শনিবার, ৩০শে মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

চরম বৈষম্যের শিকার বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ১৩তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আড়াই হাজারের বেশি নিবন্ধনধারী। তাদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় থাকলেও গত ১১ মাসে কোনও প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করেনি এনটিআরসিএ।

চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, রায় বাস্তবায়নে এনটিআরসিএ চরম উদাসীনতা দেখাচ্ছে। বিগত ১১ মাস ধরে আমরা আপিল ডিভিশনের রায়কে সম্মান জানিয়ে সেটি বাস্তবায়নের জন্য বারবার আহ্বান করেছি। রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ সুপারিশের অনুরোধ জানিয়েছি, আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু আজ অবধি কোনও পদক্ষেপ নেয়নি এনটিআরসিএ। আর সে কারণে এই আড়াই হাজারের বেশি প্রার্থীদের মধ্যে অনেকে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন করে নিয়োগ নিয়েছেন। আর আমরা এখনও নিয়োগ পাইনি, হতাশার মধ্যে দিনযাপন করছি।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের পরও ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা নিয়োগের সুপারিশ পাননি কেন জানতে চাইলে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান মো. সাইফুল্লাহিল আজম বলেন, ‘আপিল বিভাগের রায় দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। রায় না দেখে কথা বলতে পারবো না।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালের বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা অধিকতর সংশোধন করে ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবরের নতুন সংশোধিত গেজেট এবং পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর নতুন পরিপত্র জারি করা হয়। পরিপত্র অনুযায়ী, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের উদ্দেশ্যে শিক্ষক বাছাই এবং শিক্ষক সুপারিশের ক্ষমতা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির কাছ থেকে প্রথমবার এনটিআরসিএ পায়।

সংশোধিত গেজেট এবং নতুন পরিপত্র অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। বিজ্ঞপ্তির আলোকে সর্বমোট ৫ লাখ ২৭ হাজার ৭৫৪ জন পরীক্ষার্থী ১৩তম শিক্ষার্থী নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নেয়। ওই পরীক্ষায় ২০১৭ সালের ৪ জুন সর্বমোট ১৭ হাজার ২৫৪ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়। শূন্য পদের বিপরীতে সরাসরি নিয়োগের জন্য ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের নিয়োগের জন্য নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু নিবন্ধনধারীদের নিয়োগ সুপারিশ না করায় উত্তীর্ণ ১৭ হাজার ২৫৪ জন নিবন্ধন প্রার্থীর মধ্যে ২ হাজার ২০৭ জন ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। হাইকোর্টের রায়ে প্রার্থীদের নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয় ২০২২ সালের ১ জুন। ওই রায়ের ওপর এনটিআরসিএ আপিল করলে ২০২৩ সালের ২ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়নে এনটিআরসিএ ২০২১ সালের ৩১ মার্চ তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এবং ওই বিজ্ঞপ্তিতে শূন্য পদ সংরক্ষণ করে ২ হাজার ২০৭ জনের জন্য এবং তাদের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি নিয়োগ সুপারিশ করে। তবে পদ না থাকার অজুহাত দেখিয়ে ৬৫ জন প্রার্থীকে আজও নিয়োগের সুপারিশ করেনি এনটিআরসিএ।

এদিকে ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নিয়োগের সুপারিশ পাওয়া ২ হাজার ২০৭ জনের চেয়ে বেশি নম্বর পাওয়া ২ হাজার ৫০০ জন নতুন করে রিট করেন হাইকোর্ট বিভাগে। রিটে তারা সরাসরি নিয়োগের দাবি জানান।

হাইকোর্ট বিভাগ শুনানি শেষে ২০২২ সালের ১ জুন ১৩তম ব্যাচের ২ হাজার ৫০০ জনের রিটের শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করেন। রায়ের দিন থেকে পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে নিয়োগ সুপারিশের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিপক্ষে এনটিআরসিএ লিভ টু আপিল দায়ের করে। আপিল শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ২ এপ্রিল আপিল বিভাগ রিটকারীদের পক্ষে থাকা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। ফলে হাইকোর্টর রায় অনুযায়ী আপিলের রায়ের পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে নিয়োগ সুপারিশ করার কথা, কিন্তু গত ১১ মাসেও নিয়োগের সুপারিশ করেনি এনটিআরসিএ।

শুধু তাই নয়, রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রার্থীদের পক্ষে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যানকে লিগ্যাল নোটিশ করা হলেও তার জবাব দেয়নি এনটিআরসিএ। এসব কারণে চাকরির সুপারিশ বঞ্চিত এসব প্রার্থীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।

১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সবুজ বণিকসহ প্রার্থীরা আসন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পদ সংরক্ষণ করে নিয়োগ দেওয়ার দাবি করেছেন এনটিআরসিএ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

আত্মহত্যা বা আত্মহনন হচ্ছে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের জীবন বিসর্জন দেওয়া বা স্বেচ্ছায় নিজের প্রাণনাশের প্রক্রিয়া বিশেষ। প্রতিবছর প্রায় দশ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে

প্রতিবছর সারা বিশ্বে যেসব কারণে মানুষের মৃত্যু ঘটে তার মধ্যে আত্মহত্যা ত্রয়োদশতম প্রধান কারণ। বর্তমানে বাংলাদেশে এর প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রভাব বেশি দেখা যাচ্ছে। সমাজে আমরা কীভাবে আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে পারি এ বিষয়ে কয়েকজন তরুণ শিক্ষার্থীর মতামত তুলে ধরছেন শফিক রিয়ান।

মানুষ বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যা করে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে অধিকাংশ আত্মহত্যার কারণ হতাশা ও অবসাদ। একজন হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তি চেষ্টা করে সবার থেকে পালিয়ে বাঁচতে। এই পালানোর মাধ্যম হিসেবে আত্মহত্যা বেছে নেওয়াটা আমার মতে বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। আত্মহত্যার চিন্তা-ভাবনা থেকে মুক্তি পেতে এবং আত্মহত্যা প্রতিরোধে আমাদের কিছু করণীয় রয়েছে। বন্ধুবান্ধব, পরিবারের সদস্য, শিক্ষক, সহকর্মী বা বিশ্বস্ত ব্যক্তির সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন। একজন মনোবিজ্ঞানী, মনোচিকিৎসক বা মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারের সঙ্গে পরামর্শ করুন। একটি জার্নাল লেখা আপনার চিন্তা-ভাবনা এবং অনুভূতিগুলোকে স্পষ্ট করতে সাহায্য করতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা আপনার মানসিক অবস্থার উন্নতি করতে পারে। শখের কাজ, ঘুরতে যাওয়া, গান শোনা, বই পড়া, প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানো ইত্যাদি আপনার মেজাজ উন্নত করতে পারে। আত্মহত্যার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তির প্রতি সহানুভূতিশীল হোন, তাদের অনুভূতিগুলোকে গুরুত্ব দিন।

আমরা পৃথিবীতে মানুষ হিসেবে জন্ম নিয়েছি এটা সবচেয়ে বড় একটা সুযোগ। এত প্রাণীর মাঝে কেবল মানুষকেই উন্নত মস্তিষ্ক, বিবেক ও চিন্তা দেওয়া হয়েছে। দুঃখ, বেদনা, হাসি, কান্না এই অনুভূতিগুলো নিয়েই জীবন। প্রকৃতি সব মানুষকে একই আসমান একই জমিন দিয়েছেন কিন্তু কেউ জীবনকে কাজে লাগাতে পারে কেউ হেরে যায় জীবনের কাছে। হেরে যাওয়া মানেই জীবন শেষ নয়। মানুষ যখন জীবনের সব আশা হারিয়ে ফেলে তখন সে আত্মহত্যার মতো ভয়ানক সিদ্ধান্তে পৌঁছায়। এই মানুষগুলোর দরকার সামাজিক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমর্থন। জীবন খুব মূল্যবান, বেঁচে থাকাই সবচেয়ে বড় নেয়ামত। মুমূর্ষু মানুষের কাছে গেলে আমরা বুঝতে পারি নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও এক মুহূর্ত বেশি বাঁচার জন্য মানুষের আকুতি কতখানি। আত্মহত্যা প্রতিকারের লক্ষ্যে শিশুদের বিকাশের সময় তাদের এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যেন তারা সফলতার মতো ব্যর্থতাকেও মেনে নিতে পারে। কারও মধ্যে যে কোনো ধরনের মানসিক সমস্যা বা আত্মহত্যার ইঙ্গিত পেলে দ্রুত মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। বিষণ্নতা, মাদকাসক্তি, ব্যক্তিত্বের বিকার, সিজোফ্রেনিয়াসহ সব মানসিক রোগ শনাক্ত ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

২০২৩ সালের পরিসংখ্যান

আঁচল ফাউন্ডেশন তথ্য অনুযায়ী,

২০২৩ সালে যে ৫১৩ জন আত্মহত্যা করেছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন ২২৭ জন স্কুলশিক্ষার্থী, ১৪০ জন কলেজ শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ৯৮ জন

এবং ৪৮ জন মাদরাসা শিক্ষার্থী।

তবে ২০২২ সালে সংখ্যা ছিল ৫৩২

নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি

আত্মহননকারীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে

ঢাকা বিভাগ। এ বিভাগের অন্তত ১৪৯ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এরপর চট্টগ্রাম বিভাগের ৮৯, রাজশাহী বিভাগের ৭৭, খুলনা বিভাগের ৬৪ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। তালিকার পঞ্চম স্থানে যৌথভাবে রয়েছে বরিশাল ও রংপুর বিভাগের নাম। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৩ জন। ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৬ জন এবং সিলেট বিভাগের ১২ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

বিসিএস ক্যাডার হওয়ায় স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেলো। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পাঠ চুকিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করার স্বপ্নপূরণ হল না আল আমিনের। মর্মান্তিক এক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কেড়ে নিল তার প্রাণ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন আল আমিন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

আল-আমিনের বাড়ি মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলার কর্ণপাড়া গ্রামে। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের পরিবারে একমাত্র আল আমিনেরই সুযোগ হয়েছিল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতক পরীক্ষা শেষ করে ছুটি কাটাতে বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ইংরেজি বিভাগের স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা শেষে ছুটি কাটাতে বাড়িতে গিয়েছিলেন আল আমিন। গত মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) বিকেল চারটার দিকে বড় ভাই নয়ন তালুকদারের মোটরসাইকেল করে এক আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছিলেন আল আমিন। বড় ভাইয়ের নতুন বাইকে কিছুদিন আগেই বাইক চালানো শিখেছিলেন। আত্মীয়ের বাসায় ঈদ উপহার নিয়ে যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খুঁটির সাথে ধাক্কা খেয়ে আহত হন আল-আমিন।

পরে ওইদিনই সন্ধ্যার দিকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। পরে অবস্থার অবনতি দেখে রাত ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে রাত ২ টা থেকে সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত অপারেশন শেষে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। দুইদিন পর আজ শুক্রবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

আল আমিনের বড় ভাই নয়ন তালুকদারের সাথে কথা বলে জানা যায়, মোটরসাইকেলে করে আত্মীয়ের বাসায় যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে যান আল আমিন। হাসপাতালে নেওয়ার পর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ দেখে ওই দিনই অস্ত্রোপচার করা হয়। দুই দিন সেখানে থাকার পর আজ ভোরের দিকে মারা যান তিনি। বিকেলে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।

ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বড় ভাই নয়ন তালুকদার  বলেন, আমাদের পরিবার ও পুরো গ্রামের আইকন ছিল আল আমিন। তার স্বপ্ন ছিল পড়াশুনা শেষ করে বিসিএস ক্যাডার হবে। কয়দিন আগেই অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা শেষে ছুটিতে বাড়িতে এসেছে সে। তার আকস্মিক মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত।

আল আমিনের বন্ধু রফিকুল ইসলাম  বলেন, আল আমিন অমায়িক একটি ছেলে ছিল। প্রথম বর্ষের শুরুর দিকে শাহজালাল হলে এবং শেষের দিকে আব্দুর রব হলে ছিল। বিভাগের সবার সাথে সে মিলেমিশে চলতো। রাজনীতির সাথে ওভাবে জড়িত ছিল না। তার এমন দুর্ঘটনায় আমরা সবাই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছি।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

চৌগাছা কয়রাপাড়া হাফিজিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান সাজিদকে (১৩) পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ ওঠেছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে। গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ওই মাদরাসার সিসিটিভি ফুটেজে নির্যাতনের ভিডিও দেখে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত শিক্ষক আক্তারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার এবং পরে যশোর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে গিয়ে জানালে ছেলের বাবা চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। সোহানুর চৌগাছা সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ কয়রাপাড়া হাফেজিয়া মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র এবং লস্কারপুর গ্রামের আকবর আলীর ছেলে। আক্তারুজ্জামান উপজেলার স্বরূপদাহ ইউনিয়নের গয়ড়া গ্রামের বাসিন্দা।

সিসিটিভি ফুটেজের ভিডিওতে দেখা যায়, শিশুটিকে মাদরাসা শিক্ষক একের পর এক বেত্রাঘাত করছেন। এমনকি লাথিও মারছেন। এ সময় শিশুটি বারবার শিক্ষকের পা জড়িয়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করে। তবুও ক্ষ্যান্ত হননি শিক্ষক। এদিকে শিক্ষককে গ্রেপ্তারের পর ৩১ সেকেন্ডের ও ১মিনিটের বেশি দুটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

সোহানুর রহমান সাজিদ জানান, মোবাইল ফোনে এসএমএস দেওয়া নিয়ে তার ওপর ক্ষিপ্ত হন কয়রাপাড়া হাফিজিয়া মাদরাসার শিক্ষক আখতারুজ্জামান।

এতে তাকে বেধড়ক পেটান তিনি। পা ধরে বারবার ক্ষমা চাইলে বুক বরাবর লাথিও মারেন। সাজিদের বাবা আলী আকবর বলেন, ছেলেকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছেন শিক্ষক আখতারুজ্জামান। এ ব্যাপারে চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে লিখিত পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে জালিয়াতি রোধে বুয়েট কর্তৃক উদ্ভাবিত ডিভাইস সনাক্তকরণ সিস্টেমের কার্যকর প্রয়োগের ফলে অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে।

শুক্রবার তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় এ চিত্র ফুটে উঠেছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানান, প্রথম ধাপের পরীক্ষায় কিছু ক্ষেত্রে অসদুপায় অবলম্বনের চেষ্টা নজরে আসায় মন্ত্রণালয় এ ধরনের অপপ্রয়াস রোধকল্পে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ফলে ২য় ধাপের পরীক্ষায় এ ধরনের অভিযোগ খুব স্বল্প পরিমাণে এসেছে।

তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় এ ধরনের অভিযোগ যাতে না ওঠে সে জন্য কার্যকর পন্থা খুঁজে বের করতে বুয়েটের আইআইসিটি বিভাগের অধ্যাপক এস এম লুৎফুল কবিরকে দায়িত্ব প্রদান দেয়া হয়। বুয়েট ইনোভেশন টিম স্বল্পসময়ে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে অসদুপায় অবলম্বন সনাক্তকরণে সহজ ও কার্যকর সিস্টেম উদ্ভাবন করে। এতে মন্ত্রণালয় আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে।
আজকের লিখিত পরীক্ষায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৫ জেলায় এ সিস্টেমের সহজ ও কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা সচিব বলেন, সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এ ধরনের সিস্টেম চালু করা গেলে ডিভাইসমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব হবে। তখন কেউ পরীক্ষা নিয়ে কোন অভিযোগ তোলার সুযোগ পাবে না।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সহকারী শিক্ষক নিয়োগে পরীক্ষা-২০২৩ এর ৩য় ও শেষ ধাপের লিখিত পরীক্ষা (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ-০৩ টি পার্বত্য জেলা ব্যতীত) অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৪৯ হাজার ২ শত ৯৩ জন।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

ভরদুপুরের কড়া রোদ। গ্রীষ্মের গরমে হাঁসফাঁস দশা। এসি ছাড়া টিকে থাকাই দায়। কিন্তু এমন এক স্কুল আছে, যেখানে বাইরে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হোক কিংবা ৫ ডিগ্রি—ভেতরের তাপমাত্রা সব সময়ই এক। সেটাও কোনো প্রকার এয়ার কন্ডিশন (এসি) ছাড়া। বুরকিনা ফাসোর গানদো প্রাইমারি স্কুল এমনই এক স্কুল, যেখানে এসি ছাড়াই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

স্থপতিদের জন্য পশ্চিম আফ্রিকার বুরকিনা ফাসো দেশটা একটা চ্যালেঞ্জই বটে। সীমিত বাজেটে বৈরী আবহাওয়ায় পানি-বিদ্যুৎ-উপকরণের সংকট মাথায় নিয়ে কোনো কাজ হাতে নেওয়া চাট্টিখানি কথা না। শীতকালে যেখানে তাপমাত্রা নেমে যায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, গ্রীষ্মকালে সেখানের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি। এ আবহাওয়ার মাঝেও কোনো ধরনের এয়ার কন্ডিশনার ছাড়াই তৈরি হয়েছে এক স্কুল। আবহাওয়া যেমনই হোক, স্কুলের তাপমাত্রা সেখানে থাকে একই।

স্থপতি দিবেদো ফ্রান্সিস কেরের ওপর এমনই একটা স্কুল তৈরির দায়িত্ব পড়েছিল। গানদোর ছোট্ট গ্রামে কেরের বেরে ওঠা। যেখানে না আছে বিদ্যুৎ, না আছে খাওয়ার পানির ব্যবস্থা। মাতৃভূমি বুরকিনা ফাসোর বৈরী আবহাওয়া আর সংগ্রাম নিজ চোখে দেখে বড় হয়েছেন তিনি। তাপমাত্রার হুটহাট পরিবর্তন তাঁর খুব ভালোভাবেই জানা আছে। গ্রামের প্রথম সন্তান হিসেবে কলেজে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু কলেজে ভর্তি হওয়ার মতো আর্থিক সঙ্গতি ছিল না। গ্রামের অনেকে মিলে টাকা তুলে কেরেকে কলেজে ভর্তি করেছিলেন। সেখান থেকে বৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য চলে গেলেন জার্মানি।

জার্মানির টেকনিক্যাল স্কুল অব বার্লিনে ভর্তি হন কেরে। সেখানে তাঁর শেষ বর্ষের প্রজেক্ট ছিল নিজের গ্রামের জন্য একটি স্কুল তৈরি করা। যে গ্রাম তাঁকে এত কিছু দিয়েছে, সেই গ্রামের শিশুদের জন্য স্কুল তৈরি করবেন, এর থেকে আনন্দের আর কীই–বা হতে পারে? কিন্তু স্কুল তৈরি করতে এসেই ধরতে পারলেন সমস্যাটি।

আবহাওয়া ও ঋতু পরিবর্তনের কারণে স্কুলের ভেতরে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা বজায় রাখা বেশ কঠিন। গ্রীষ্মকালে শিক্ষার্থীদের জন্য যেমন প্রয়োজন পড়বে এয়ার কন্ডিশনারের, তেমনই শীতকালে দরকার হবে হিটার। বুরকিনা ফাসোর এক অজপাড়াগাঁ, যেখানে খাবারের পানির সুব্যবস্থাই ঠিকমতো গড়ে ওঠেনি, সেখানে এসি আর হিটারের ব্যবস্থা করবে কে?

স্কুল তৈরির জন্য কেরে বেছে নিয়েছিলেন সবচেয়ে সহজলভ্য উপকরণ—মাটি। এক সাক্ষাৎকারে কেরে বলেন, ‘প্রথম প্রথম আমাকে সবাই প্রশ্ন করছিল, জার্মানিতে কাচের বিল্ডিং নিয়ে পড়াশোনা করে কেন আমি মাটি দিয়ে স্কুল বানাচ্ছি? সবাইকে বোঝাতে হয়েছে, কেন মাটি দিয়ে তৈরি করা বিল্ডিং এই পরিবেশের জন্য মানানসই।’

স্কুলের মাঝে থেকে দেয়াল পুরোটাই বানানো হয়েছে মাটি দিয়ে। লাল ইট দিয়ে ভবন তোলা হলেও টেকসই, মজবুত করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে কংক্রিট। ভবনটি মাটির হলেও স্কুলের ছাদের জন্য কেরের পছন্দ ছিল মেটাল। ২০০০ সালে যখন প্রথম স্কুলের কাজ শুরু হয়, গ্রামের অনেকেই এগিয়ে এসেছিল কাজ করতে। গ্রামের স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় এক বছরের মধ্যেই দাঁড়িয়ে যায় স্কুলটি।

মাটির তৈরি বিল্ডিং সহজে তাপমাত্রা ঢুকতে বা বের হতে দেয় না। যে কারণে রুমের তাপমাত্রা বছরের বেশির ভাগ সময় একই রকম থাকে। এ ছাড়া বিল্ডিংয়ের ছাদ এবং দেয়ালের মধ্যে সামান্য কিছু জায়গা ফাঁকা রেখেছেন তিনি। এতে গ্রীষ্মকালে গরম বাতাস সহজে বেরিয়ে যেতে পারে। ঠান্ডা বাতাস সে জায়গা দখল করে সহজেই রুমকে ঠান্ডা করে ফেলে। মেটালের তৈরি ছাদকে দুই পাশে বাড়িয়ে দিয়েছেন। এতে সূর্যের আলো সরাসরি বিল্ডিংয়ের গায়ে পড়ে না। ফলে বিল্ডিং সহজে গরমও হয় না। এ ছাড়া গ্রীষ্মকালে সাধারণ মানুষ বারান্দার ছায়ায় সময় কাটাতে পারে।

মাটির তৈরি স্কুল নতুন বিপ্লব শুরু করেছে আফ্রিকাজুড়ে। একে একে বুরকিনা ফাসো থেকে মালি, টোগো, কেনিয়া, মোজাম্বিক থেকে সুদান; পুরো আফ্রিকায় ছড়িয়ে গেছে আর্কিটেক্ট ফ্রান্সিস কেরের কাজ। আবহাওয়া ও তাপমাত্রাকে মাথায় রেখে তৈরি হচ্ছে মাটির স্কুল। ফ্রান্সিস কেরে সরাসরি তত্ত্বাবধানে তৈরি হয়েছে কয়েকটি স্কুল। ২০২২ সালে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে স্থপতিদের সবচেয়ে বড় পুরস্কার প্রিট্‌জকার-এ ভূষিত হন ফ্রান্সিস কেরে।

সূত্র: গার্ডিয়ান

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

মধ্যরাতে বহিরাগতদের প্রবেশের প্রতিবাদে গতকাল উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবিতে করেন বিক্ষোভ, সংবাদ সম্মেলন। অবস্থান নেন প্রশাসনিক ভবনের সামনে। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে তাদের বিক্ষোভ। সেখানেই তারা ইফতার করেন। ইফতারের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপাচার্য সেখানে যান। চলমান আন্দোলন গতকালের মতো শেষ হলেও শিক্ষার্থীরা তাদের বেঁধে দেওয়া সময়ের ব্যাপারে অনড়। আজ সকাল ৮টায় তারা আবারও বুয়েট শহীদ মিনারে জড়ো হবেন।

২০১৯ সালে শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার পর ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয় বুয়েট ক্যাম্পাসে। বুধবার মধ্যরাতে শীর্ষস্থানীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের একটি বহর বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। গতকাল বিকালে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে আজ ও পরের দিনের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেন।

পাশাপাশি পাঁচ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো : বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে বুধবার (২৮ মার্চ) মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ রাব্বিকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং হলের আসন বাতিল; ওই ঘটনায় রাব্বির সঙ্গে বুয়েটের বাকি যে শিক্ষার্থীরা জড়িত ছিলেন, তাদের বিভিন্ন মেয়াদে হল এবং টার্ম বহিষ্কার; যেসব বহিরাগত রাজনৈতিক ব্যক্তি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এবং তারা কেন কীভাবে প্রবেশ করার অনুমতি পেলেন, সে ব্যাপারে বুয়েট প্রশাসনের সুস্পষ্ট সদুত্তর ও জবাবদিহি; প্রথম দুটি দাবি দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন না হলে ডিএসডব্লিউর পদত্যাগ এবং আন্দোলনরত বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনোরকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া।

সংবাদ সম্মেলনের পর শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বুয়েটের ড. এম এ রশীদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ চলে। সেখানেই তারা ইফতার করেন। ইফতারের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে বুয়েটের উপাচার্য সত্যপ্রসাদ মজুমদার সেখানে যান। এ সময় সহ-উপাচার্য আবদুল জব্বার খান, ডিএসডব্লিউ মিজানুর রহমান প্রমুখ তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

উপাচার্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা যে লিখিত দাবি দিয়েছ, সেখানে কাউকে অ্যাড্রেস করা হয়নি। কারও নাম নেই, স্বাক্ষরও নেই। এটার ওপর কীভাবে ব্যবস্থা নেব? তারপরও আমি নিজে এসে কথা বলছি, কারণ তোমরা আমার ছাত্র। ২৮ মার্চ মধ্যরাতে ঘটনার পর আমাদের কাছে রিপোর্ট করতে পারতে।’

এরপর উপাচার্য শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কথা বলেন। তিনি ইমতিয়াজ রাব্বির হলের সিট বাতিল করার ঘোষণা দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা চিৎকার করে ওঠেন। উপাচার্য বলেন, কাউকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। বহিষ্কারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আজই গ্রহণ করা হবে। দ্বিতীয় দাবি প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, সেটির বিষয়ে তদন্ত কমিটি আজই করা হবে। চতুর্থ দাবি অনুযায়ী বুয়েটে প্রবেশ করা বহিরাগতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তারা কারা, খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিটি করা হবে।

একপর্যায়ে আরেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ফটক খুলে দিতে ডিএসডব্লিউর অনুমতি ছিল। এ সময় উপাচার্যের সঙ্গে থাকা ডিএসডব্লিউ মিজানুর রহমান প্রতিবাদ করলে শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন।

শিক্ষার্থীরা থামলে উপাচার্য বলেন, অনুমতি ছিল কি ছিল না, সেটা তদন্ত কমিটি দেখবে। তখন ডিএসডব্লিউ বলেন, ‘আমি কাউকে এ ধরনের অনুমতি দিইনি। আন্দাজে কথা বললে হবে না। বুয়েট ক্যাফেটেরিয়া বা সেমিনার কক্ষ ব্যবহার করতে ডিএসডব্লিউ কার্যালয়ের মাধ্যমে অনুমতি নিতে হয়। তোমরা যে ঘটনার কথা বলছ, সেখানে কার্যালয়ের জন্য কেউ আবেদন করেনি, কাউকে অনুমতিও দেওয়া হয়নি।’ তিনি বলেন, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্ব ডিএসডব্লিউর নয়।

তখন উপাচার্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, এক নম্বর দাবির বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দেওয়া হবে। দুই নম্বর দাবি অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এজন্য উপাচার্য সময় চান এবং শিক্ষার্থীদের আজ পরীক্ষায় বসতে অনুরোধ জানান। এরপর উপাচার্যসহ পদস্থ শিক্ষকরা চলে যান। পরে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে গতকালের মতো বিক্ষোভ শেষ করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের দুইটি সেতু চার বছর ধরে ভেঙে পড়ে থাকলেও নির্বিকার উপজেলা প্রকৌশল অফিস। স্থানীয় বাসিন্দারা ভাঙা সেতুর ওপর সাঁকো তৈরি করে তা দিয়ে চলাচল করছে। খাগকান্দা থেকে নয়নাবাদ যাওয়ার জন্য পাঁচ বছর আগে নির্মিত হয় সেতু। অথচ এক বছর যেতে না যেতেই ভেঙে পড়েছে সেতু দুটি।

কান্দাপাড়া মাখরাজুল উলুম মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি আলমগীর হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত চার বছর এই সড়কে দুটি সেতু দেবে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় সেতুর ওপর বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয় সাঁকো। এ সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার লোক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। বছরের পর বছর এই সড়কে যানবাহন না চলায় সাধারণ মানুষ পড়েছেন নানামুখী বিপাকে। হাট-বাজার, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসায় যাতায়াতে দুর্ভোগের শিকার অন্তত ২০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। সাঁকো পার হতে গিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীসহ বেশ কিছু পথচারী নিচে পড়ে আহত হয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, খাগকান্দা থেকে নয়নাবাদ যাওয়ার অন্যতম সড়কে দুটি সেতু মাটিতে দেবে গিয়ে অকেজো হয়ে আছে। সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় হেঁটেই দীর্ঘ চার বছর ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন ঐ এলাকার বাসিন্দারা।

জানা গেছে, এই সেতু দিয়ে নয়নাবাদ, খাগকান্দা, নয়াপাড়া, তাতুয়াকান্দা, চৌতনকান্দা, কান্দাপাড়া, পাচালি পাড়া, হোগলাকান্দি, বঙ্গবাজারসহ কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ১০ থেকে ১৫ হাজার লোক এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে। খাগকান্দা নয়নাবাদ এবং খাগকান্দা থেকে নয়নাবাদ পর্যন্ত সড়কের দুটি সেতু অকেজো হয়ে পড়ে আছে চার বছর যাবত্। সেতুর দুই পাশের মাটি সরে গেছে। সেতুর ওপর দিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে লোক চলাচল করতে পারলেও যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

নয়নাবাদ এলাকার এক বাসিন্দা জানান, কবি নজরুল ইসলাম কলেজ খাগকান্দা মারকাজুল কোরআন মহিলা মাদ্রাসা, নয়নাবাদ পুরুষ ও মহিলা মাদ্রাসা, খাগকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নয়নাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কান্দাপাড়া মাখরাজুল উলুম মাদ্রাসাসহ প্রায় ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থীসহ দুই ইউনিয়নের ১০ থেকে ১৫ হাজার লোক এই পথ দিয়ে চলাচল করেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেতু দুটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। চার বছর যাবত্ সেতু দুটি দেবে গেলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ কেউই কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সেতুর ওপর দিয়ে মানুষ চলাচল করার জন্য দুটি সাঁকো তৈরি করে বছরের পর বছর চলাচল করতে হচ্ছে আমাদের। জমির ফসল নিয়ে এই সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় আমাদের। ফলে নানা সমস্যায় পড়তে হয় তাদের।

খাগকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান বলেন, চার বছর যাবত্ জনগুরুত্বপূর্ণ সেতু দুটি দেবে গিয়ে বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও সংশ্লিষ্টরা কোনো নজরদারি করছেন না। আমি কয়েক বার উপজেলার মাসিক সভায় গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি জানালেও কেউ আমলে নেয়নি। আমি চাই সেতুগুলো মেরামত করে এলাকাবাসী দুর্ভোগ লাঘব করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।’

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

রমজান মাসের শুরুতে ঢাকার অলিগলি থেকে শুরু করে অনেক বড় রাস্তা বা সংলগ্ন ফুটপাতে বসে ইফতারির বাজার। রমজানের মাঝামাঝি এসে এ চিত্র খানিকটা বদলে যায়। বিপণিবিতান ছাড়িয়েও প্রায় সর্বত্র বসে পড়ে পোশাকের বাজার। রোজার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ পার হওয়ার পর এখন বাজারে, পথেঘাটে আসন্ন ঈদের আমেজ।

বড়, মাঝারি, ছোট শপিং মল আর নানা শ্রেণির সেকেলে মার্কেটের পাশাপাশি রাজধানীর ফুটপাতগুলোতে শোনা যাচ্ছে পোশাক বিক্রেতাদের হাঁকডাক। লেগে থাকছে ক্রেতাদের ভিড়। গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ভিড় দেখা গেছে ঈদ পোশাকের বাজারে।

রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মল, নিউ মার্কেট, গাউছিয়া, চাঁদনী চক ও মৌচাকে গতকাল ছিল উপচে পড়া ভিড়।

পোশাক, জুতা, প্রসাধনী, গয়না, অন্দরসজ্জার সামগ্রীসহ সব ধরনের পণ্যের প্রতিই ক্রেতাদের আগ্রহ ছিল। তবে মূল ব্যস্ততা আর ভিড় ছিল পোশাকের দোকানেই। বড় বিপণিবিতানের মতো ভিড় ছিল ফুটপাত ও ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতেও। এতে সন্তুষ্টি দেখা গেছে ব্যবসায়ীদের মাঝে।

তবে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অনেক বেশি দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা—এমন মন্তব্য করেছে ক্রেতারা।
নিউ মার্কেটে এ প্রতিবেদকের কথা হয় মারজিয়া আক্তারের সঙ্গে। দুই ছেলে, এক মেয়ে এবং স্বামীকে নিয়ে মতিঝিল থেকে এসেছেন তিনি। মারজিয়া বললেন, ভিড় এড়িয়ে স্বস্তিতে কেনাকাটা করতে সকাল ১০টায় বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন। সাড়ে ১২টা নাগাদ মোটামুটি কেনাকাটা গুছিয়ে এনেছেন।

প্রতিবছরই নিউ মার্কেট থেকে ঈদের পোশাক-আশাক কেনেন। মারজিয়া বলেন, ‘কাপড় চিনলে আর দামাদামি করতে পারলে এখানে কাপড় কিনেই মজা। বিক্রেতারা বেশি দাম চাইলেও ঠাণ্ডা মাথায় দামাদামি করি। সময় বেশি লাগে। কথাও বেশি খরচ করতে হয়, কিন্তু অনেক টাকা বেঁচে যায়।’

মারজিয়ার এই কথা এলাকার গাউছিয়া মার্কেট, ধানমণ্ডি হকার্স মার্কেট, চাঁদনী চক মার্কেট, বদরুদ্দোজা মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপারমার্কেটসহ এ ধরনের অনেক বিপণিবিতানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সে কারণেই গড়পড়তা মধ্যবিত্তের ভিড়টা এসব জায়গায়ই বেশি।

নারীদের সেলাইহীন পোশাকের দোকান চৈতীতে গতকাল ছিল সব পণ্যে ১৫ শতাংশ ছাড়। সেখানে কথা হয় ফারজানা ইসলামের সঙ্গে। তিনি কেনাকাটা করতে এসেছিলেন আফতাবনগর থেকে। ফারজানা বললেন, ‘ঈদের অর্ধেক আনন্দ কেনাকাটাতেই। ভিড় হলেও কিনতে ভালো লাগছে।’ তবে দুটি অভিযোগও করলেন তিনি। একটি সেই ‘বেশি দাম’ নিয়েই। দ্বিতীয়টি হচ্ছে পোশাকের দোকানগুলোতে স্বস্তিতে কাপড় দেখার জন্য বসার ব্যবস্থা না থাকা নিয়ে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক-টিকটক-ইনস্টাগ্রাম-স্ন্যাপচ্যাটের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কানাডার স্কুলে শিক্ষা কার্যক্রম তদারককারী চারটি গুরুত্বপূর্ণ বোর্ড। তাদের অভিযোগ, এসব মাধ্যমে আসক্তি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। সেজন্য তারা ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৯০ কোটি ডলার দাবি করেছে।

বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছে, স্কুলবোর্ডগুলোর অভিযোগ, এই মাধ্যমগুলো শিশুদের চিন্তাভাবনা, আচার-আচরাণ ও শেখার ধরনকেই পাল্টে দিচ্ছে। এসব মাধ্যম তাদের মানসিক বিকাশের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

উল্লেখ্য, অভিযোগ দেয়া চার বোর্ড হলো টরন্টো ডিস্ট্রিক্ট স্কুল বোর্ড, পিল ডিস্ট্রিক্ট স্কুল বোর্ড, টরন্টো ক্যাথলিক ডিস্ট্রিক্ট স্কুল বোর্ড ও অটোয়া-কার্লটন ডিস্ট্রিক্ট স্কুল বোর্ড। তারা প্রত্যেকেই আলাদাভাবে অভিযোগ দেয়।

সূত্র : এপি

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

সদ্য মা হয়েছেন আয়েশা ইয়াসমিন। তার দুই ভাই, একজন কাজ করে চাতালে। আর ছোট ভাই পড়ছে কওমি মাদ্রাসায়। করোনার আগে আয়েশা অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। এরপর আর স্কুল যায়নি সে। এর দুই বছরের মধ্যে বিয়ে হয় আয়েশার। ভাইদের মধ্যে বড় সবুজ অষ্টম শ্রেণির পর আর স্কুলে যায়নি।

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ীর প্রত্যন্ত এক গ্রামে বাস তাদের। তাদের বাবা ভাড়ায় অটোরিকশা চালান। করোনায় স্কুল বন্ধের সময় কাজে যোগ দেয় সবুজ।

টানাপড়েনের সংসারের হাল ধরতে লেখাপড়া ছেড়ে আয়ের পথ বেছে নেয়। আর সব ছোট ভাই ইসমাইল তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিকে পড়লেও এখন যায় মাদ্রাসায়। এই পরিবারটির অবস্থায় বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার পুরো চিত্রই যেন ফুটে উঠেছে।

সবুজ বলে, আব্বা ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। আম্মাও অসুস্থ। এখন আমি স্কুল গেলে না খেয়ে থাকা লাগবে। আয়েশা ও সবুজের শিক্ষক মো. হামিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের গ্রামের অধিকাংশই দরিদ্র পরিবারের। লেখাপড়া থেকে আয়ের পথ বেছে নেয়াটাই বেশি প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। করোনার সময় সকলের আয়ের একটা ভাটা পড়ে।

অনেকেই জড়িয়ে গেছে কর্মসংস্থানে। যারা স্কুলছাড়া হয়েছে তাদের ফিরিয়ে আনা এখন অসম্ভব। তিনি আরও বলেন, মাদ্রাসাগুলোতে যেহেতু দানের পরিমাণটা বেশি। খরচ লাগে না বা খুব কম লাগে এজন্য অনেকেই মাদ্রাসাগুলোতে ভর্তি হচ্ছে।

সরকারি অর্থায়নে হওয়া এক গবেষণায় উঠে এসেছে চার বছরের ব্যবধানে দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী কমেছে। আবার এই সময়ে কারিগরি, মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষার্থী বেড়েছে। গতকাল বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) করা ‘বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান-২০২৩’ এর প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, ২০১৯ সালে দেশে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী ছিল ৯২ লাখ ৩ হাজার ৪২৭ জন।

২০২৩ সালে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮১ লাখ ৬৬ হাজার ১৮৮ জন। মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৫ শতাংশই ছাত্রী। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাড়াও স্কুল অ্যান্ড কলেজ অর্থাৎ যেখানে উচ্চ মাধ্যমিকের পাশাপাশি মাধ্যমিক স্তরেও পড়ানো হয় এসব শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার।

এই চার বছরের দাখিল ও আলিম ধারার মাদ্রাসায় আড়াই লাখের বেশি শিক্ষার্থী বেড়েছে। বর্তমানে মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষার্থী ২৭ লাখ ৫৮ হাজারের বেশি। এর মধ্যে ছাত্রী প্রায় ৫৪ শতাংশ। ৫৮৮টি সরকারি কারিগরি প্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৭ লাখ। চার বছর আগে যা ছিল ৭ লাখের মতো। কারিগরির শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৯ শতাংশ ছাত্রী। বর্তমানে ১২৩টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করছে ২৮ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী; যা চার বছর আগে ছিল ২৬ হাজারের বেশি। ব্যানবেইস শিক্ষার্থীদের তথ্য বিশ্লেষণ করলেও কী কারণে ঝরে পড়েছে সেটা তুলে ধরেনি।

ব্যানবেইসের খসড়া প্রতিবেদনে মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার চিত্র উঠে এসেছে। মাধ্যমিকে এখন ঝরে পড়ার হার কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৩ শতাংশ, যা চার বছর আগে ছিল প্রায় ৩৭ শতাংশ। মাধ্যমিক পেরোতে পারলে উচ্চমাধ্যমিকে গিয়ে ঝরে পড়ার হারটি কম থাকে। তবে চার বছরের ব্যবধানে উচ্চ মাধ্যমিকে এই হার বেড়েছে। উচ্চ মাধ্যমিকে ঝরে পড়ার হার এখন ২১ শতাংশের বেশি, যা চার বছর আগে ছিল ১৮ শতাংশের বেশি।

কেন ঝরে পড়ছে শিক্ষার্থীরা? দিনাজপুর সদরের প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষার্থীদের নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করছেন শ্যামল কান্তি সিংহ রায়। গ্রাম বিকাশ কেন্দ্র প্রকল্পের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর শ্যামল বলেন, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা অধিকাংশই কৃষি শ্রমিক। এখন শ্রমিকদের সংখ্যা বাড়ছে সেইসঙ্গে কাজ কমে আসছে। আবার কৃষিতে টেকনোলজি আসার কারণেও কাজের হারটা কমছে। এই শিক্ষার্থীরা এখন নতুন করে যুক্ত হচ্ছে অন্য পেশায়। ফলে অর্থনৈতিকভাবে স্বাচ্ছদ্যবোধ করায় লেখাপড়া থেকে সরে যাচ্ছে এসব শিক্ষার্থী। তাদের কাছে লেখাপড়া করাটা অনিশ্চিত ভবিষ্যত।

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, করোনার সময়ে আমরা প্রতিবেদনে চারটি শঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম। আমরা বলেছিলাম শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়বে, বাল্যবিবাহ বাড়বে, শিশুশ্রম ও অপুষ্টি বাড়বে। এই চারটি আশঙ্কাই সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। মাদ্রাসাগুলো অধিকাংশই লিল্লাহ বোডিং। শিক্ষার্থীরা প্রায় বিনামূল্যে পড়তে পাচ্ছে। যার কারণে অভিভাবকদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন।

আর বাবা-মায়েরা ইংরেজি মাধ্যমে পড়িয়ে আত্মতৃপ্তিতে ভুগছেন। যেটা অধিকাংশই ঠিক না। বর্তমানে শিক্ষায় রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ খুবই কম। যেখানে পারিবারিক বিনিয়োগ ৭১ শতাংশ অভিভাবকদের বহন করতে হয়। এই কারণেই মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীরা যাচ্ছে, সেইসঙ্গে স্কুল-কলেজ থেকে ঝরে পড়ছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

মানিকগঞ্জের উথলী এজিএস স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইউছুব আলীর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্কুলের শিক্ষকদের ডিজিটাল হাজিরা মেশিনের প্রকৃত দামের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ব্যয় দেখিয়ে ভুয়া বিল-ভাউচারে মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগসহ আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে ।

গত ২৭শে মার্চ প্রধান শিক্ষক ইউছুব আলীকে সাময়িক বরখাস্তের কথা নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. সালাউদ্দিন সরকার। জানা গেছে, গত ১৯শে মার্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগসমূহ ও আয়-ব্যয়ের হিসাব পর্যালোচনার জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই তদন্ত কমিটির সুপারিশের আলোকে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যাপক আর্থিক অনিয়ম প্রমাণিত হয়।

সেইসঙ্গে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ, স্বেচ্ছাচারিতাসহ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২৩০ জন শিক্ষার্থীর অভিভাবকের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রধান শিক্ষক মো. ইউছুব আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

তবে বরখাস্ত থাকাকালীন সময়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তিনি তার মাসিক সরকারি মূল বেতনের অর্ধেক খোরাকি ভাতা পাবেন। এ বিষয়ে জানতে বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক ইউছুব আলীর মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ ছাড়া মোবাইলে খুদে বার্তা দিয়েও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সালাহ উদ্দিন সরকার জানান, বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অভিভাবকসহ বিভিন্নজনের সঙ্গে অসদাচরণের কারণে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে এর অনুলিপি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram