পরীক্ষা অঞ্চল ছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৩টায় অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৯.০৩.২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।। 

সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কানের গোপন ডিভাইসসহ ভাই-বোনকে আটক করেছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে শহরের মেড্ডায় পৌর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্র থেকে তাদেরকে আটক করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেলিম শেখ।

আটককরা হলেন, বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের টুকচানপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের মেয়ে রিনা আক্তার (২৩) ও তার বড় ভাই আব্দুল জলিল (২৮)।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম শেখ জানান, সকাল ১০টা থেকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শুরু হয়। পৌর ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে পরিদর্শনকালে এক মেয়ে পরীক্ষার্থীকে সন্দেহ হয়। পরে তার কানের ভেতরে থাকা ডিভাইস ও এরসঙ্গে থাকা সিম সেট জব্দ করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায় ডিভাইসটি তার বড় ভাই দিয়েছে পরীক্ষা দিতে। এ তথ্যের ভিত্তিতে তার ভাইকে খবর দিয়ে আনা হয়। দুইজনকে পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদে সত্যতা পাওয়া যায়।

তিনি আরও জানান, ঘটনায় যেহেতু একটি ডিভাইস জব্দ করা হয়েছে, এর সঙ্গে কে কে জড়িত তা তদন্ত করে জানতে নিয়মিত মামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ বাদি হয়ে মামলা করবেন। আটক দুজনকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৯.০৩.২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।। 

পবিত্র রমজান মাসের ১৮তম রোজা আজ। একইসঙ্গে রমজান মাসের তৃতীয় জুমা। তৃতীয় এই জুমার নামাজ পড়তে রাজধানীর মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের ঢল নেমেছে।

জুমার নামাজে অংশ নিতে মুসল্লিদের ঢল নামে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে। নির্ধারিত সময়ের আগেই ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা আসতে থাকেন মসজিদে। আযানের পরপরই মানুষে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় মসজিদ।

তার আগে বেলা ১১টা থেকেই মুসল্লিদের মসজিদে প্রবেশ করতে দেখা যায়। তখনো আযান দিতে প্রায় ঘণ্টার মতো সময় বা‌কি। গুলিস্তানে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম জামে মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করতে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা মসজিদে আসেন। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাদের নিজের সন্তান, নাতিদের নিয়ে আসতে দেখা যায়।

জুমার নামাজে আল্লাহর দরবারে নিজেকে সপে দেন মুসল্লিরা। পরে পরিবার, দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় দোয়ায় অংশ নেন তারা।

নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের সাথে কথা হলে তারা জানান, পবিত্র রমজান মাসের শুক্রবার অনেক ফজিলতময় দিন। বায়তুল মোকাররমে বড় জামাত হয়। একসঙ্গে অনেক মানুষ দোয়া করেন। যে কারণে আশপাশে অনেক বড় মসজিদ থাকলেও তারা এখানে এসেছেন।

এ সময় দেশের উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ মোনাজাত পরিচালিত হয়।

এদিকে নিরাপত্তা জোরদারে ও অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে পল্টন মোড় থেকে বায়তুল মোকাররম পর্যন্ত সতর্ক অবস্থানে দেখা যায় পুলিশ সদস্যদের।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৯.০৩.২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।। 

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেছেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আমরা জিরো টলারেন্সে আছি। যাতে কোনোভাবে মানুষ প্রতারিত না হন। মানুষ চাকরির লোভে বিভিন্নভাবে প্রতারিত হন।’

প্রতিমন্ত্রী রুমানা আরও বলেন, ‘আমরা ডিভাইসের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে বসিয়েছে। আসল পরীক্ষার্থীর বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করেছি।’

আজ শুক্রবার সকালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী এসব কথা বলেন।

এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তৃতীয় ধাপে জুন মাসের মধ্যে ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন হবে। পর্যায়ক্রমে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে উত্তীর্ণরা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কোনো আবেদনকারী যেন প্রতারণার শিকার না হন সেজন্য মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। পরীক্ষার্থীরা সুশৃঙ্খল পরিবেশেই পরীক্ষা দিয়েছেন।’

কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান ও পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

তৃতীয় ধাপে কুমিল্লা জেলায় ৩২ হাজার ১৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে নারী ১৪ হাজার ৭৬৭ জন ও পুরুষ ১৭ হাজার ৪৩২ জন।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৯.০৩.২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।। 

বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়ে এমএলএসএস পদে চাকরির জন্য একটি অসাধু চক্রের সঙ্গে ১২ লাখ টাকায় চুক্তি হয় রাকিবের (ছদ্মনাম)। চক্রের সদস্য নাসিম মাহমুদের বড় ভাই মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন। খুব সহজে তিনি সেখানে চাকরি পাইয়ে দিতে পারবেন। নাসিমের এমন কথায় আশ্বস্ত হয়ে রাকিব তার শর্তে রাজি হন।

শর্ত মোতাবেক ব্লাঙ্ক চেক, ব্লাঙ্ক স্ট্যাম্প, সিভি ও ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম দেন রাকিব। গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে চাকরির ভাইভাও দেন। তখন চুক্তি মোতাবেক আরও দিতে হয় ৫০ শতাংশ টাকা (৬ লাখ)। ভাইভা শেষে রাকিবকে দেওয়া হয় নিয়োগপত্র ও আইডি কার্ড। ওই সময় পরিশোধ করতে হয় বাকি টাকা।

নিয়োগপত্র অনুসারে রাকিব রেলপথ মন্ত্রণালয়ে চাকরিতে যোগ দিতে গিয়ে জানতে পারেন, নিয়োগপত্রটি ভুয়া। পরে নাসিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।
রাকিবের মতো শতাধিক যুবকের সঙ্গে প্রতারণা করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে অসাধু এই চক্র। চক্রটি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখলে সঙ্গে সঙ্গে বনে যেত মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কিংবা কর্মকর্তাদের নিকটাত্মীয়।

ডিবি জানায়, রেলপথ মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, কারা অধিদফতর, বিআরটিসি, বিএডিসি, ব্যাংক, মেট্রোরেল, এয়ারপোর্ট, তিতাস গ্যাস এবং সেনাবাহিনীর সিভিল পদে চাকরির বিজ্ঞাপন বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশের পরই সক্রিয় হয়ে উঠত প্রতারক চক্রটি। সরকারি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে হাতিয়ে নিত বিপুল অর্থ।

এই চক্রের সদস্যরা ৩-৪ ধাপে কাজ করত।প্রথম ধাপে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর মাঠ পর্যায়ের চাকরি প্রার্থীদের আশ্বস্ত করা হতো। দ্বিতীয় ধাপে গ্রাম থেকে চাকরি প্রার্থীদের ঢাকায় এনে ভাইভা নেওয়া হতো। তৃতীয় ধাপে দেওয়া হতো নিয়োগপত্র ও আইডি কার্ড। চতুর্থ ধাপে চাকরিতে যোগদান করতে গিয়ে চাকরি প্রার্থীরা বুঝতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

এই প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ। গ্রেফতাররা হলেন-ফরিদুল ইসলাম (২৯), নাসির চৌধুরী (৪৫), নাসিম মাহমুদ (৪৩) ও জুয়েল রানা (৪৫)। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৪টি মোবাইল ফোন এবং বেশ কয়েকটি ভুয়া নিয়োগপত্র, চেক ও স্ট্যাম্প জব্দ করা হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি প্রধান) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গ্রেফতাররা বেশ কয়েক দিন ধরে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে সাধারণ চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অনুসন্ধানে এই চক্রের বিভিন্ন ধাপ লক্ষ্য করা গেছে।

কোনো চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেই চক্রের মাঠকর্মীরা চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছে গিয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করত। চাকরি প্রার্থী তাদের প্রস্তাবে রাজি হলে তাদের কাছ থেকে ব্লাঙ্ক চেক, ব্লাঙ্ক স্ট্যাম্প এবং সিভি সংগ্রহ করার পাশাপাশি মাঠকর্মীরা অগ্রিম হিসেবে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা নিত।’

তিনি বলেন, ‘মাঠকর্মীরা তাদের কমিশনের টাকা রেখে বাকি টাকা সিভি পর্যায়ের সাব এজেন্টের দিয়ে দিত। এই সাব এজেন্ট টাকা ও সিভি গ্রহণ করে সব চাকরি প্রার্থীকে নির্দিষ্ট দিনে ভাইভার জন্য ঢাকার এজেন্টের কাছে পাঠাত। পরে ঢাকার এজেন্ট আবাসিক হোটেলের রুমে বা সংশ্লিষ্ট দফতরের আশপাশের কোনো চায়ের দোকানে চাকরি প্রার্থীদের ভাইভা পরীক্ষা নিত। ভাইভায় উত্তীর্ণ হয়েছে দেখিয়ে প্রার্থীর কাছ থেকে চুক্তির ৫০ শতাংশ অর্থ গ্রহণ করত।

এরপর আরেক ধাপে চক্রের অন্য সদস্যরা চুক্তির বাকি টাকা গ্রহণ করে প্রার্থীকে নিয়োগপত্র ও আইডি কার্ড দিয়ে নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট অফিসে গিয়ে চাকরিতে যোগ দিতে বলত। চাকরি প্রার্থী নিয়োগপত্রে উল্লিখিত তারিখে সংশ্লিষ্ট দফতরে চাকরিতে যোগ দিতে গিয়ে জানত সে প্রতারক চক্রের প্রতারণার শিকার হয়েছে।’

গ্রেফতারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি প্রধান বলেন, ‘দুই-তিন বছর ধরে প্রতারণা করে আসছিল চক্রটি। তাদের ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চাকরিপ্রত্যাশীদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে প্রতারক চক্র টাকা হাতিয়ে নিত।’

ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম লিডার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল হক বলেন, ‘চক্রটি গত কয়েক বছরে চাকরিপ্রত্যাশী প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০-২০ লাখ টাকা করে নিলেও কাউকে চাকরি দিতে পারেনি। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৯.০৩.২৪

।। অধ্যক্ষ মো. আলমগীর হোসেন খাঁন।।

পবিত্র মাহে রমজান বছরের প্রথম দিকে তাই এতদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একাধারে ছুটি শিক্ষার্থীরা পাঠ ভুলে যাবে, শিক্ষক শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা শিক্ষা পরিবেশ থেকে দূরে সরে যাবে ।

আবার এ সময়টা শিক্ষা বর্ষের প্রথম দিকে তাই শ্রদ্ধেয় শিক্ষামন্ত্রী সহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় সপ্তাহে এক দিন ছুটি কমানোর চিন্তা ভাবনা করছে । পবিত্র রমজান মাসের ৩০দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা সম্ভব না ।

তারপর ঈদের ছুটি দিতেই হবে । হয়তো শিক্ষার মানোন্নয়নের স্বার্থে ১০/১২ দিন খোলা থাকতে পারে । যেমন এ বছর ১৫ দিন খোলা রেখেছেন । আর শনিবার ছুটি বাতিল করলে বছরে ৫২ দিন ছুটি বাতিল হয় ।

তাছাড়া সারাদেশের সরকারি কর্মকর্তা –কর্মচারিদের সকল অফিস আদালতের সাপ্তাহিক ছুটি দুদিনের । শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দুদিনের ছুটি নিয়ে এতো ভাবনা কেন?

বেসরকারি শিক্ষকরা আছেন অনেক বেতন বৈষম্যে, উৎসব ভাতা ২৫%, চিকিৎসা ভাতা, বাড়ি ভাড়া নাম মাত্র। এসব নিয়ে ভাবনার কোনো নেতা বা দেশপ্রেমিক পাওয়া যায়না ।

প্রধানমন্ত্রীকে বুঝানোর মতো কোন নেতা পাওয়া যায় না। অথচ সাপ্তাহিক ছুটি নিয়া বিভ্রান্তির মধ্যে সকল শিক্ষক-কর্মচারিদের রাখছে যাতে অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নামার সময় না পায় ।

আগে শিক্ষা জাতীয়করনের পথে হাটতে হবে দেশ । নতুন কারিকুলাম শুরুই হয়েছে দুদিনের সাপ্তাহিক ছুটি নিয়ে । শিক্ষকদের লজ্জা থেকে বাঁচাতে উৎসব ভাতা পূর্ণাঙ্গ হতে হবে ।

১০/১২ দিন রমজানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে ৫২দিন সাপ্তাহিক ছুটি কমানোর ভাবনা দূরে সরে যাবার জন্য মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ করছি ।

সকল প্রাথমিক-মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সাপ্তাহিক ছুট শুক্রবার ও শনিবার থাকবে এটাই শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের প্রত্যাশা ।
শিক্ষা বিপ্লবের শুভেচ্ছা ।

লেখক-
অধ্যক্ষ মোঃ আলমগীর হোসেন খান
মিরুখালী স্কুল অ্যান্ড কলেজ
মঠবাড়িয়া, পিরোজপুর ।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৯.০৩.২৪

অধ্যাপক মো. আলী এরশাদ হোসেন আজাদ।।

“জীবনে যাদের হররোজ রোজা ক্ষুধায় আসে না নিদ
মুমূর্ষ সেই কৃষকের ঘরে এসেছে কি আজ ঈদ”?
কাজী নজরুল ইসলাম
জাতীয় কবির এমন অভিব্যক্তি আজো একজন শিক্ষকের জীবনকে চরমভাবে বিদ্রæপ করে। রূঢ় সত্য হলো, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র বেতন বেশি অথচ শিক্ষকের বেতন ও সুযোগ সুবিধা কম, অন্যদিকে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র বেতন কম অথচ শিক্ষকের বেতন ও সুযোগ সুবিধা বেশি!

সরকারি বেতনস্কেল অনুযায়ী স্নাতক পাস একজন এমপিওভুক্ত শিক্ষকের প্রারম্ভিক বেতন ১২৫০০/=, তিনি এরই ২৫% (সিকি ভাগ) উৎসবভাতা হিসেবে পান ৩১২৫/=! এবার আমরা যদি তার ঈদ বাজেট দেখি তবে, উন্নয়নের মহাসড়কে তিনি যে কতটা বেমানান তা বলা বাহুল্য।

বেসরকারি শিক্ষকের ঈদ বাজেট (পরিবারের সদস্য সংখ্যা ০৬ জন)

আয় ব্যয় মন্তব্য

৩১২৫/= মায়ের শাড়ি ১০০০/= কান্না হতাশার নিরব হাহাকার
বাবার পাঞ্জাবি ৮০০/=
বউয়ের আবদার ১০০০/=
বা”চাদের বায়না ১২০০/=
কাজের বুয়ার দাবি ৭০০/=
ঈদের দিনের খাবার ১২০০/=
ফিতরার টাকা ৬৯০/=
সর্বমোট- ৬৫৯০/=
ভাবতে অবাক লাগে বেসরকারি শিক্ষকদের হাহাকার কেঊ শোনেন না। এখানে যদিও একটি কাল্পনিক বাজেট দেওয়া হয়েছে, বাস্তবে একজন বেসরকারি শিক্ষকের জীবনে ঈদ এর চেয়েও বিবর্ণ ও হতাশার। বিশেষতঃ যারা নন-এমপিও তাদের অবস্থা ভাষায় প্রকাশ করবার মতো নয়।

আশা ছিল, এবারের ঈদের আগেই বেসরকারি শিক্ষকদের ব্যাপার সুস্পষ্ট ঘোষণা থাকবে। অথচ এ ব্যাপারে আমরা হতাশ হয়েছি। যদিও মাঠে-ময়দানে সরকারের অনুগত ও সুবিধাভোগী শিক্ষক সংগঠনগুলো আশার বাণী শোনা”েছন। কিš‘ ভরসা কোথায়? আমরা জানি না।

একটি ‘জাতীয়লজ্জা’ এমপিওভুক্ত শিক্ষকগণের উৎসবভাতা! দেশের প্রায় শতভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেসরকারি। শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দের প্রারম্ভিক বেতনের ১০০% রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হলেও এমপিওভুক্ত শিক্ষকবৃন্দই বিশ্বের একমাত্র পেশাজীবী যারা ২৫% উৎসবভাতা পান! এমপিওভুক্তদের সর্বো”চ ও সর্বনিম্ন পদের সবাই একই পরিমাণ ১০০০/= বাড়িভাড়া পান। তারা পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল ও উৎসবভাতা, বৈশাখীভাতা, সে”ছা অবসর, বদলি সুবিধাসহ অসংখ্য বঞ্চনার শিকার।

১৯৬৬ প্যারিস সন্মেলনে ১৩ টি অধ্যায় ও ১৪৬ টি ধারা-উপধারায় শিক্ষকের মর্যাদা ও অধিকারের জন্য প্রণীত সুপারিশে শিক্ষকের চিকিৎসা- স্বাস্থ্যসেবা, ছুটি বেতন-ভাতা ও মর্যাদার ক্ষেত্রে বলা আছে (ক) সম্মানজনক পারিতোষিক নিশ্চিতকরণ (খ) যুক্তি সংগত জীবনমান বিধানকল্পে সুবিধাদি নিশ্চিতকরণ (গ) স্কেল অনুযায়ী নিয়মিত বেতন-ভাতাদি প্রাপ্তির নিশ্চয়তা (ঘ) জীবনধারণের ব্যয়বৃদ্ধির সঙ্গে বেতন কাঠামো পূণঃবিন্যাস ও বর্ধিতবেতন প্রাপ্তির নিশ্চয়তা ইত্যাদি।
অথচ ‘মানুষ গড়ার কারিগর’দের জীবনমান অনুন্নত থাকলে, কারিগরকে অভূক্ত, অবহেলিত রাখলে জাতি হয়ে ওঠবে অবনমিত ও নিন্মগামী।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের মহাসড়কে দারুণ অনগ্রসর ও করুণ পেশাজীবীর অখ্যান ‘বেসরকারি শিক্ষক’। ঐসব মানুষদের আকাক্সক্ষা ও অপেক্ষা অনন্ত হাহাকার হয়ে শূন্যে মেলায়!

শিক্ষা মানুষের মৌলিকাধিকার। ‘শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড’। জাতিকে খাড়া-সোঝা রাখার দায়িত্ব পালন করেন ‘মানুষ গড়ার কারিগর’ অর্থাৎ ‘শিক্ষক’। অথচ দেশের অভিন্ন সিলেবাসে পাঠদানকারী প্রায় শতভাগ বেসরকারি শিক্ষক নানান বঞ্চনা শিকার। আছে নন-এমপিওদের কষ্টের নিরব চিৎকার! এ অবস্থার  কারণেই সব চেষ্টা, সব উদ্দোগ পায় না প্রকৃত গতি।
পরিশেষে আশরাফ সিদ্দিকীর ‘তালেব মাস্টার’ কবিতার ছন্দে আমার নিবেদন:

“অনেক বয়স হয়ে গিয়েছে আমার
.......সুদীর্ঘ দিন ধরে বহু ঝঞ্ঝা ঝড়
বয়ে গেছে। ভুলেছি।
অক্লান্তভাবেই জ্ঞানের প্রদীপ জ্বেলেছি।
পানির মত বছর কেটে গেল
কত ছাত্র গেল, এল.......!

কাজেই, এক ঘোষণায় সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণ দরকার। পাঁচ লাখের বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী ও তাদের পরিবার এবং সর্বস্তরের নন-এমপিও শিক্ষক কর্মচারীগণ মাদার অব হিউমিনিটি খেতাবধন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে আছেন। হয়তো সুরঙ্গমুখে আলোর ঝিলক দেখা যাবে সহসাই!

লেখক: বিভাগীয় প্রধান ইসলামিক স্টাডিজ কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ কাপাসিয়া গাজীপুর

শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৯.০৩.২৪

ঢাকাঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নবনির্মিত ফজিলাতুন্নেসা হলের একটি কক্ষে সিগারেট থেকে আগুন লাগার ঘটনায় এক শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির (ডিসিপ্লিনারি বোর্ড)। মোসাররাত লামিয়া নামের ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যায় উপাচার্য অধ্যাপক নুরল আলমের সভাপতিত্বে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বহিষ্কারের বিষয়টি গনমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ডিসিপ্লিনারি বোর্ডের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক প্রক্টর অধ্যাপক ড. আলমগীর কবির।

তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বিবেচনা করে এই শাস্তি সুপারিশ করা হয়েছে।

এর আগে চলতি বছরের ০৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নব নির্মিত ফজিলাতুন্নেছা হলের ৮১০নম্বর কক্ষে সিগারেট থেকে এ আগুনের সূত্রপাত হয়।

শিক্ষা বার্তা ডট কমে/এএইচএম/২৯/০৩/২০২৪

যশোরঃ জেলার চৌগাছায় এক মাদরাসা শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে বুধবার (২৭ মার্চ) রাতে চৌগাছার কয়ারপাড়া হাফেজিয়া মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।

ভিডিওতে দেখা যায়, শিশুটিকে মাদরাসা শিক্ষক একের পর এক বেত্রাঘাত করছেন। এমনকি লাথিও মারছেন। এ সময় শিশুটি বারবার শিক্ষকের পা জড়িয়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করে।

ভুক্তভোগী ১৩ বছর বয়সী সোনানুর রহমান সাজিদ জানান, মোবাইল ফোনে এসএমএস দেয়া নিয়ে তার ওপর ক্ষিপ্ত হন কয়রাপাড়া হাফিজিয়া মাদরাসার শিক্ষক আখতারুজ্জামান। ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি তাকে বেধড়ক পেটান।

এদিকে, নির্যাতনের এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভ জানিয়ে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।সাজিদের বাবা আলী আকবর বলেন, নির্মমভাবে নির্যাতনের কারনে ছেলের শরীরের বেশ কয়েক জায়গায় ক্ষত হয়েছে।

এ ব্যাপারে চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, নির্যাতিত শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে চৌগাছা থানায় মামলা করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কমে/এএইচএম/২৯/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, কুমিল্লাঃ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেছেন, আগামী জুন মাসের মধ্যে ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন হবে। পর্যায়ক্রমে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে উত্তীর্ণরা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন।

তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে আজ শুক্রবার তিনি এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোন আবেদনকারী যেন প্রতারণার শিকার না হয় সেজন্য মন্ত্রণালয় সর্বোচ্চ সতর্ক আছে। পরীক্ষার্থীরা সবাই সুশৃঙ্খল পরিবেশেই পরীক্ষা দিচ্ছেন।

এসময় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান ও পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় ধাপে কুমিল্লা জেলায় ৩২ হাজার ১৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে নারী ১৪ হাজার ৭৬৭ জন এবং পুরুষ ১৭ হাজার ৪৩২ জন।

শিক্ষা বার্তা ডট কমে/এএইচএম/২৯/০৩/২০২৪

শিক্ষাবার্তা পত্রিকায় গত ২২ মার্চ ‘ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে সাময়িক বরখাস্ত নিয়ে অচলাবস্থা' শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের ব্যাখ্যা দিয়েছেন রায়হান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রহিমা আফরোজ। তিনি দাবি করেছেন, অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করতে গেলে রায়হান স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বড়ির সাবেক সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান ব্যক্তি স্বার্থে তার দলবল নিয়ে বাধা দেন এবং অবরুদ্ধ করে রাখার চেষ্টা করেন। লালবাগ থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেন ।

পঞ্চগড়ঃ জেলার মকবুলার রহমান সরকারি কলেজে শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষকের সংখ্যা অনেক কম। এই কলেজে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর মিলিয়ে ৭ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করলেও তাঁদের পাঠদানের জন্য আছেন মাত্র ৩৫ জন শিক্ষক। খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েও বিভিন্ন বিভাগের পাঠ্যক্রম শেষ করা যাচ্ছে না। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কলেজের বেশ কয়েকটি বিষয়ে তিনজন বা এর বেশি শিক্ষক থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র একজন করে। ফলে একজন শিক্ষক পাঠদান করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন।

কলেজে উচ্চমাধ্যমিকে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে ১ হাজার ১০০ শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক আছেন মাত্র একজন। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি এবং স্নাতক ৩২০ শিক্ষার্থীর পাঠদানের দায়িত্বে আছেন একজন শিক্ষক।

আইসিটির শিক্ষক প্রভাষক মো. রাহাত আলম প্রধান বলেন, ১ হাজার ১০০ শিক্ষার্থীকে পাঠদান করতে গিয়ে তাঁর সমস্যা হচ্ছে। মাঝেমধ্যে অতিথি শিক্ষকের (খণ্ডকালীন শিক্ষক) সহায়তায় চালিয়ে নেওয়া হয়।

ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক মো. ছায়েদুর রহমান প্রধান বলেন, উচ্চমাধ্যমিকের ১২০ জন আর স্নাতকের (পাস) ২০০ জন শিক্ষার্থীকে একাই পাঠদান করতে হয় তাঁকে। প্রায় সাত বছর ধরে তিনি একাই এভাবে পাঠদান করছেন। এর মধ্যে প্রায় দুই বছর আগে একজন শিক্ষকের পদায়ন হলেও তিনি যোগদান করার অগেই বদলি হয়ে চলে যান। মাঝেমধ্যে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান চালানো হয় বলে জানান তিনি।

রসায়ন বিষয়ে উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতকে (পাস) মোট ৫০০ জন শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছেন একজন শিক্ষক। রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. পশিবুল হক বলেন, শিক্ষার্থী অনুযায়ী রসায়ন বিভাগে পাঠদানের জন্য আরও শিক্ষক প্রয়োজন। একাই ৫০০ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করতে অনেক সময় হিমশিম খেতে হচ্ছে।

কলেজের অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন প্রধান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে বেশ কয়েকবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু সেখান থেকে শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ না নেওয়ায় শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে নিতে খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দিতে হয়েছে। তবে খণ্ডকালীন শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কলেজের পুরোনো প্রশাসনিক ভবনেই চালানো হয় দাপ্তরিক কার্যক্রম। শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার পাশাপাশি কলেজে দ্রুত একটি প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করাও জরুরি হয়ে পড়েছে।

কলেজের কার্যালয় ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৬৫ সালে জেলা শহরের ডোকরোপাড়া এলাকায় ৯ দশমিক ১৬ একর জমিতে গড়ে ওঠে মকবুলার রহমান কলেজ। এরপর ১৯৮৩ সালের ১ মে কলেজটি জাতীয়করণ হয়। ১৯৭০ সালে স্নাতক (পাস কোর্স) এবং ১৯৯৮-৯৯ শিক্ষাবর্ষে ৬টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালু হয়। স্নাতকোত্তর চালু হয় ২০১৩ সালে। কলেজে বর্তমানে শিক্ষার্থী ৭ হাজার ১৩০ জন। এর মধ্যে উচ্চমাধ্যমিকে ১ হাজার ১০০ জন, স্নাতক ৮০০ জন, ৯টি বিষয়ের স্নাতক (সম্মান) কোর্সে ৪ হাজার ৬০০ জন এবং ৬টি বিষয়ের স্নাতকোত্তরে ৬৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। কলেজে ৮০ আসনের ১টি ছাত্র হোস্টেল ও ১০০ আসনের একটি ছাত্রী হোস্টেল আছে। কলেজের পুরোনো প্রশাসনিক ভবনে একটি গ্রন্থাগার আছে, তবে গ্রন্থাগারিক না থাকায় সেখানে কার্যক্রম নেই বললেই চলে।

স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুসনাদ আহম্মেদ মান্নান বলেন, ‘প্রথম বর্ষে যেভাবে ক্লাস হয়, সেভাবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষে ক্লাস হয়। চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়ায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। আমাদের যে কয়েকজন শিক্ষক আছেন, তাঁদেরকেই উচ্চমাধ্যমিক, ডিগ্রি, অনার্স—সব জায়গায় সামাল দিতে হয়। কলেজে আরও শিক্ষক হলে আমরা শিক্ষার্থীরা উপকৃত হতাম।’

বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. এহতেশামুল হক বলেন, ‘থাকায় আমরা যাঁরা কর্মরত আছি, তাঁদেরকেই উচ্চমাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত পাঠদান করতে হয়। এতে পাঠদানে হিমশিম খেতে হয়।’

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৯/০৩/২০২৪

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram