শনিবার, ৩০শে মার্চ ২০২৪

শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ নতুন শিক্ষাক্রমে মাধ্যমিক স্তরে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়টি বাধ্যতামূলক। উচ্চমাধ্যমিক স্তরে আগে থেকেই বাধ্যতামূলক তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়টি। তবে শিক্ষক, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও কম্পিউটার ল্যাবের অভাবে বিষয়টির শিক্ষা চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে; যেন ঢাল-তলোয়ার ছাড়াই শিক্ষা। হাতে-কলমের শিক্ষার বিষয়টি শিক্ষার্থীরা উতরে যাচ্ছে মুখস্থের জোরে।

আইসিটি শিক্ষার এই সংকট উঠে এসেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) তথ্যেও। মাউশি সূত্র বলছে, অনেক সরকারি কলেজেই আইসিটি শিক্ষক নেই। কারণ, এ বিষয়ের পদই সৃষ্টি হয়েছে ২৫৫টি। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ বিষয়ে শিক্ষকের পদ সৃষ্টির প্রস্তাব চার বছর আটকে আছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। দেশের প্রায় সাড়ে আট হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম নেই। এখনো কম্পিউটার ল্যাব তৈরি হয়নি ৩ হাজার ৮৫৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। তবে ৩৬ হাজার ৮৪টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে মাউশি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দক্ষ শিক্ষক ও অবকাঠামোর সংকটে (কম্পিউটার ল্যাব, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম) মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে আইসিটি শিক্ষা চালুর মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হচ্ছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সাবেক অধ্যাপক ও শিক্ষাবিদ মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, ‘আইসিটি শিক্ষা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। আইসিটি বিষয়টি চালুর এত বছর পরও কেন শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারলাম না? এত উন্নয়ন হলেও কেন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও কম্পিউটার ল্যাব তৈরি হলো না—এ প্রশ্ন আমারও।’ তিনি বলেন, ‘যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে আইসিটি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা এমনিতেই পিছিয়ে আছি, এখনই উদ্যোগ না নিলে আরও পিছিয়ে যাব।’

২০১২ সালের জাতীয় শিক্ষাক্রমে আইসিটি বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত হয়। ওই বছরই ষষ্ঠ শ্রেণিতে এবং ২০১৩ সালে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে আইসিটি বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়। অথচ এখনো সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক (আইসিটি) পদ সৃষ্টি হয়নি। সরকারি কলেজে ২০১৬ সালে মাত্র ২৫৫টি পদ সৃষ্টি হয়। বেসরকারি কলেজে এ বিষয়ের পদ সৃষ্টি হয় ২০১৮ সালে।

মাউশি সূত্র জানায়, ২০২০ সালে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আইসিটি শিক্ষকের পদ সৃষ্টির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেওয়া হলেও এখনো সুরাহা হয়নি। সরকারি কলেজে ২০১৬ সালের পর থেকে আইসিটি শিক্ষকের নতুন কোনো পদ সৃষ্টি হয়নি।

বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) ‘বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান-২০২৩’-এর খসড়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে ২৩ হাজার ৭৮৯টি। এর মধ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয় (ষষ্ঠ থেকে দশম) ১৮ হাজার ৯৬৮টি এবং স্কুল অ্যান্ড কলেজ ১ হাজার ৪৮০টি। কলেজ রয়েছে ৩ হাজার ৩৪১টি। মাদ্রাসা রয়েছে ৯ হাজার ২৫৯টি।

কুমিল্লার গৌরীপুরের গৌরীপুর মুন্সি ফজলুর রহমান সরকারি কলেজে সাত বছর আগে আইসিটি বিষয়টি চালু হলেও এখনো শিক্ষক নিয়োগ হয়নি।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষক দিয়ে কোনোমতে বিষয়টির পাঠদান চলছে। কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক খন্দকার মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান  বলেন, অন্য বিভাগের শিক্ষক দিয়ে চালানোয় কিছুটা হলেও প্রকৃত আইসিটি শিক্ষা থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাউশির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, শিক্ষা ক্যাডারের সাড়ে ১২ হাজার পদ সৃষ্টির জটিলতায় আইসিটি বিষয়ের পদ সৃষ্টিও আটকে গেছে। কারণ, একসঙ্গে সব কলেজের পদ সৃষ্টি হবে এ আশায় পৃথকভাবে কোনো কলেজে আইসিটি বিষয়ের পদ সৃষ্টি হয়নি। তিনি এ জন্য আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে দায়ী করে বলেন, শিক্ষক না থাকায় কলেজগুলোতে আইসিটি শিক্ষার অবস্থা শোচনীয়।

ময়মনসিংহ নগরীর নাসিরাবাদ কলেজিয়েট স্কুলে শিক্ষার্থী প্রায় ৭০০, আইসিটি শিক্ষক ১ জন। ১১টি কম্পিউটারের মধ্যে ৮টিই অকেজো। তিনটি দিয়ে চলছে শিক্ষা। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষকস্বল্পতার বিষয়টি কর্তৃপক্ষও জানে। একজন শিক্ষক দিয়ে আইসিটি ক্লাস চালানো খুব কষ্টকর।

সম্প্রতি সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের তথ্য সংগ্রহ করে মাউশি। এর মধ্যে ১১ জেলার তথ্য বলছে, ১ হাজার ৩৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম নেই। একটি করে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম আছে ২ হাজার ৩৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এই জেলাগুলো হলো মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, যশোর, ময়মনসিংহ ও গোপালগঞ্জ।

মাউশির এক কর্মকর্তা জানান, প্রথম পর্যায়ে ১১ জেলার তথ্য চূড়ান্ত হয়েছে। এসব জেলায় শিগগির মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। অন্যান্য জেলার তথ্য যাচাই-বাছাই চলছে।

মাউশির অধীনে পরিচালিত আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন প্রকল্পের পরিচালক অধ্যাপক মো. শাহেদুল কবির বলেন, এ প্রকল্পের অধীনে ৩৬ হাজার ৮৪টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপন করা হবে। প্রথম পর্যায়ে ১১ জেলায় পাঁচ হাজার মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম করা হবে।

ব্যানবেইসের ২০২৩ সালের খসড়া প্রতিবেদন বলছে, দেশের ৩ হাজার ৮৫৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ নেই। এর মধ্যে বিদ্যালয় ২ হাজার ২২১টি, কলেজ ১৭৬টি ও মাদ্রাসা ১ হাজার ৪৬১টি।

মুখস্থবিদ্যায় নির্ভরতা

জানা যায়, বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক না থাকায় বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অন্যান্য বিষয়ের শিক্ষকেরা আইসিটি ও ডিজিটালপ্রযুক্তি বিষয়টি পড়াচ্ছেন। তাঁরা কয়েক মাসের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কিছু প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারিক ক্লাস নিয়মিত হয় না। আবার কিছু প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত এ বিষয়ে ক্লাসই হয় না। অন্য বিষয়ের হওয়ায় শিক্ষকেরাও বেশি জোর দেন মুখস্থবিদ্যায়। হাতে-কলমে না শিখে শিক্ষার্থীরাও আইসিটি বিষয়ে পাস করার জন্য লিখিত অংশের ওপর বেশি জোর দিচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মুন্সিগঞ্জের এক কলেজশিক্ষক বলেন, তিনি অন্য বিষয়ের শিক্ষক হলেও কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আইসিটি ক্লাস নিচ্ছেন। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষার ওপর জোর দেওয়া হয়।

ফেনীর একটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী বলেন, তাঁদের আইসিটির ব্যবহারিক হয় না। শিক্ষকেরা মুখস্থ করতে বলেন।

সার্বিক বিষয়ে ২৫ মার্চ শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, মাউশির একটি প্রকল্পের অধীনে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অন্যান্য সমস্যা সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আজকের পত্রিকা

গোপালগঞ্জঃ জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ৪৬ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কারসহ ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা ও কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) অনুষ্ঠিত এ পরীক্ষায় মোবাইল ও ডিভাইস ব্যবহারসহ বিভিন্ন অসদুপায় অবলম্বন করার দায়ে ওই শিক্ষার্থীদের দণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ডিভাইস ব্যবহারে পরীক্ষার্থীদের সহযোগিতা করায় পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে থেকে ২ জনকে যথাক্রমে ১০ দিন ও ১ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

৪৬ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৬ জনকে ১ মাস, ২ জনকে ২০ দিন, ২ জনকে ১০ দিন ও ১ জনকে ৩ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ৯ জনকে বিভিন্ন অংকে জরিমানা ও ৬ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শেখ শামছুল আরেফীন জানান, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জেলার ২১টি কেন্দ্রে সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় ১০ হাজার ৯১২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলার বাহিনীর তৎপরতায় অসদুপায় অবলম্বনসহ বিভিন্ন অপরাধে ৪৬ জন পরীক্ষার্থী ও দুই সহযোগীকে দণ্ডের আওতায় আনা হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/৩০/০৩/২০২৪

শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ চরম বৈষম্যের শিকার বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ১৩তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আড়াই হাজারের বেশি নিবন্ধনধারী। তাদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় থাকলেও গত ১১ মাসে কোনও প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করেনি এনটিআরসিএ।

চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, রায় বাস্তবায়নে এনটিআরসিএ চরম উদাসীনতা দেখাচ্ছে। বিগত ১১ মাস ধরে আমরা আপিল ডিভিশনের রায়কে সম্মান জানিয়ে সেটি বাস্তবায়নের জন্য বারবার আহ্বান করেছি। রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ সুপারিশের অনুরোধ জানিয়েছি, আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু আজ অবধি কোনও পদক্ষেপ নেয়নি এনটিআরসিএ। আর সে কারণে এই আড়াই হাজারের বেশি প্রার্থীদের মধ্যে অনেকে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুনকরে নিয়োগ নিয়েছেন। আর আমরা এখনও নিয়োগ পাইনি, হতাশার মধ্যে দিনযাপন করছি।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের পরও ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা নিয়োগের সুপারিশ পাননি কেন জানতে চাইলে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান মো. সাইফুল্লাহিল আজম বলেন, ‘আপিল বিভাগের রায় দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। রায় না দেখে কথা বলতে পারবো না।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালের বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা অধিকতর সংশোধন করে ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবরের নতুন সংশোধিত গেজেট এবং পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর নতুন পরিপত্র জারি করা হয়। পরিপত্র অনুযায়ী, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের উদ্দেশ্যে শিক্ষক বাছাই এবং শিক্ষক সুপারিশের ক্ষমতা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির কাছ থেকে প্রথমবার এনটিআরসিএ পায়।

সংশোধিত গেজেট এবং নতুন পরিপত্র অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। বিজ্ঞপ্তির আলোকে সর্বমোট ৫ লাখ ২৭ হাজার ৭৫৪ জন পরীক্ষার্থী ১৩তম শিক্ষার্থী নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নেয়। ওই পরীক্ষায় ২০১৭ সালের ৪ জুন সর্বমোট ১৭ হাজার ২৫৪ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়। শূন্য পদের বিপরীতে সরাসরি নিয়োগের জন্য ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের নিয়োগের জন্য নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু নিবন্ধনধারীদের নিয়োগ সুপারিশ না করায় উত্তীর্ণ ১৭ হাজার ২৫৪ জন নিবন্ধন প্রার্থীর মধ্যে ২ হাজার ২০৭ জন ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। হাইকোর্টের রায়ে প্রার্থীদের নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয় ২০২২ সালের ১ জুন। ওই রায়ের ওপর এনটিআরসিএ আপিল করলে ২০২৩ সালের ২ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়নে এনটিআরসিএ ২০২১ সালের ৩১ মার্চ তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এবং ওই বিজ্ঞপ্তিতে শূন্য পদ সংরক্ষণ করে ২ হাজার ২০৭ জনের জন্য এবং তাদের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি নিয়োগ সুপারিশ করে। তবে পদ না থাকার অজুহাত দেখিয়ে ৬৫ জন প্রার্থীকে আজও নিয়োগের সুপারিশ করেনি এনটিআরসিএ।

এদিকে ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নিয়োগের সুপারিশ পাওয়া ২ হাজার ২০৭ জনের চেয়ে বেশি নম্বর পাওয়া ২ হাজার ৫০০ জন নতুন করে রিট করেন হাইকোর্ট বিভাগে। রিটে তারা সরাসরি নিয়োগের দাবি জানান।

হাইকোর্ট বিভাগ শুনানি শেষে ২০২২ সালের ১ জুন ১৩তম ব্যাচের ২ হাজার ৫০০ জনের রিটের শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করেন। রায়ের দিন থেকে পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে নিয়োগ সুপারিশের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিপক্ষে এনটিআরসিএ লিভ টু আপিল দায়ের করে। আপিল শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ২ এপ্রিল আপিল বিভাগ রিটকারীদের পক্ষে থাকা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। ফলে হাইকোর্টর রায় অনুযায়ী আপিলের রায়ের পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে নিয়োগ সুপারিশ করার কথা, কিন্তু গত ১১ মাসেও নিয়োগের সুপারিশ করেনি এনটিআরসিএ।

শুধু তাই নয়, রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রার্থীদের পক্ষে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যানকে লিগ্যাল নোটিশ করা হলেও তার জবাব দেয়নি এনটিআরসিএ। এসব কারণে চাকরির সুপারিশ বঞ্চিত এসব প্রার্থীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।

১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সবুজ বণিকসহ প্রার্থীরা আসন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পদ সংরক্ষণ করে নিয়োগ দেওয়ার দাবি করেছেন এনটিআরসিএ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/৩০/০৩/২০২৪

শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ সরকারি কর্মচারীদের মতো পেনশনের আওতায় আসতে যাচ্ছেন দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত ৫ লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে শিক্ষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারলে বর্তমান সরকার ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে। শিক্ষকবান্ধব এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত থেকে যেন সরকার পিছপা না হয় সেজন্য শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।

জানা গেছে, গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে বেসরকারি শিক্ষকদের কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর বোর্ডের আর্থিক সংক্রান্ত এক সভায় শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরীর উপস্থিতিতে এমন প্রস্তাব তুলা হয়েছে।

সভায় এমন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করলে সরকারের অতিরিক্ত কত টাকা খরচ হবে তার সারসংক্ষেপ মন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করার জন্য একটি কমিটি করে দেওয়া হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী ছাড়াও শিক্ষা প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সভায় অংশ নেন। সভায় একজন শিক্ষক নেতা সরকারের সর্বজনীন পেনশনের মতোই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদেরও পেনশন চালুর বিষয়ে সভায় প্রস্তাব করা পর শিক্ষামন্ত্রী তাতে সায় দেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরাও চাই বেসরকারি শিক্ষকরা সরকারি কর্মচারীর মত পেনশনসহ অন্যান্য সুবিধা পাবেন। কিন্তু সরকারের সেই সক্ষমতা আছে কি না তা যাচাই বাছাই করতে হবে। একজন কমিটি করে দিচ্ছি। সেই প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো।

প্রাথমিকে প্রস্তাবে বলা হয়, অবসরের পর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা এককালীন টাকার পাশাপাশি প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পাবেন। বেসরকারি শিক্ষকরা চাকরিজীবন শেষে অবসরের পুরো টাকা একসঙ্গে পাবেন না। অবসরের অর্ধেক টাকা এককালীন পরিশোধ করা হবে। বাকি অর্ধেক টাকা তাদের পেনশন আকারে দেওয়া হবে। পেনশনের টাকা শিক্ষকরা আজীবন পাবেন। কোনো শিক্ষক মারা গেলে তার মনোনীত ব্যক্তিকে (নমিনি) পেনশনের টাকা দেওয়া হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, পেনশন চালু হলে ‘বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী পেনশন বোর্ড’ গঠন করা হবে। আর ‘বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড’ ও ‘বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট’ বিলুপ্ত হবে।

সভায় অংশ নেওয়া বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য সচিব ও স্বাধীনতা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান আলম সাজু বলেন, বেসরকারি শিক্ষকদের পেনশন চালু নিয়ে ওই সভায় আলোচনা হয়েছে। এটা বাস্তবায়ন করতে গেলে কত টাকা অতিরিক্ত লাগবে তা তথ্য চাওয়া হয়েছে। আমরা আশা করবো্, বর্তমান শিক্ষামন্ত্রীর হাত ধরেই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে।

বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ মোহাম্মদ সাদী বলেন, সরকারি কর্মচারীদের মত বেসরকারি শিক্ষকরাও পেনশন পাবেন এই স্বপ্ন দীর্ঘদিনের। সরকার সর্বজনীন পেনশন চালুর পর সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে। সম্প্রতি এক সভায় শিক্ষামন্ত্রীর আমাদের প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন।

তিনি জানান, সর্বজনীন পেনশনের আদলে বেসরকারি শিক্ষক ও কর্মচারীদেরও পেনশন চালু করা যায়। এটি বাস্তবায়ন করতে হলে অবসর বোর্ডের আইন পরিবর্তন করতে হবে। সেজন্য সভায় উচ্চ পর্যায়ের একটি কারিগরি কমিটি গঠনের প্রস্তাব উঠেছে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা ১৯৯০ সাল থেকে কল্যাণ ট্রাস্টের সুবিধা পাচ্ছেন। ২০০৫ সালে শুরু হয়েছে অবসর সুবিধা দেওয়া। এ দুই সুবিধা বাবদ তারা এককালীন অর্থ পেয়ে থাকেন। এ জন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের এমপিও অংশ থেকে চাঁদা হিসেবে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কেটে রাখা হয়।

তবে অর্থ সংকটের কারণে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট বর্তমানে ধুঁকছে। যে কারণে অবসরের পর টাকা পেতে দুই থেকে তিন বছর লেগে যাচ্ছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

চরম বৈষম্যের শিকার বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ১৩তম নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ আড়াই হাজারের বেশি নিবন্ধনধারী। তাদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় থাকলেও গত ১১ মাসে কোনও প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করেনি এনটিআরসিএ।

চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, রায় বাস্তবায়নে এনটিআরসিএ চরম উদাসীনতা দেখাচ্ছে। বিগত ১১ মাস ধরে আমরা আপিল ডিভিশনের রায়কে সম্মান জানিয়ে সেটি বাস্তবায়নের জন্য বারবার আহ্বান করেছি। রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ সুপারিশের অনুরোধ জানিয়েছি, আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু আজ অবধি কোনও পদক্ষেপ নেয়নি এনটিআরসিএ। আর সে কারণে এই আড়াই হাজারের বেশি প্রার্থীদের মধ্যে অনেকে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন করে নিয়োগ নিয়েছেন। আর আমরা এখনও নিয়োগ পাইনি, হতাশার মধ্যে দিনযাপন করছি।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের পরও ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীরা নিয়োগের সুপারিশ পাননি কেন জানতে চাইলে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান মো. সাইফুল্লাহিল আজম বলেন, ‘আপিল বিভাগের রায় দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। রায় না দেখে কথা বলতে পারবো না।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬ সালের বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা গ্রহণ ও প্রত্যয়ন বিধিমালা অধিকতর সংশোধন করে ২০১৫ সালের ২২ অক্টোবরের নতুন সংশোধিত গেজেট এবং পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর নতুন পরিপত্র জারি করা হয়। পরিপত্র অনুযায়ী, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের উদ্দেশ্যে শিক্ষক বাছাই এবং শিক্ষক সুপারিশের ক্ষমতা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির কাছ থেকে প্রথমবার এনটিআরসিএ পায়।

সংশোধিত গেজেট এবং নতুন পরিপত্র অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। বিজ্ঞপ্তির আলোকে সর্বমোট ৫ লাখ ২৭ হাজার ৭৫৪ জন পরীক্ষার্থী ১৩তম শিক্ষার্থী নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নেয়। ওই পরীক্ষায় ২০১৭ সালের ৪ জুন সর্বমোট ১৭ হাজার ২৫৪ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়। শূন্য পদের বিপরীতে সরাসরি নিয়োগের জন্য ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের নিয়োগের জন্য নির্বাচিত করা হয়। কিন্তু নিবন্ধনধারীদের নিয়োগ সুপারিশ না করায় উত্তীর্ণ ১৭ হাজার ২৫৪ জন নিবন্ধন প্রার্থীর মধ্যে ২ হাজার ২০৭ জন ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। হাইকোর্টের রায়ে প্রার্থীদের নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয় ২০২২ সালের ১ জুন। ওই রায়ের ওপর এনটিআরসিএ আপিল করলে ২০২৩ সালের ২ এপ্রিল আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়নে এনটিআরসিএ ২০২১ সালের ৩১ মার্চ তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এবং ওই বিজ্ঞপ্তিতে শূন্য পদ সংরক্ষণ করে ২ হাজার ২০৭ জনের জন্য এবং তাদের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি নিয়োগ সুপারিশ করে। তবে পদ না থাকার অজুহাত দেখিয়ে ৬৫ জন প্রার্থীকে আজও নিয়োগের সুপারিশ করেনি এনটিআরসিএ।

এদিকে ১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নিয়োগের সুপারিশ পাওয়া ২ হাজার ২০৭ জনের চেয়ে বেশি নম্বর পাওয়া ২ হাজার ৫০০ জন নতুন করে রিট করেন হাইকোর্ট বিভাগে। রিটে তারা সরাসরি নিয়োগের দাবি জানান।

হাইকোর্ট বিভাগ শুনানি শেষে ২০২২ সালের ১ জুন ১৩তম ব্যাচের ২ হাজার ৫০০ জনের রিটের শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করেন। রায়ের দিন থেকে পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে নিয়োগ সুপারিশের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট বেঞ্চ। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিপক্ষে এনটিআরসিএ লিভ টু আপিল দায়ের করে। আপিল শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ২ এপ্রিল আপিল বিভাগ রিটকারীদের পক্ষে থাকা হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। ফলে হাইকোর্টর রায় অনুযায়ী আপিলের রায়ের পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে নিয়োগ সুপারিশ করার কথা, কিন্তু গত ১১ মাসেও নিয়োগের সুপারিশ করেনি এনটিআরসিএ।

শুধু তাই নয়, রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রার্থীদের পক্ষে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যানকে লিগ্যাল নোটিশ করা হলেও তার জবাব দেয়নি এনটিআরসিএ। এসব কারণে চাকরির সুপারিশ বঞ্চিত এসব প্রার্থীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।

১৩তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সবুজ বণিকসহ প্রার্থীরা আসন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পদ সংরক্ষণ করে নিয়োগ দেওয়ার দাবি করেছেন এনটিআরসিএ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

আত্মহত্যা বা আত্মহনন হচ্ছে কোনো ব্যক্তি কর্তৃক ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের জীবন বিসর্জন দেওয়া বা স্বেচ্ছায় নিজের প্রাণনাশের প্রক্রিয়া বিশেষ। প্রতিবছর প্রায় দশ লাখ মানুষ আত্মহত্যা করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে

প্রতিবছর সারা বিশ্বে যেসব কারণে মানুষের মৃত্যু ঘটে তার মধ্যে আত্মহত্যা ত্রয়োদশতম প্রধান কারণ। বর্তমানে বাংলাদেশে এর প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। তরুণদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রভাব বেশি দেখা যাচ্ছে। সমাজে আমরা কীভাবে আত্মহত্যা প্রতিরোধ করতে পারি এ বিষয়ে কয়েকজন তরুণ শিক্ষার্থীর মতামত তুলে ধরছেন শফিক রিয়ান।

মানুষ বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যা করে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে অধিকাংশ আত্মহত্যার কারণ হতাশা ও অবসাদ। একজন হতাশাগ্রস্ত ব্যক্তি চেষ্টা করে সবার থেকে পালিয়ে বাঁচতে। এই পালানোর মাধ্যম হিসেবে আত্মহত্যা বেছে নেওয়াটা আমার মতে বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। আত্মহত্যার চিন্তা-ভাবনা থেকে মুক্তি পেতে এবং আত্মহত্যা প্রতিরোধে আমাদের কিছু করণীয় রয়েছে। বন্ধুবান্ধব, পরিবারের সদস্য, শিক্ষক, সহকর্মী বা বিশ্বস্ত ব্যক্তির সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করুন। একজন মনোবিজ্ঞানী, মনোচিকিৎসক বা মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারের সঙ্গে পরামর্শ করুন। একটি জার্নাল লেখা আপনার চিন্তা-ভাবনা এবং অনুভূতিগুলোকে স্পষ্ট করতে সাহায্য করতে পারে। পর্যাপ্ত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা আপনার মানসিক অবস্থার উন্নতি করতে পারে। শখের কাজ, ঘুরতে যাওয়া, গান শোনা, বই পড়া, প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানো ইত্যাদি আপনার মেজাজ উন্নত করতে পারে। আত্মহত্যার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তির প্রতি সহানুভূতিশীল হোন, তাদের অনুভূতিগুলোকে গুরুত্ব দিন।

আমরা পৃথিবীতে মানুষ হিসেবে জন্ম নিয়েছি এটা সবচেয়ে বড় একটা সুযোগ। এত প্রাণীর মাঝে কেবল মানুষকেই উন্নত মস্তিষ্ক, বিবেক ও চিন্তা দেওয়া হয়েছে। দুঃখ, বেদনা, হাসি, কান্না এই অনুভূতিগুলো নিয়েই জীবন। প্রকৃতি সব মানুষকে একই আসমান একই জমিন দিয়েছেন কিন্তু কেউ জীবনকে কাজে লাগাতে পারে কেউ হেরে যায় জীবনের কাছে। হেরে যাওয়া মানেই জীবন শেষ নয়। মানুষ যখন জীবনের সব আশা হারিয়ে ফেলে তখন সে আত্মহত্যার মতো ভয়ানক সিদ্ধান্তে পৌঁছায়। এই মানুষগুলোর দরকার সামাজিক, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমর্থন। জীবন খুব মূল্যবান, বেঁচে থাকাই সবচেয়ে বড় নেয়ামত। মুমূর্ষু মানুষের কাছে গেলে আমরা বুঝতে পারি নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও এক মুহূর্ত বেশি বাঁচার জন্য মানুষের আকুতি কতখানি। আত্মহত্যা প্রতিকারের লক্ষ্যে শিশুদের বিকাশের সময় তাদের এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যেন তারা সফলতার মতো ব্যর্থতাকেও মেনে নিতে পারে। কারও মধ্যে যে কোনো ধরনের মানসিক সমস্যা বা আত্মহত্যার ইঙ্গিত পেলে দ্রুত মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। বিষণ্নতা, মাদকাসক্তি, ব্যক্তিত্বের বিকার, সিজোফ্রেনিয়াসহ সব মানসিক রোগ শনাক্ত ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

২০২৩ সালের পরিসংখ্যান

আঁচল ফাউন্ডেশন তথ্য অনুযায়ী,

২০২৩ সালে যে ৫১৩ জন আত্মহত্যা করেছেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন ২২৭ জন স্কুলশিক্ষার্থী, ১৪০ জন কলেজ শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ৯৮ জন

এবং ৪৮ জন মাদরাসা শিক্ষার্থী।

তবে ২০২২ সালে সংখ্যা ছিল ৫৩২

নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা সবচেয়ে বেশি

আত্মহননকারীদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে

ঢাকা বিভাগ। এ বিভাগের অন্তত ১৪৯ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এরপর চট্টগ্রাম বিভাগের ৮৯, রাজশাহী বিভাগের ৭৭, খুলনা বিভাগের ৬৪ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। তালিকার পঞ্চম স্থানে যৌথভাবে রয়েছে বরিশাল ও রংপুর বিভাগের নাম। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৩ জন। ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৬ জন এবং সিলেট বিভাগের ১২ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

বিসিএস ক্যাডার হওয়ায় স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেলো। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের পাঠ চুকিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করার স্বপ্নপূরণ হল না আল আমিনের। মর্মান্তিক এক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কেড়ে নিল তার প্রাণ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ইংরেজি বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন আল আমিন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

আল-আমিনের বাড়ি মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলার কর্ণপাড়া গ্রামে। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের পরিবারে একমাত্র আল আমিনেরই সুযোগ হয়েছিল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে সদ্য স্নাতক পরীক্ষা শেষ করে ছুটি কাটাতে বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ইংরেজি বিভাগের স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা শেষে ছুটি কাটাতে বাড়িতে গিয়েছিলেন আল আমিন। গত মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) বিকেল চারটার দিকে বড় ভাই নয়ন তালুকদারের মোটরসাইকেল করে এক আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছিলেন আল আমিন। বড় ভাইয়ের নতুন বাইকে কিছুদিন আগেই বাইক চালানো শিখেছিলেন। আত্মীয়ের বাসায় ঈদ উপহার নিয়ে যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খুঁটির সাথে ধাক্কা খেয়ে আহত হন আল-আমিন।

পরে ওইদিনই সন্ধ্যার দিকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। পরে অবস্থার অবনতি দেখে রাত ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে রাত ২ টা থেকে সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত অপারেশন শেষে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। দুইদিন পর আজ শুক্রবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

আল আমিনের বড় ভাই নয়ন তালুকদারের সাথে কথা বলে জানা যায়, মোটরসাইকেলে করে আত্মীয়ের বাসায় যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে যান আল আমিন। হাসপাতালে নেওয়ার পর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ দেখে ওই দিনই অস্ত্রোপচার করা হয়। দুই দিন সেখানে থাকার পর আজ ভোরের দিকে মারা যান তিনি। বিকেলে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।

ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বড় ভাই নয়ন তালুকদার  বলেন, আমাদের পরিবার ও পুরো গ্রামের আইকন ছিল আল আমিন। তার স্বপ্ন ছিল পড়াশুনা শেষ করে বিসিএস ক্যাডার হবে। কয়দিন আগেই অনার্স ফাইনাল পরীক্ষা শেষে ছুটিতে বাড়িতে এসেছে সে। তার আকস্মিক মৃত্যুতে আমরা মর্মাহত।

আল আমিনের বন্ধু রফিকুল ইসলাম  বলেন, আল আমিন অমায়িক একটি ছেলে ছিল। প্রথম বর্ষের শুরুর দিকে শাহজালাল হলে এবং শেষের দিকে আব্দুর রব হলে ছিল। বিভাগের সবার সাথে সে মিলেমিশে চলতো। রাজনীতির সাথে ওভাবে জড়িত ছিল না। তার এমন দুর্ঘটনায় আমরা সবাই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছি।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

চৌগাছা কয়রাপাড়া হাফিজিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান সাজিদকে (১৩) পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ ওঠেছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে। গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ওই মাদরাসার সিসিটিভি ফুটেজে নির্যাতনের ভিডিও দেখে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত শিক্ষক আক্তারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার এবং পরে যশোর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে গিয়ে জানালে ছেলের বাবা চৌগাছা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। সোহানুর চৌগাছা সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ কয়রাপাড়া হাফেজিয়া মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র এবং লস্কারপুর গ্রামের আকবর আলীর ছেলে। আক্তারুজ্জামান উপজেলার স্বরূপদাহ ইউনিয়নের গয়ড়া গ্রামের বাসিন্দা।

সিসিটিভি ফুটেজের ভিডিওতে দেখা যায়, শিশুটিকে মাদরাসা শিক্ষক একের পর এক বেত্রাঘাত করছেন। এমনকি লাথিও মারছেন। এ সময় শিশুটি বারবার শিক্ষকের পা জড়িয়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করে। তবুও ক্ষ্যান্ত হননি শিক্ষক। এদিকে শিক্ষককে গ্রেপ্তারের পর ৩১ সেকেন্ডের ও ১মিনিটের বেশি দুটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

সোহানুর রহমান সাজিদ জানান, মোবাইল ফোনে এসএমএস দেওয়া নিয়ে তার ওপর ক্ষিপ্ত হন কয়রাপাড়া হাফিজিয়া মাদরাসার শিক্ষক আখতারুজ্জামান।

এতে তাকে বেধড়ক পেটান তিনি। পা ধরে বারবার ক্ষমা চাইলে বুক বরাবর লাথিও মারেন। সাজিদের বাবা আলী আকবর বলেন, ছেলেকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছেন শিক্ষক আখতারুজ্জামান। এ ব্যাপারে চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে লিখিত পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে জালিয়াতি রোধে বুয়েট কর্তৃক উদ্ভাবিত ডিভাইস সনাক্তকরণ সিস্টেমের কার্যকর প্রয়োগের ফলে অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে এসেছে।

শুক্রবার তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় এ চিত্র ফুটে উঠেছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ জানান, প্রথম ধাপের পরীক্ষায় কিছু ক্ষেত্রে অসদুপায় অবলম্বনের চেষ্টা নজরে আসায় মন্ত্রণালয় এ ধরনের অপপ্রয়াস রোধকল্পে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। ফলে ২য় ধাপের পরীক্ষায় এ ধরনের অভিযোগ খুব স্বল্প পরিমাণে এসেছে।

তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় এ ধরনের অভিযোগ যাতে না ওঠে সে জন্য কার্যকর পন্থা খুঁজে বের করতে বুয়েটের আইআইসিটি বিভাগের অধ্যাপক এস এম লুৎফুল কবিরকে দায়িত্ব প্রদান দেয়া হয়। বুয়েট ইনোভেশন টিম স্বল্পসময়ে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে অসদুপায় অবলম্বন সনাক্তকরণে সহজ ও কার্যকর সিস্টেম উদ্ভাবন করে। এতে মন্ত্রণালয় আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে।
আজকের লিখিত পরীক্ষায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৫ জেলায় এ সিস্টেমের সহজ ও কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা সচিব বলেন, সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় এ ধরনের সিস্টেম চালু করা গেলে ডিভাইসমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা গ্রহণ সম্ভব হবে। তখন কেউ পরীক্ষা নিয়ে কোন অভিযোগ তোলার সুযোগ পাবে না।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সহকারী শিক্ষক নিয়োগে পরীক্ষা-২০২৩ এর ৩য় ও শেষ ধাপের লিখিত পরীক্ষা (ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ-০৩ টি পার্বত্য জেলা ব্যতীত) অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ৪৯ হাজার ২ শত ৯৩ জন।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

ভরদুপুরের কড়া রোদ। গ্রীষ্মের গরমে হাঁসফাঁস দশা। এসি ছাড়া টিকে থাকাই দায়। কিন্তু এমন এক স্কুল আছে, যেখানে বাইরে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হোক কিংবা ৫ ডিগ্রি—ভেতরের তাপমাত্রা সব সময়ই এক। সেটাও কোনো প্রকার এয়ার কন্ডিশন (এসি) ছাড়া। বুরকিনা ফাসোর গানদো প্রাইমারি স্কুল এমনই এক স্কুল, যেখানে এসি ছাড়াই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

স্থপতিদের জন্য পশ্চিম আফ্রিকার বুরকিনা ফাসো দেশটা একটা চ্যালেঞ্জই বটে। সীমিত বাজেটে বৈরী আবহাওয়ায় পানি-বিদ্যুৎ-উপকরণের সংকট মাথায় নিয়ে কোনো কাজ হাতে নেওয়া চাট্টিখানি কথা না। শীতকালে যেখানে তাপমাত্রা নেমে যায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, গ্রীষ্মকালে সেখানের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি। এ আবহাওয়ার মাঝেও কোনো ধরনের এয়ার কন্ডিশনার ছাড়াই তৈরি হয়েছে এক স্কুল। আবহাওয়া যেমনই হোক, স্কুলের তাপমাত্রা সেখানে থাকে একই।

স্থপতি দিবেদো ফ্রান্সিস কেরের ওপর এমনই একটা স্কুল তৈরির দায়িত্ব পড়েছিল। গানদোর ছোট্ট গ্রামে কেরের বেরে ওঠা। যেখানে না আছে বিদ্যুৎ, না আছে খাওয়ার পানির ব্যবস্থা। মাতৃভূমি বুরকিনা ফাসোর বৈরী আবহাওয়া আর সংগ্রাম নিজ চোখে দেখে বড় হয়েছেন তিনি। তাপমাত্রার হুটহাট পরিবর্তন তাঁর খুব ভালোভাবেই জানা আছে। গ্রামের প্রথম সন্তান হিসেবে কলেজে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু কলেজে ভর্তি হওয়ার মতো আর্থিক সঙ্গতি ছিল না। গ্রামের অনেকে মিলে টাকা তুলে কেরেকে কলেজে ভর্তি করেছিলেন। সেখান থেকে বৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য চলে গেলেন জার্মানি।

জার্মানির টেকনিক্যাল স্কুল অব বার্লিনে ভর্তি হন কেরে। সেখানে তাঁর শেষ বর্ষের প্রজেক্ট ছিল নিজের গ্রামের জন্য একটি স্কুল তৈরি করা। যে গ্রাম তাঁকে এত কিছু দিয়েছে, সেই গ্রামের শিশুদের জন্য স্কুল তৈরি করবেন, এর থেকে আনন্দের আর কীই–বা হতে পারে? কিন্তু স্কুল তৈরি করতে এসেই ধরতে পারলেন সমস্যাটি।

আবহাওয়া ও ঋতু পরিবর্তনের কারণে স্কুলের ভেতরে একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা বজায় রাখা বেশ কঠিন। গ্রীষ্মকালে শিক্ষার্থীদের জন্য যেমন প্রয়োজন পড়বে এয়ার কন্ডিশনারের, তেমনই শীতকালে দরকার হবে হিটার। বুরকিনা ফাসোর এক অজপাড়াগাঁ, যেখানে খাবারের পানির সুব্যবস্থাই ঠিকমতো গড়ে ওঠেনি, সেখানে এসি আর হিটারের ব্যবস্থা করবে কে?

স্কুল তৈরির জন্য কেরে বেছে নিয়েছিলেন সবচেয়ে সহজলভ্য উপকরণ—মাটি। এক সাক্ষাৎকারে কেরে বলেন, ‘প্রথম প্রথম আমাকে সবাই প্রশ্ন করছিল, জার্মানিতে কাচের বিল্ডিং নিয়ে পড়াশোনা করে কেন আমি মাটি দিয়ে স্কুল বানাচ্ছি? সবাইকে বোঝাতে হয়েছে, কেন মাটি দিয়ে তৈরি করা বিল্ডিং এই পরিবেশের জন্য মানানসই।’

স্কুলের মাঝে থেকে দেয়াল পুরোটাই বানানো হয়েছে মাটি দিয়ে। লাল ইট দিয়ে ভবন তোলা হলেও টেকসই, মজবুত করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে কংক্রিট। ভবনটি মাটির হলেও স্কুলের ছাদের জন্য কেরের পছন্দ ছিল মেটাল। ২০০০ সালে যখন প্রথম স্কুলের কাজ শুরু হয়, গ্রামের অনেকেই এগিয়ে এসেছিল কাজ করতে। গ্রামের স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় এক বছরের মধ্যেই দাঁড়িয়ে যায় স্কুলটি।

মাটির তৈরি বিল্ডিং সহজে তাপমাত্রা ঢুকতে বা বের হতে দেয় না। যে কারণে রুমের তাপমাত্রা বছরের বেশির ভাগ সময় একই রকম থাকে। এ ছাড়া বিল্ডিংয়ের ছাদ এবং দেয়ালের মধ্যে সামান্য কিছু জায়গা ফাঁকা রেখেছেন তিনি। এতে গ্রীষ্মকালে গরম বাতাস সহজে বেরিয়ে যেতে পারে। ঠান্ডা বাতাস সে জায়গা দখল করে সহজেই রুমকে ঠান্ডা করে ফেলে। মেটালের তৈরি ছাদকে দুই পাশে বাড়িয়ে দিয়েছেন। এতে সূর্যের আলো সরাসরি বিল্ডিংয়ের গায়ে পড়ে না। ফলে বিল্ডিং সহজে গরমও হয় না। এ ছাড়া গ্রীষ্মকালে সাধারণ মানুষ বারান্দার ছায়ায় সময় কাটাতে পারে।

মাটির তৈরি স্কুল নতুন বিপ্লব শুরু করেছে আফ্রিকাজুড়ে। একে একে বুরকিনা ফাসো থেকে মালি, টোগো, কেনিয়া, মোজাম্বিক থেকে সুদান; পুরো আফ্রিকায় ছড়িয়ে গেছে আর্কিটেক্ট ফ্রান্সিস কেরের কাজ। আবহাওয়া ও তাপমাত্রাকে মাথায় রেখে তৈরি হচ্ছে মাটির স্কুল। ফ্রান্সিস কেরে সরাসরি তত্ত্বাবধানে তৈরি হয়েছে কয়েকটি স্কুল। ২০২২ সালে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে স্থপতিদের সবচেয়ে বড় পুরস্কার প্রিট্‌জকার-এ ভূষিত হন ফ্রান্সিস কেরে।

সূত্র: গার্ডিয়ান

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

মধ্যরাতে বহিরাগতদের প্রবেশের প্রতিবাদে গতকাল উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবিতে করেন বিক্ষোভ, সংবাদ সম্মেলন। অবস্থান নেন প্রশাসনিক ভবনের সামনে। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে তাদের বিক্ষোভ। সেখানেই তারা ইফতার করেন। ইফতারের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপাচার্য সেখানে যান। চলমান আন্দোলন গতকালের মতো শেষ হলেও শিক্ষার্থীরা তাদের বেঁধে দেওয়া সময়ের ব্যাপারে অনড়। আজ সকাল ৮টায় তারা আবারও বুয়েট শহীদ মিনারে জড়ো হবেন।

২০১৯ সালে শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার পর ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয় বুয়েট ক্যাম্পাসে। বুধবার মধ্যরাতে শীর্ষস্থানীয় নেতাদের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের একটি বহর বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। গতকাল বিকালে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে আজ ও পরের দিনের টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দেন।

পাশাপাশি পাঁচ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো : বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে বুধবার (২৮ মার্চ) মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ রাব্বিকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং হলের আসন বাতিল; ওই ঘটনায় রাব্বির সঙ্গে বুয়েটের বাকি যে শিক্ষার্থীরা জড়িত ছিলেন, তাদের বিভিন্ন মেয়াদে হল এবং টার্ম বহিষ্কার; যেসব বহিরাগত রাজনৈতিক ব্যক্তি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না এবং তারা কেন কীভাবে প্রবেশ করার অনুমতি পেলেন, সে ব্যাপারে বুয়েট প্রশাসনের সুস্পষ্ট সদুত্তর ও জবাবদিহি; প্রথম দুটি দাবি দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন না হলে ডিএসডব্লিউর পদত্যাগ এবং আন্দোলনরত বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনোরকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার বিষয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া।

সংবাদ সম্মেলনের পর শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বুয়েটের ড. এম এ রশীদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ চলে। সেখানেই তারা ইফতার করেন। ইফতারের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে বুয়েটের উপাচার্য সত্যপ্রসাদ মজুমদার সেখানে যান। এ সময় সহ-উপাচার্য আবদুল জব্বার খান, ডিএসডব্লিউ মিজানুর রহমান প্রমুখ তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

উপাচার্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা যে লিখিত দাবি দিয়েছ, সেখানে কাউকে অ্যাড্রেস করা হয়নি। কারও নাম নেই, স্বাক্ষরও নেই। এটার ওপর কীভাবে ব্যবস্থা নেব? তারপরও আমি নিজে এসে কথা বলছি, কারণ তোমরা আমার ছাত্র। ২৮ মার্চ মধ্যরাতে ঘটনার পর আমাদের কাছে রিপোর্ট করতে পারতে।’

এরপর উপাচার্য শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কথা বলেন। তিনি ইমতিয়াজ রাব্বির হলের সিট বাতিল করার ঘোষণা দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা চিৎকার করে ওঠেন। উপাচার্য বলেন, কাউকে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। বহিষ্কারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ আজই গ্রহণ করা হবে। দ্বিতীয় দাবি প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, সেটির বিষয়ে তদন্ত কমিটি আজই করা হবে। চতুর্থ দাবি অনুযায়ী বুয়েটে প্রবেশ করা বহিরাগতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তারা কারা, খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিটি করা হবে।

একপর্যায়ে আরেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, ফটক খুলে দিতে ডিএসডব্লিউর অনুমতি ছিল। এ সময় উপাচার্যের সঙ্গে থাকা ডিএসডব্লিউ মিজানুর রহমান প্রতিবাদ করলে শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে শুরু করেন।

শিক্ষার্থীরা থামলে উপাচার্য বলেন, অনুমতি ছিল কি ছিল না, সেটা তদন্ত কমিটি দেখবে। তখন ডিএসডব্লিউ বলেন, ‘আমি কাউকে এ ধরনের অনুমতি দিইনি। আন্দাজে কথা বললে হবে না। বুয়েট ক্যাফেটেরিয়া বা সেমিনার কক্ষ ব্যবহার করতে ডিএসডব্লিউ কার্যালয়ের মাধ্যমে অনুমতি নিতে হয়। তোমরা যে ঘটনার কথা বলছ, সেখানে কার্যালয়ের জন্য কেউ আবেদন করেনি, কাউকে অনুমতিও দেওয়া হয়নি।’ তিনি বলেন, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্ব ডিএসডব্লিউর নয়।

তখন উপাচার্য শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, এক নম্বর দাবির বিষয়ে প্রজ্ঞাপন দেওয়া হবে। দুই নম্বর দাবি অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এজন্য উপাচার্য সময় চান এবং শিক্ষার্থীদের আজ পরীক্ষায় বসতে অনুরোধ জানান। এরপর উপাচার্যসহ পদস্থ শিক্ষকরা চলে যান। পরে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে গতকালের মতো বিক্ষোভ শেষ করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের দুইটি সেতু চার বছর ধরে ভেঙে পড়ে থাকলেও নির্বিকার উপজেলা প্রকৌশল অফিস। স্থানীয় বাসিন্দারা ভাঙা সেতুর ওপর সাঁকো তৈরি করে তা দিয়ে চলাচল করছে। খাগকান্দা থেকে নয়নাবাদ যাওয়ার জন্য পাঁচ বছর আগে নির্মিত হয় সেতু। অথচ এক বছর যেতে না যেতেই ভেঙে পড়েছে সেতু দুটি।

কান্দাপাড়া মাখরাজুল উলুম মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক মুফতি আলমগীর হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত চার বছর এই সড়কে দুটি সেতু দেবে গিয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় সেতুর ওপর বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয় সাঁকো। এ সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার লোক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। বছরের পর বছর এই সড়কে যানবাহন না চলায় সাধারণ মানুষ পড়েছেন নানামুখী বিপাকে। হাট-বাজার, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসায় যাতায়াতে দুর্ভোগের শিকার অন্তত ২০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। সাঁকো পার হতে গিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীসহ বেশ কিছু পথচারী নিচে পড়ে আহত হয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, খাগকান্দা থেকে নয়নাবাদ যাওয়ার অন্যতম সড়কে দুটি সেতু মাটিতে দেবে গিয়ে অকেজো হয়ে আছে। সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় হেঁটেই দীর্ঘ চার বছর ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন ঐ এলাকার বাসিন্দারা।

জানা গেছে, এই সেতু দিয়ে নয়নাবাদ, খাগকান্দা, নয়াপাড়া, তাতুয়াকান্দা, চৌতনকান্দা, কান্দাপাড়া, পাচালি পাড়া, হোগলাকান্দি, বঙ্গবাজারসহ কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের ১০ থেকে ১৫ হাজার লোক এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে। খাগকান্দা নয়নাবাদ এবং খাগকান্দা থেকে নয়নাবাদ পর্যন্ত সড়কের দুটি সেতু অকেজো হয়ে পড়ে আছে চার বছর যাবত্। সেতুর দুই পাশের মাটি সরে গেছে। সেতুর ওপর দিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে লোক চলাচল করতে পারলেও যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

নয়নাবাদ এলাকার এক বাসিন্দা জানান, কবি নজরুল ইসলাম কলেজ খাগকান্দা মারকাজুল কোরআন মহিলা মাদ্রাসা, নয়নাবাদ পুরুষ ও মহিলা মাদ্রাসা, খাগকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নয়নাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কান্দাপাড়া মাখরাজুল উলুম মাদ্রাসাসহ প্রায় ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থীসহ দুই ইউনিয়নের ১০ থেকে ১৫ হাজার লোক এই পথ দিয়ে চলাচল করেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। সেতু দুটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক ইসমাইল হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। চার বছর যাবত্ সেতু দুটি দেবে গেলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ কেউই কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সেতুর ওপর দিয়ে মানুষ চলাচল করার জন্য দুটি সাঁকো তৈরি করে বছরের পর বছর চলাচল করতে হচ্ছে আমাদের। জমির ফসল নিয়ে এই সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় আমাদের। ফলে নানা সমস্যায় পড়তে হয় তাদের।

খাগকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান বলেন, চার বছর যাবত্ জনগুরুত্বপূর্ণ সেতু দুটি দেবে গিয়ে বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও সংশ্লিষ্টরা কোনো নজরদারি করছেন না। আমি কয়েক বার উপজেলার মাসিক সভায় গ্রামের মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি জানালেও কেউ আমলে নেয়নি। আমি চাই সেতুগুলো মেরামত করে এলাকাবাসী দুর্ভোগ লাঘব করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।’

শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/৩০/০৩/২০২৪

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram