শিক্ষার্থীদের দক্ষতা মূল্যায়নের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস চূড়ান্ত
নিউজ ডেস্ক।।
মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের দক্ষতা মূল্যায়ন ও দুর্বলতা চিহ্নিত করার লক্ষ্যে ৩০ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস চূড়ান্ত করা হয়েছে। সিলেবাস তৈরি করে ইতোমধ্যেই তা বাস্তবায়নের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরকে পাঠিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। আগামী ১ নবেম্বর থেকেই এ সিলেবাস কার্যকর করা হচ্ছে। এই সিলেবাসের আলোকে শিক্ষার্থীদের প্রতি সপ্তাহে অন্তত একটি এ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করে তা ক্লাস শিক্ষকদের কাছে জমা দিতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ঘাটতি চিহ্নিত করতেই সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে দেয়া হবে এ্যাসাইনমেন্ট। প্রতি সপ্তাহে এই এ্যাসাইনমেন্ট দেয়া ও জমা নেয়া হবে। তবে এই মূল্যায়ন পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হওয়ার ক্ষেত্রে কোন প্রভাব ফেলবে না। করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর মাধ্যমিক স্তরে কোন বার্ষিক পরীক্ষা হচ্ছে না। পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত হবে সকল শিক্ষার্থীই।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৩০ কর্মদিবসের জন্য একটি পাঠ্যসূচী করা হয়েছে। সংক্ষিপ্ত এই পাঠ্যসূচীর ভিত্তিতে এ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে শিক্ষার্থীদের। এই মূল্যায়নের মাধ্যমে মূলত শিক্ষার্থীদের কি ঘাটতি আছে তা দেখা হবে। যাতে পরবর্তী ক্লাসে সেটা পূরণ করা যায়। শীঘ্রই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এই পাঠ্যসূচী দেয়া হবে। প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছেও তা পৌঁছে দেয়া হবে।
কর্মকর্তারা আরও বলেছেন, ১ নভেম্বর থেকে শিক্ষার্থীদের এ্যাসাইনমেন্ট দেয়ার কাজ শুরু হবে। প্রতি সপ্তাহে একটি করে এ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করে শিক্ষার্থী বা তার অভিভাবক সশরীরে বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষকদের হাতে পৌঁছে দিতে পারবেন। তবে কেউ চাইলে অনলাইনের মাধ্যমেও শিক্ষকদের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারবেন।
অধিদফতর বলছে, এ মূল্যায়ন যেন তাদের ওপর কোন মানসিক ও শারীরিক চাপ সৃষ্টি করতে না পারে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নিজেরাও যেন তাদের পাঠ অগ্রগতি ও দুর্বলতা সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে, সেজন্য সার্বিক দিক বিবেচনা করে আটটি নির্দেশনাও দিয়েছে মাউশি।
নির্দেশনার মধ্যে আছে-এনসিটিবি কর্তৃক নির্ধারিত ৩০ কর্মদিবসের সিলেবাস অনুসরণ করতে হবে। সিলেবাস ওয়েবসাইটে যথাসময় প্রকাশ করা হবে। এনসিটিবি বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় নির্ধারিত সিলেবাস থেকে এ্যাসাইনমেন্টের (নির্ধারিত কাজ) জন্য বিষয়বস্তু নির্ধারণ করেছে। বিষয়বস্তু অনুযায়ী প্রণীত এ্যাসাইনমেন্ট মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিকট প্রতি সপ্তাহে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রেরণ করা হবে।
এ্যাসাইনমেন্ট প্রদান/গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধান শ্রেণীভিত্তিক কর্মসূচী নির্ধারণ এবং আলাদাভাবে প্রদান/গ্রহণের ব্যবস্থা করবেন। এক্ষেত্রে অনলাইনের সাহায্যে/সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিষ্ঠান প্রধান/অভিভাবক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এ্যাসাইনমেন্ট প্রেরণ ও গ্রহণ করবেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ্যাসাইনমেন্ট ব্যতীত মূল্যায়ন সংক্রান্ত অন্য কোন কার্যক্রম (যেমন পরীক্ষা গ্রহণ, বাড়ির কাজ দেয়া ইত্যাদি) গ্রহণ করতে পারবেন না। এ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের দুর্বল দিক চিহ্নিত করবেন এবং পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে সেগুলোর ওপর বিশেষ নজর দিয়ে কাক্সিক্ষত শিখন ফল অর্জনের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা শিক্ষকদের মূল্যায়নসহ এ্যাসাইনমেন্টগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবেন।
সেক্ষেত্রে অভিভাবক/শিক্ষার্থী তার নিকটবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন। মাউশি আরও বলেছে, এই কার্যক্রম ১ নবেম্বর থেকে শুরু হবে। নির্দেশনা বাস্তবায়নে সকল আঞ্চলিক উপ-পরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সমন্বয় করবেন।