নিজস্ব প্রতিবেদক।।
রাজধানীতে বেড়েছে শিশু অপহরণ। বোরকা পরে পরিচয় গোপন রেখে শিশু চুরি করা হচ্ছে। তাই অভিভাবকদের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
রাজধানীতে অপহরণের ৭ দিন পর গতকাল বুধবার আড়াই বছরের এক শিশুকে কুমিল্লা থেকে উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ। একই সঙ্গে শিশুচোর চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ডিবি জানায়, গত ২১ মার্চ বিকেলে রাজধানীর হাজারিবাগের ভাড়া বাসার সামনে অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলছিল শিশু তাওসীন। হঠাৎ অপরিচিত এক নারী চকলেট-চিপসের লোভ দেখিয়ে তাকে দোকানে নিয়ে যান। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই শিশুটিকে অপহরণ করে নিয়ে যায় ওই নারী।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাওসীনকে না পাওয়ায় তার বাবা আইনরক্ষাকারী বাহিনীর শরাণাপন্ন হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিবি কুমিল্লা থেকে এক নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা জানায়, ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন বোরকা পড়া ওই নারী। পরে ওই শিশুকে উদ্ধারসহ বিক্রয়ের ২৩ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
শিশু পাচারকারীর সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত আছে কি না এ ব্যাপারে আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৮.০৩.২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় আজ বৃহস্পতিবার ৮ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম জানান, নতুন মেয়াদে সরকার গঠনের পর একনেকের দ্বিতীয় সভা এটি। এ সভায় ১১টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৪২৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৭ হাজার ৯৩৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে আসবে ৪৮৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।
২০২৬ সালে এলডিসি উত্তোরণ-পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, অল্প ব্যয় করলে যে প্রকল্পগুলো শেষ করা যাবে সেগুলো দ্রুত শেষ করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করার নির্দেশের পাশাপাশি বৃষ্টির পানি ধরে রাখাতে ও সোলার ব্যবস্থা রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৮.০৩.২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
চার বছরের ব্যবধানে দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ১০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী কমেছে। তবে একই সময়ে কারিগরি, মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষার্থী বেড়েছে।
বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) করা ‘বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান-২০২৩’ এর খসড়া প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটি চূড়ান্ত করার জন্য আজ বৃহস্পতিবার এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে খসড়া সারসংক্ষেপের তথ্য উপস্থাপন করা হবে।
ব্যানবেইসের খসড়া প্রতিবেদনে দেখা যায়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর আগের বছর ২০১৯ সালে দেশে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী ছিল ৯২ লাখের বেশি, যা ২০২৩ সালে কমে দাঁড়িয়েছে ৮১ লাখ ৬৬ হাজার। এই শিক্ষার্থীরা দেশের ১৮ হাজার ৯৬৮টি বিদ্যালয়ে পড়ে। মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫৫ শতাংশই ছাত্রী। অবশ্য মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাড়াও স্কুল অ্যান্ড কলেজ অর্থাৎ যেখানে উচ্চমাধ্যমিকের পাশাপাশি মাধ্যমিক স্তরেও পড়ানো হয়, সেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক লাখ ৮০ হাজারের মতো বেড়েছে।
করোনা সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে দীর্ঘ ১৮ মাস পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। এ কারণে শিক্ষায় বড় ধরনের প্রভাব পড়ে।
ব্যানবেইসের তথ্য বলছে, চার বছরের ব্যবধানে সরকারের অধীনে থাকা মাদ্রাসাগুলোতে (দাখিল ও আলিম ধারার মাদ্রাসা) আড়াই লাখের বেশি শিক্ষার্থী বেড়েছে। বর্তমানে মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষার্থী ২৭ লাখ ৫৮ হাজারের বেশি। এর মধ্যে ছাত্রী প্রায় ৫৪ শতাংশ।
সরকার কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্ব দিচ্ছে। এর ফলে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। বর্তমানে ৫ হাজার ৩৯৫টি (এর মধ্যে ৫৮৮টি সরকারি) কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোট শিক্ষার্থী প্রায় সাড়ে ৭ লাখ। চার বছর আগে যা ছিল ৭ লাখের মতো। ওই সময় কারিগরি প্রতিষ্ঠান ছিল ২ হাজার ৩০৯টি। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যায় সমতা এলেও কারিগরিতে ছাত্রীদের হার এখনো অনেক কম। কারিগরিতে যত শিক্ষার্থী পড়ে, তার মধ্যে ২৯ শতাংশের মতো ছাত্রী।
ব্যানবেইসের খসড়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে ১২৩টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াশোনা করছে ২৮ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী; যা চার বছর আগে ছিল ২৬ হাজারের বেশি।
ব্যানবেইসের খসড়া প্রতিবেদনে মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার চিত্র উঠে এসেছে। মাধ্যমিকে এখন ঝরে পড়ার হার কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৩ শতাংশ, যা চার বছর আগে ছিল প্রায় ৩৭ শতাংশ।
মাধ্যমিক পেরোতে পারলে উচ্চমাধ্যমিকে গিয়ে ঝরে পড়ার হারটি কম থাকে। তবে চার বছরের ব্যবধানে উচ্চমাধ্যমিকে এই হার বেড়েছে। উচ্চমাধ্যমিকে ঝরে পড়ার হার এখন ২১ শতাংশের বেশি, যা চার বছর আগে ছিল ১৮ শতাংশের বেশি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এস এম হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণ ধারার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার পেছনে আর্থসামাজিক পরিস্থিতি থাকতে পারে। অনেকে কাজে নিয়োজিত হচ্ছে। গবেষণার মাধ্যমে কারণগুলো বের করে এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৮.০৩.২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
আজ ১৭ রমজান। এ দিন সংঘটিত হয়েছিল বদরের যুদ্ধ। ইসলামের ইতিহাসে দিনটির গুরুত্ব বিশেষ। ২ হিজরির ১৭ রমজান মদিনার মুসলমান এবং মক্কার অমুসলিমদের মধ্যে এ যুদ্ধ হয়। যুদ্ধের আগে চলে বেশ কিছু খণ্ডযুদ্ধ। তবে বদরের যুদ্ধ ছিল দুই পক্ষের মধ্যে প্রথম বড় আকারের যুদ্ধ।
ইসলামের এই প্রথম সামরিক যুদ্ধে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নেতৃত্বে মুসলমান বাহিনী বিজয়ী হয়। এই বিজয় অন্যদের কাছে এই বার্তা পৌঁছায় যে মুসলমানরা আরবে নতুন শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এর ফলে নেতা হিসেবে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অবস্থান দৃঢ় হয়।
মুসলমানরা মক্কা ত্যাগ করলেও মক্কার কুরাইশরা তাদের শত্রুতা ছাড়েনি। মদিনার ইহুদিদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে তারা মদিনা আক্রমণের আয়োজন করতে থাকে। বদরের যুদ্ধ হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজে পরিচালনা করেন। আল আরিশ পাহাড়ের পাদদেশে মুসলিম বাহিনীর শিবির স্থাপিত হলো। তাই পানির কুয়াগুলো তাদের আয়ত্তে ছিল।
আর নবী করিম (সা.) সৈন্য সমাবেশের জন্য এমন একটি জায়গা বেছে নেন, যেখানে সূর্যোদয়ের পর যুদ্ধ হলে কোনো মুসলমান সৈন্যের চোখে সূর্যকিরণ পড়বে না।
প্রাচীন আরব রেওয়াজ অনুযায়ী প্রথমে মল্লযুদ্ধ হয়। অমুসলিমদের সেনাসংখ্যা ছিল এক হাজার। আর ছিল এক শ ঘোড়া, ছয় শ লৌহবর্ম এবং অসংখ্য উট। অমুসলিমদের সেনাপতি ছিলেন ওতবা বিন রবিআ। যুদ্ধে ৭০ জন অমুসলিম নিহত হন এবং বন্দীও হন ৭০ জন।
মুসলমানদের বাহিনীর সেনাসংখ্যা ছিল ৩১৩ জন। মুহাজির ছিলেন ৮২ জন, বাকি সবাই আনসার। আওস গোত্রের ৬১ জন এবং খাজরাজ গোত্রের ১৭০ জন। মুসলিমদের উট ও ঘোড়ার সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৭০টি ও ২টি। যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর ১৪ জন শহীদ হন।
এই যুদ্ধের উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল নবীজি (সা.)-এর প্রধান শত্রু আবু জাহেলের নিহত হওয়া। এ প্রসঙ্গে দুই কিশোরের অসম সাহসিকতা নিয়ে একটি বীরত্বের কাহিনি প্রচলিত আছে।
কোরআনে আছে, যারা আক্রান্ত হয়েছে তাদের যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হলো, কারণ তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে। আল্লাহ তাদের সাহায্য করতে অবশ্যই সক্ষম। (সুরা হজ, আয়াত: ৩৯)
পবিত্র কোরআনে আরও আছে, ‘আর যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, তোমরাও আল্লাহর পথে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো। তবে সীমালঙ্ঘন কোরো না। আল্লাহ তো সীমা-লঙ্ঘনকারীদের ভালোবাসেন না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৯০)
শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৮.০৩.২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
আরবি ‘সদকাতুল ফিতর’ অর্থ ‘ঈদুল ফিতরের সদকা’। ঈদুল ফিতরের দিন আদায় করা হয় বলে একে সদকাতুল ফিতর বলা হয়। একে জাকাতুল ফিতর বা ফিতরাও বলা হয়। সদকাতুল ফিতর বা ফিতরা দেওয়া ওয়াজিব। রাসুল (সা.) ছোট-বড় নারী-পুরুষ সব মুসলমানের জন্য তা আবশ্যক করেছেন।
পবিত্র রমজানের পুরো এক মাস রোজা এবং তৎসংশ্লিষ্ট ইবাদত ও বিধিনিষেধ পালনের পর শাওয়াল মাসের পয়লা তারিখে ঈদ উৎসব পালিত হয়। এ পালনের মধ্যে রয়েছে জামাতে ঈদের নামাজ আদায়, গরিব-দুঃখীদের মধ্যে ফিতরা বিতরণ এবং ভালো খাওয়াদাওয়ার আয়োজন। তবে ঈদুল ফিতর উৎসবের একটি তাৎপর্যময় অঙ্গ হলো ফিতরা বিতরণ।
রোজার সময় সংযম সাধনায় কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি ঘটে থাকলে তা সংশোধন এবং সমাজের সর্বস্তরের লোক যাতে উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পারে, সে জন্য গরিব-দুঃখীদের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট হারে সদকায়ে ফিতরা বিতরণ করতে হয়।
প্রত্যেক সমর্থ্য মুসলমানের জন্য ফিতরা দেওয়া ওয়াজিব। মাথাপিছু কত টাকা ফিতরা দিতে হবে, তা আগেই রাষ্ট্র কিংবা সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে দেয়। নিয়ম হলো, ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগেই এই ফিতরা পরিশোধ করতে হবে। তারপর ঈদগাহ কিংবা তার অভাবে বড় মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়।
এ বছর ফিতরার হার জনপ্রতি সর্বোচ্চ ২ হাজার ৯৭০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুল (সা.) স্বাধীন-দাস ছোট-বড় নারী-পুরুষ সব মুসলমানের জন্য গম বা খেজুরের এক সা (৩ কেজি ২৭০ গ্রাম) ফিতরা আবশ্যক করে দিয়েছেন এবং তা ঈদুল ফিতরের নামাজে যাওয়ার আগেই আদায় করার আদেশ দিয়েছেন।’ (বুখারি, হাদিস: ১৫০৩)
ফিতরা কেন দিতে হয়:
ক. রোজাদারের রোজায় যেসব দুর্বলতা ও ভুল হয়, তা থেকে পবিত্র হওয়া। খ. দরিদ্রদের প্রতি সদ্ব্যবহার। গ. ঈদুল ফিতরের দিনে দরিদ্রদের ভিক্ষা করা থেকে বিরত রাখা। ঘ. তারাবি ও রোজার মতো নেয়ামতে ধন্য করায় আল্লাহর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা। ঙ. উদারতা ও সহমর্মিতার চর্চা করা।
ফিতরের নিসাব জাকাতের নিসাবের সমপরিমাণ। নিসাব মানে হলো কারো কাছে সাড়ে সাত ভরি সোনা বা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা অথবা তার সমমূল্যের নগদ অর্থ কিংবা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অতিরিক্ত সম্পদ ঈদুল ফিতরের দিন সময় বিদ্যমান থাকলে তার ওপর ফিতর ওয়াজিব হবে। যাঁর ওপর ফিতর আদায় করা ওয়াজিব, তিনি নিজের পক্ষ থেকে যেমন আদায় করবেন, তেমনি নিজের অধীনদের পক্ষ থেকেও আদায় করবেন। তবে এতে জাকাতের মতো বর্ষ অতিক্রম হওয়া শর্ত নয়।
ফিতরার উপকরণ ও পরিমাণ:
রাসুল (সা.)-এর যুগে মোট চারটি পণ্য দিয়ে ফিতরা আদায় করা হতো। খেজুর, কিশমিশ, যব ও পনির। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘আমরা এক সা পরিমাণ খাদ্য অথবা এক সা পরিমাণ যব অথবা এক সা পরিমাণ খেজুর অথবা এক সা পরিমাণ পনির অথবা এক সা পরিমাণ কিশমিশ দিয়ে সদকাতুল ফিতর আদায় করতাম।’ (বুখারি, হাদিস: ১,৫০৬)
খাদ্যবস্তুর পরিবর্তে সেগুলোর কোনো একটিকে মাপকাঠি ধরে তার মূল্য আদায় করা হয়।
বর্তমান বাজারদর হিসাবে যেহেতু গমের দামই সবচেয়ে কম, তাই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রতিবছর আধা ‘সা’ গমকে মাপকাঠি ধরে ওই সময়ের বাজারদর হিসাবে তার মূল্য ফিতরার সর্বনিম্ন পরিমাণ ঘোষণা করা হয়।
উত্তম হলো, নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী বেশি মূল্যের খাদ্যবস্তুকে মাপকাঠি ধরে ফিতরা আদায় করা। কেননা সদকার মূল লক্ষ্যই হলো গরিবদের প্রয়োজন পূরণ ও তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ। এ ছাড়া আদায়কারীর সামর্থ্যকেও বিবেচনায় রাখা উচিত, যদিও শরিয়তে সর্বনিম্ন মূল্যে ফিতরা আদায় করার দরজা খোলা রাখা হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে যব, কিশমিশ, খেজুর ও পনিরের হিসাবে ফিতরার আলাদা মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কেউ চাইলে আটার হিসাবে ফিতরা না দিয়ে উল্লিখিত জিনিসগুলোর হিসাবেও ফিতরা দিতে পারবেন।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগেই সদকাতুল ফিতর আদায় করা উত্তম। তবে রমজান মাসেও তা আদায় করা যায়।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/জামান/২৮.০৩.২৪
নিউজ ডেস্ক।।
নরওয়ের এগডার বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে শিক্ষাবৃত্তির সুযোগ পাচ্ছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা। আবেদনের শেষ সময় চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল।
চুয়েট ও এগডার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোলাবোরেশানে পরিচালিত চলমান কেয়ার প্রকল্পের আওতায় এবার দ্বিতীয় মেয়াদে শিক্ষাবৃত্তির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। গত ২৭ মার্চ চুয়েটের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত ২টি বিজ্ঞপ্তিতে দুই বছর মেয়াদী মাস্টার্স ইন রিনিউবেল এনার্জি প্রোগ্রাম এবং পাঁচ মাস মেয়াদি গবেষণা/কোর্স ওয়ার্কের জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগ এবং তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন অথবা ২০২৪ সালের মার্চের মধ্যে স্নাতক তত্ত্বীয় কোর্স এবং ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্নকৃত শিক্ষার্থীরা ২ বছরের মাস্টার্স প্রোগ্রামে শিক্ষাবৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এ ছাড়াও নরওয়েতে এক সেমিস্টার অধ্যয়নের নিমিত্তে (সম্ভাব্য সময় আগস্ট-ডিসেম্বর ২০২৪) চুয়েট এর যন্ত্রকৌশল বিভাগ, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগ এবং ইনস্টিটিউট অব এনার্জি টেকনোলজিতে অধ্যয়নরত পিএইচডি/মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষার্থীরা পাঁচ মাসের গবেষণা /কোর্স ওয়ার্কের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
আবেদন সংযুক্ত ছক মোতাবেক আগামী ১৬ এপ্রিলের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিচালক এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু সাদাত মুহাম্মদ সায়েম, ই-মেইলঃ [email protected] বরাবর পাঠানোর জন্য বলা হয়। আবেদন পত্রের বিষয় Thesis/Course Work-NAME-DEPARTMENT/INSTITUTE এই Format এ একটা Single PDF File এ জমা দিতে বলা হয়েছে।
এ শিক্ষাবৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থী বিনা খরচে পড়ার পাশাপাশি প্রতি মাসে জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহে ১২৬০০ নরওয়েজিনার ক্রোনার প্রাপ্ত হবেন।
প্রকল্পের পরিচালক ড. আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম জানান, ‘দুই বছর মেয়াদি কোর্সের জন্য ২-৩ জনকে নির্বাচন করা হবে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ মাস্টার্স কোর্স নরওয়েতেই সম্পন্ন করবেন। আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা হিসেবে সিজিপিএ ৪ স্কেলে ন্যূনতম ৩ দশমিক ৫ থাকতে হবে।’
তিনি জানান, ‘শিক্ষার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে তাদের সিজিপিএ, ইন্টারভিউ পারফরমেন্স ইত্যাদি বিবেচনা করা হবে। পাঁচ মাস মেয়াদি (এক সেমিস্টার) মাস্টার্স কোর্সে ৪-৫ জন শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। এ ক্ষেত্রে মাস্টার্সের অবশিষ্ট ৩ সেমিস্টার চুয়েটে সম্পন্ন করবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকা চূড়ান্তভাবে ২৪ এপ্রিল এগডার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
নিউজ ডেস্ক।।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে তৃতীয় ধাপের (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ) লিখিত পরীক্ষা শুক্রবার (২৯ মার্চ) অনুষ্ঠিত হবে। এদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত দুই বিভাগের সব জেলা পর্যায়ে এ পরীক্ষা নেওয়া হবে।
পরীক্ষা ঘিরে প্রতারণা ও জালিয়াতি ঠেকাতে প্রার্থীদের সতর্ক করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াতের সই করা সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই চাকরি হবে।
অর্থ লেনদেন বা অন্য কোনো অনৈতিক উপায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম নিয়োগ বিধিবিধান অনুসরণ করে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়। প্রার্থীদের রোল নম্বর, আসনবিন্যাস, প্রশ্নপত্র পাঠানো ও মুদ্রণ, উত্তরপত্র মূল্যায়ন, ফলাফল প্রস্তুতসহ যাবতীয় কাজ সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে করা হয়।
এছাড়া জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় পরীক্ষাকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।
এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অবৈধ হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। এমতাবস্থায় দালাল বা প্রতারক চক্রের প্রলোভনে প্রলুব্ধ হয়ে কোনো ধরনের অর্থ লেনদেন না করা এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে কোনো প্রকার অসদুপায় অবলম্বনের জন্য কোনো দালালচক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক করাসহ অনুরোধ করা হলো।
অর্থ লেনদেন বা অন্য কোনো অনৈতিক উপায়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি হবে।
কেউ অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখালে তাকে নিকটবর্তী থানায় সোপর্দ করা অথবা থানা বা গোয়েন্দা সংস্থাকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করেছে অধিদপ্তর।
নিউজ ডেস্ক।।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, ‘বঞ্চিত ও অসহায় শিশুদের হাতে শিক্ষা উপকরণ তুলে দিয়ে তাদেরকে আমরা সু-নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
যেন এসব এতিম ও বঞ্চিত শিশুরা আগামীতে দেশ গঠনে ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়।’
বুধবার রাজধানীর শ্যামপুরে পথশিশু ও এতিম শিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ ও খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মানুষের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এটি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে আমাদের ওপরে অর্পিত দায়িত্ব।
বাংলাদেশের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখতে পাওয়া যায় বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষ শান্তিতে থাকতে পারে না।
জনগণ নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। শিশুরা সঠিক শিক্ষা হতে বঞ্চিত হয়। এ দলটির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে মানুষ সবসময় ভয়ে থাকে।
তারা জনগণ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। তাই তারা জনগণের ভোটাধিকারের কোনো তোয়াক্কা করে না। দেশের জনগণ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে তারা এখন বিদেশীদের কাছে নিজেদের সত্বা বিলিয়ে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রিয় নবী সা. একদল যোগ্য লোক তৈরি করে সোনার মদিনা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, আমরাও একইভাবে সেই কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখি।
আল্লাহর দ্বীন এই জমিনে বিজয়ী হলে দেশের প্রতিটি নাগরিক তার ন্যায্য অধিকার ফিরে পাবে, ইনশাআল্লাহ।
এ জন্য আমরা সমাজের বঞ্চিত ও অসহায় শিশুদের হাতে শিক্ষা উপকরণ সামগ্রী উপহার প্রদানসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। একই সাথে তাদের মাঝে কুরআনের শিক্ষা ছড়িয়ে দেয়ার জন্যও আমরা আপ্রাণ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশে রাসুল সা.-এর আদর্শের আলোকে সোনার মানুষ হিসেবে আগামী প্রজন্মকে তৈরি করতে চাই।
যাদের মাধ্যমে দেশ ও জাতি সত্যিকার অর্থে কল্যাণ লাভ করবে।’
তিনি জামায়াতে ইসলামীর এ সকল সমাজকল্যাণমূলক কাজে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য ও শ্যামপুর দক্ষিণ থানা আমির ইঞ্জিনিয়ার জসীম উদ্দীনের সভাপতিত্বে শিক্ষা উপকরণ ও খাবার বিতরণে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহীন আহমদ খান, সুত্রাপুর উত্তর থানা সেক্রেটারি নোমান শিকদার, শ্যামপুর দক্ষিণ থানা কর্মপরিষদ সদস্য ইব্রাহিম খলিলুল্লাহসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
নিউজ ডেস্ক।।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নবনিযুক্ত ভিসি অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক বলেছেন, ‘আমি আপনাদেরই লোক, আমি বঙ্গবন্ধুর লোক, আমি প্রধানমন্ত্রীর লোক। সবাই সহযোগিতা করবেন, ভুল হলে ধরিয়ে দেবেন। তবে কেউ আমাকে পিছু টানবেন না।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
দীন মোহাম্মদ বলেন, ‘আমি কোনো দুর্নীতি করব না। কোনো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেব না। আমি মানুষ হিসেবে ভুল করতেই পারি, তবে ভুল হলে ধরিয়ে দেবেন। আমার কাজের গতি যেন ত্বরান্বিত হয়, সে ব্যাপারে আমাকে সহযোগিতা করবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমার কাছে সবাই সমান। আমি কারো অন্যায় আবদার শুনব না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলে দিয়েছেন। আমার অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। আমি মনে করি, আপনারা সবাই খুবই ক্যাপাবল। বছরের পর বছর এখানে শ্রম দিয়ে আসছেন। সবাইকে জড়িয়ে ধরে একসাথে কাজ করতে চাই। আমি প্রশাসনিক ক্ষমতা দেখাতে আসিনি, আমি আপনাদের বন্ধু হয়ে কাজ করতে চাই। আপনাদের পাশে থেকে সব সমস্যা সমাধান করব।’
চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘অর্পিত দায়িত্ব পালন করলেই আমি সবচেয়ে খুশি হবো। অন্যকিছু দিয়ে আমাকে খুশি করা যাবে না। কেউ দায়িত্ব পালন করতে না পারলে দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হবে। যিনি চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করতে পারবেন, তিনিই দায়িত্ব নেবেন।’
দীন মোহাম্মদ আরো বলেন, ‘আমার রুমে এসে অপ্রয়োজনীয় সময় ব্যয় করা আমি পছন্দ করব না। আপনারা সবাই অনেক কর্মঠ, কাজের মাধ্যমেই আপনাদের সাথে আমার কথা হবে। অনুরোধ করব, আমাকে সবাই সহযোগিতা করবেন। আমি আপনাদের মতোই একজন।’
এসময় সাবেক ভিসিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, সাবেকদের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। বর্তমান ভিসি শারফুদ্দিন সাহেব আমাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন। আমিও তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। তিনি আমার বন্ধু মানুষ। আমরা দীর্ঘদিন একসাথে কাজ করছি। একই ক্লিনিকে প্র্যাকটিস করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজ করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন আমার খুবই কাছের বড় ভাই। শেখ হাসিনা বার্ন হাসপাতাল করার সময় আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ওই জায়গা খালি করেছি। উনার সাথে কাজ করে হাসপাতাল দাঁড় করিয়েছি। তিনি এখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীও আমার কাছের বোন। আমরা তিনজন মিলে দেশকে একটা অসাধারণ স্বাস্থ্যখাত উপহার দিতে চাই। আমি অন্যায় করব না, কিন্তু আমার ভুলকে পুঁজি করে আমাকে অনুৎসাহিত করবেন না। আমি সাংবাদিক ভাইদের থেকে এ বিষয়ে সাহায্য চাই।
তিনি আরো বলেন, চিকিৎসক ও শিক্ষকদের সমস্যা আমার থেকে ভালো কেউ জানে না। এই বিশ্ববিদ্যালয় সারাদেশের মেডিক্যাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য শিক্ষক তৈরি করে। এ প্রক্রিয়া যেন স্বচ্ছ থাকে তা আমি নিশ্চিত করব। গবেষণা ছাড়া মেডিক্যাল শিক্ষা চলতে পারে না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী গবেষণায় উৎসাহী। আমরা তার এই স্বদিচ্ছাকে কাজে লাগাতে চাই। গবেষণার জন্য যা যা প্রয়োজন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এনে দিতে পারব বলে আমার বিশ্বাস।
সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেতা ডা. টিটো বলেন, তিন বছরের দুর্নীতির তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা চাই, ভবিষ্যতে যেন কেউ এমন অন্যায় অত্যাচার ও দুর্নীতি করার সাহস না করেন।
মোঃ মোজাহিদুর রহমান।।
বাগেরহাটের ফকিরহাটে হীড বাংলাদেশ মাইক্রোফাইন্যান্স কর্মসূচির আওতায় বঙ্গবন্ধু উচ্চশিক্ষা বৃত্তি এবং ২০২৩ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৪ ও ৫ প্রাপ্ত ১৮৩ জন মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের সংবর্ধনা ও এককালীর উপবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) বেলা ১১টায় উপজেলা অডিটোরিয়ামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্বপন দাশ এসব শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেষ্ট ও বৃত্তির টাকা তুলে দেন। এতে সম্মানিত অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু।
হীড বাংলাদেশ’র সেন্ট্রাল ম্যানেজার অদ্বৈত কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্টানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ওসি (তদন্ত) বিপুল চন্দ্র দাস, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুর রহমান, মূলঘর ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. হিটলার গোলদার, পিলজংগ ইউপি চেয়ারম্যান মোড়ল জাহিদুল ইসলাম।
হীড বাংলাদেশ’র আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক বিমল কুমার সরকারের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার মো. সুজন আলী, মো. সেকেন্দার আলম, মো, ইকবাল হাওলাদার, শিক্ষার্থী আকাশ রায়, রাবেয়া খাতুন, রিতুপর্ণা দাসসহ অন্যান্যরা।
এসময় এসব শিক্ষার্থীদের ক্রেষ্ট দিয়ে দেয়া হয়েছে। এদিন ১৮৩ শিক্ষার্থীদের মাঝে ৭লাখ ৭২হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
শিবা/জামান
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ সরকারি বাঙলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ৩৩ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। কমিটিতে মো. ফয়েজ আহমেদ নিজুকে সভাপতি ও রুবেল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।
বুধবার (২৭ মার্চ) ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কমিটিতে সহ-সভাপতি হয়েছেন— আক্তারুজ্জামান হাওলাদার হাফিজ, সাইফুল বাদশা, মো. সাদ্দাম হোসেন, মো. রাসেল হাওলাদার, ফরহাদ হোসেন রানা, কাউসার আহমেদ জনি, মো. রাসেল মোল্লা, রবিউল আউয়াল সানি, ইসরাত খান বাবু, মো. আরিফ হোসেন, মো. আল-আমিন মজুমদার, কাজী অমিত, মো. শাহরিয়ার আল ইমাম সাগর, মো. শাহরিয়ার নাফিজ সজীব, মো. জিয়ারুল ইসলাম, মো. রবিউল হাসান, বিপ্লব মীর উজ্জ্বল, মোহাম্মদ শামীম ও হযরত আলী হিমু।
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন— মো. আক্তার হোসেন, মো. হামিদুল্লাহ জিহাদ, মো. সাখাওয়াত হোসেন অর্নব, সোহাগ খান, মো. শিপন শিকদার ও মো. মাহাবুব আলম।
এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে— শরিফুল ইসলাম সাগর, মিঠুন হালদার আকাশ, মেহেদী হাসান, সালাহউদ্দীন সরকার, মো. শফিকুর রহমান ও আদনান হাবিব অল ইন।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৮/০৩/২০২৪
ঢাকাঃ দশম শ্রেণির পড়ালেখা শেষে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। তবে নতুন শিক্ষাক্রমে এ পাবলিক পরীক্ষার নাম পরিবর্তন করা হতে পারে। নতুন নাম কি হবে তা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।
- শুধু দশমের পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে মাধ্যমিকের পাবলিক পরীক্ষা
- প্রতিটি বিষয়ে এক কর্মদিবসে মূল্যায়ন হবে পাঁচ ঘণ্টায়
- নম্বর নয়, রিপোর্ট কার্ডে শিখনকালীন মূল্যায়ন ও পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়নের ফল
- তিন বিষয়ে বেশি খারাপ করলে কলেজে উত্তীর্ণ নয়
- পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কাঠামোর সঙ্গে মিল রেখে বিদ্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেণির মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হবে
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী দশম শ্রেণি শেষে মাধ্যমিকে যে পাবলিক পরীক্ষা বা মূল্যায়ন হবে, তাতে লিখিত পরীক্ষাও থাকছে। প্রকল্পভিত্তিক কাজ, অ্যাসাইনমেন্ট সমস্যার সমাধান ইত্যাদির পাশাপাশি একটি অংশের মূল্যায়ন হবে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে। তবে এই লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তর দেওয়ার ধরন এখনকার মতো মুখস্থনির্ভর হবে না। একজন শিক্ষার্থী যেসব অভিজ্ঞতা অর্জন করবে, সেগুলোই মূলত সৃজনশীল উপায়ে লিখতে বলা হবে। এ জন্য প্রশ্নও করা হবে তার আলোকে।
নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) পাবলিক পরীক্ষার যে মূল্যায়ন কাঠামোর খসড়া করেছে, তাতে এভাবে লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এ বছর যারা নবম শ্রেণিতে পড়ছে, তারাই নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রথমবারের মতো পাবলিক পরীক্ষা দেবে। আগামী বছর দশম শ্রেণি শেষ করে তারা এই পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেবে। এ জন্য চলতি বছরের শেষে পরীক্ষামূলকভাবে পাবলিক পরীক্ষার আদলে নবম শ্রেণির বার্ষিক মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
এনসিটিবি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এখন এই খসড়ার ভিত্তিতে মূল্যায়ন কাঠামো চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাবলিক পরীক্ষাগুলো হয় শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীনে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর সমন্বয় কমিটির প্রধান ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার বলেন, মূল্যায়নপদ্ধতি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলাপ–আলোচনা চলছে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি ভালো কিছু হবে বলে তাঁরা আশা করছেন।
গত বছর থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। প্রথম বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন এই শিক্ষাক্রম শুরু হয়। আর এ বছর নতুন করে দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতেও চালু হয়েছে এই শিক্ষাক্রম। পর্যায়ক্রমে ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে চালু হবে নতুন শিক্ষাক্রম। এই শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বড় অংশ হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিকভাবে (শিক্ষাকালীন)। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পুরোটাই মূল্যায়ন হবে সারা বছর ধরে চলা বিভিন্ন ধরনের শিখন কার্যক্রমের ভিত্তিতে। চতুর্থ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত কিছু অংশের মূল্যায়ন হবে শিখনকালীন এবং বাকি অংশের মূল্যায়ন হবে সামষ্টিকভাবে, মানে পরীক্ষার ভিত্তিতে।
নতুন শিক্ষাক্রমে মূল্যায়ন কাঠামো নিয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অস্পষ্টতা আছে। অভিভাবকদের একটি অংশ মূল্যায়নে লিখিত পরীক্ষা রাখার দাবি জানিয়ে আসছে। এমন অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে মূল্যায়ন কাঠামোয় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে আসছিল। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নপদ্ধতি চূড়ান্ত করতে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটিও করে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে মূল্যায়নপদ্ধতির খসড়া তৈরি করেছে এনসিটিবি। সেখানে নতুন শিক্ষাক্রমের ভিত্তিতে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেটের মতো পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কেমন করে হবে, সেটি বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে।
জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেন, তাঁরা মূল্যায়ন কাঠামোর খসড়াটি নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নপদ্ধতি চূড়ান্ত করার জন্য গঠিত কমিটির সামনে ইতিমধ্যে উপস্থাপন করেছেন। তাঁরা আশা করছেন, খুব তাড়াতাড়িই সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে এটি চূড়ান্ত হবে।
দশম শ্রেণি শেষে পাবলিক পরীক্ষার নাম কী
এনসিটিবির সূত্রমতে, দশম শ্রেণি শেষে হবে এই পাবলিক পরীক্ষা। তবে নামটি এখনকার মতো মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষাও থাকতে পারে, আবার ভিন্ন নামও হতে পারে। নামের বিষয়টি এখনো ঠিক হয়নি। এত দিন নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে এসএসসি পরীক্ষা হতো। নতুন শিক্ষাক্রমে শুধু দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে হবে এই মূল্যায়ন বা পরীক্ষা। ১০টি বিষয়ের প্রতিটির ওপরই হবে এই মূল্যায়ন। এর মধ্যে একটি অংশের মূল্যায়ন হবে বিদ্যালয়েই শিখনকালীন। বাকি আরেকটি অংশের মূল্যায়ন হবে কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীন। এখনকার মতোই কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা ঠিক করে হবে এই পরীক্ষা। শিখনকালীন ও পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন সমান গুরুত্ব পাবে।
মূল্যায়নের খসড়া অনুযায়ী, কেন্দ্রীয়ভাবে যে পরীক্ষা বা মূল্যায়ন কার্যক্রম হবে, তাতে প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়ন হবে এক কর্মদিবসের সর্বোচ্চ পাঁচ ঘণ্টায়। বিরতি দিয়ে হবে এই পরীক্ষা। এর মধ্যে একটি অংশের মূল্যায়নে অনুসন্ধান, প্রদর্শন, মডেল তৈরি, উপস্থাপন, পরীক্ষণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ইত্যাদি বিষয় থাকবে। মানে হাতে-কলমে শেখার বিষয়টি মূল্যায়ন করা হবে। আরেকটি অংশে থাকবে লিখিত পরীক্ষা। সেখানে লিখিত উত্তরপত্র ব্যবহার করা হবে। লিখিত পরীক্ষার অংশ বিষয়ভেদে এক ঘণ্টা থেকে দুই ঘণ্টাও হতে পারে। সময়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কাঠামোর সঙ্গে মিল রেখে বিদ্যালয়ে বিভিন্ন শ্রেণিতে মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হবে। বিভিন্ন শ্রেণিতে বছরজুড়ে শিখনকালীন মূল্যায়নের পাশাপাশি বছরে দুটি সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। এর মধ্যে একটি হবে শিক্ষাবর্ষের ৬ মাস পর এবং আরেকটি হবে ১২ মাস পর। বিদ্যালয়ের এসব মূল্যায়নেও এক দিনে এক বিষয়ের মূল্যায়ন হবে। মূলত স্কুল সময়টিকে বিবেচনায় নিয়ে পাঁচ ঘণ্টার বিষয়টি ঠিক করা হয়েছে।
নতুন শিক্ষাক্রম ও মূল্যায়নপদ্ধতি তৈরির সঙ্গে যুক্ত আছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম উন্নয়ন ও পরিমার্জন কোর কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) অধ্যাপক এম তারিক আহসান। তিনি বলেন, নতুন পদ্ধতির মূল্যায়নে একটি অংশে লিখিত পরীক্ষা থাকলেও এখনকার মতো মুখস্থনির্ভর প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। একজন শিক্ষার্থী বিভিন্ন বিষয়ে কতটুকু পারদর্শিতা অর্জন করতে পারছে, সেটিই মূলত সৃজনশীল উপায়ে লিখতে হবে। এ জন্য প্রশ্নপত্রের পদ্ধতিও হবে ভিন্ন।
অধ্যাপক এম তারিক আহসান বলেন, প্রতিটি বিষয়ে এক কর্মদিবসের পাঁচ ঘণ্টায় মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্তটি এসেছে বাস্তবতার ভিত্তিতে। কারণ, ইতিমধ্যে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে ছয় ঘণ্টা ধরে সামষ্টিক মূল্যায়ন পরিচালনা করা হয়েছিল। এমনকি একটি বিষয়ে একাধিক দিন এবং একই দিনে একাধিক বিষয়ে মূল্যায়ন কার্যক্রমও হয়েছে। তাতে শিক্ষার্থীদের ওপর কিছুটা চাপ পড়ে। সেটি বিবেচনায় নিয়ে এক দিনে এক বিষয়ে পাঁচ ঘণ্টায় মূল্যায়ন করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। এটি এমনভাবে করা হচ্ছে তাতে শিক্ষার্থীরা চাপ অনুভব করবে না। আর এই পাঁচ ঘণ্টায় শিক্ষার্থীরা কেবল লিখিত পরীক্ষাও দেবে না। তারা নানা রকম হাতে–কলমে কাজেও নিয়োজিত থাকবে এবং বিরতিও থাকবে।
যেভাবে প্রশ্নপত্র তৈরি হবে
এনসিটিবির খসড়া মূল্যায়ন কাঠামো অনুযায়ী, বরাদ্দ করা সময় এবং শিক্ষার্থীর সক্ষমতা বিবেচনা করে বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নপত্র তৈরি হবে। শিক্ষা বোর্ডের নির্বাচিত ও প্রশিক্ষিত বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নপত্র প্রণয়নকারী ও পরিশোধনকারীরা (মডারেটর) প্রয়োজনীয় নির্দেশনা, চেক লিস্টসহ প্রশ্নপত্র তৈরি করবেন। এই চেক লিস্টে দুটি অংশ থাকবে। পর্যবেক্ষণ ছক, যা প্রত্যাবেক্ষক (পরীক্ষার কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক) কেন্দ্রে শিক্ষার্থীর পারদর্শিতা (উপস্থাপন, প্রদর্শনী ইত্যাদি) পর্যবেক্ষণ করে একটি অংশ পূরণ করবেন। আরেকটি অংশ পরীক্ষক লিখিত মূল্যায়ন করে পূরণ করবেন।
পরীক্ষক কোনো শিক্ষার্থীর পর্যবেক্ষণ ছকে প্রাপ্ত তথ্য এবং লিখিত উত্তরপত্র মূল্যায়ন ছকের তথ্য বিবেচনা করে নৈপুণ্য অ্যাপের (মূল্যায়নের ফলাফলের তথ্য সংরক্ষণ হয় এই অ্যাপে) পারদর্শিতার নির্দেশকে (পিআই) ইনপুট দেবেন। তাতে এখনকার মতো নম্বর দেওয়ার ব্যবস্থা নেই।
এনসিটিবি বলছে, প্রতিটি পরীক্ষার শুরুতে শিক্ষার্থীর কী কী পারদর্শিতা মূল্যায়ন করা হবে, তা দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক শিক্ষার্থীদের স্পষ্ট জানিয়ে দেবেন। বিষয়ের ভিন্নতা অনুযায়ী কাগজ, পরীক্ষণ, মডেল, নকশা, গ্রাফ ইত্যাদি তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের ব্যবস্থা থাকবে পরীক্ষার কেন্দ্রে। শিক্ষা বোর্ডই কেন্দ্র ঠিক করবে। তবে শিক্ষার্থীদের নিজ প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্র হবে না। এখনকার মতো অন্য প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্র হবে। মোদ্দাকথা, পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থাপনার কাজটি এখনকার মতোই শিক্ষা বোর্ডগুলো করবে।
এদিকে পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আগেই ‘রিসোর্স পুল’ গঠন করা হবে। আগামী মে মাসে কর্মশালার মাধ্যমে তাদের প্রস্তুত করা হবে।
শিক্ষার্থীর বৈচিত্র্য, চাহিদা ও সক্ষমতা বিবেচনা করে মূল্যায়ন বা পরীক্ষা কার্যক্রমের কৌশলে নমনীয়তা ও বিকল্প উপায়ও রাখা হবে বলে জানিয়েছে এনসিটিবি।
নবম শ্রেণির ভিত্তিতে নিবন্ধন
এখন একজন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারবে কি না, সেটি নির্ভর করে দশম শ্রেণিতে হওয়া নির্বাচনী (টেস্ট) পরীক্ষার ভিত্তিতে। কিন্তু নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে একজন পরীক্ষার্থী দশম শ্রেণি শেষে পাবলিক পরীক্ষা দিতে পারবে কি না, সেটি নির্ভর করবে নবম শ্রেণিতে বিদ্যালয়ে হওয়া শিখনকালীন মূল্যায়নের ওপর। যদি কোনো শিক্ষার্থী নবম শ্রেণিতে শিখনকালীন মূল্যায়নে ভালো করে, তাহলে দশম শ্রেণিতে উঠবে এবং তার আলোকে নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) হবে। তারাই পাবলিক পরীক্ষা দেবে। এখনকার মতো নির্বাচনী পরীক্ষা হবে না। তবে দশম শ্রেণিতেও শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে।
এনসিটিবি বলছে, দশম শ্রেণির শিক্ষাবর্ষের শুরু থেকে এনসিটিবি প্রণীত নির্দেশিকা অনুসরণ করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকেরা শিখনকালীন মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। প্রতিটি শিখন অভিজ্ঞতা শেষে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রমাণের ভিত্তিতে পারদর্শিতার নির্দেশক (পিআই) অনুযায়ী নৈপুণ্য অ্যাপে ইনপুট দেবেন এবং প্রমাণগুলো সংরক্ষণ করবেন। তারপর শিক্ষা বোর্ড নির্বাচিত বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়নকারীরা (সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরের) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে দৈবচয়নের ভিত্তিতে নমুনা নিয়ে শিখনকালীন মূল্যায়নের প্রমাণ যাচাই করবেন।
সাত স্কেলে রিপোর্ট কার্ড
এনসিটিবি খসড়া মূল্যায়ন কাঠামো অনুযায়ী, মূল্যায়ন বা পরীক্ষা শেষ হওয়ার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ট্রান্সক্রিপ্ট ও রিপোর্ট কার্ড তৈরি হবে। ট্রান্সক্রিপ্টে একজন শিক্ষার্থী প্রতিটি বিষয়ে পারদর্শিতা কতটুকু অর্জন করল, তার তথ্য উল্লেখ থাকবে। আর রিপোর্ট কার্ডে শিখনকালীন মূল্যায়ন ও পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়নের জন্য আলাদাভাবে সাতটি স্কেলে ফলাফল প্রকাশিত হবে। সাতটি ছকের মাধ্যমে এই সাতটি স্কেল বোঝানো হয়েছে। নির্ধারিত পারদর্শিতা অনুযায়ী ছকগুলো পূরণ করা হবে। তাতে যোগ্যতা অনুযায়ী কোনো শিক্ষার্থীর ছয়টি ঘরও পূরণ হবে, আবার কারও বেলায় তা কমবেশি হবে। ধরা যাক, একজন শিক্ষার্থী নির্ধারিত সূচক অনুযায়ী ছয়টি পারদর্শিতা (পারফরম্যান্স) অর্জন করেছে, তাহলে ছয়টি ছক পূরণ করে বাকি একটি খালি রাখা হবে। এই রিপোর্ট কার্ডই সনদ হিসেবে বিবেচিত হবে।
তিন বিষয়ে বেশি খারাপ করলে কলেজে উত্তীর্ণ নয়
নতুন মূল্যায়ন কাঠামোর খসড়া তৈরির সঙ্গে যুক্ত একজন শিক্ষক বলেন, কোনো শিক্ষার্থী যদি তিনটি বিষয়ে পারদর্শিতার প্রারম্ভিক স্তরে থাকে, তাহলে তারা ওপরের ক্লাসে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে না। অর্থাৎ দশম শ্রেণি শেষে যে পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে, তাতে কোনো শিক্ষার্থী তিন বিষয়ে এমন বেশি খারাপ করলে সে কলেজে ভর্তির সুযোগ পাবে না।
শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, মূল্যায়নে মিশ্র পদ্ধতি হতে পারে। কিন্তু সেটি অবশ্যই কার্যকরভাবে করতে হবে। লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন এমনভাবে করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীর জ্ঞান, বুঝতে ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা ইত্যাদি যাচাই করা যায়। আর ধারাবাহিক মূল্যায়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সঠিকভাবে পরিচালনা করতে হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৮/০৩/২০২৪