বৈশাখী ভাতা ছাড়াই মার্চ মাসের বেতন ছাড়, শিক্ষকদের অসন্তুষ্টি, ডিজির আশ্বাস
নিজস্ব প্রতিনিধি।।
অবশেষে বৈশাখী ভাতা ছাড়াই ছাড় হলো শিক্ষক -কর্মচারীদের মার্চ মাসের বেতন। বৈশাখী ভাতার বিষয়টি নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন দেশের বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা।
আজ রোববার ৫ এপ্রিল বেসরকারি স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের মার্চ মাসের এমপিওর চেক ছাড় হয়েছে। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের ওয়েবসাইট (emis.gov.bd) থেকে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের এমপিওর শীট ডাউনলোড করে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত বেতন ভাতা তোলা যাবে।
উল্লেখ্য, মার্চ মাসের এমপিও শীট www.emis.gov.bd এ ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রথম ওয়েবসাইটে প্রতিষ্ঠানের এমপিও শীট পাওয়া যাচ্ছে। বিগত দিনে নির্ধারিত ব্যাংক থেকে এমপিওশীট সংগ্রহ করতে হতো।
শিক্ষক -কর্মচারীদের মার্চ মাসের বেতন এর সাথে বৈশাখী ভাতার চেক না ছাড়ায় শিক্ষক ও শিক্ষক নেতারা বিভিন্ন মন্তব্য করেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরাম এর মুখপাত্র নজরুল ইসলাম রনি বলেন-বৈশাখী ভাতা ছাড়া মার্চ মাসের এমপিও' ছাড়করণ শিক্ষক সমাজের জন্য সুসংবাদ নয়। করোনার প্রভাবে শিক্ষকরা ঘরে বন্ধী অবস্থায় বৈশাখী ভাতা এ সময়ে না পাওয়া শিক্ষকদের জন্য অনেক কষ্টের বিষয়। অবিলম্বে বৈশাখী ভাতা প্রদান করার জোর দাবী জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ শিক্ষা জাতীয়করণ পরিষদ-এর প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি মোঃ অলি আজাদ বলেন-বৈশাখী ভাতা দ্রুত ছাড়করণ করলে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের কিছুটা উপকার হবে। কারণ দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের কারণে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় মাসিক অনুদানের টাকায় তাদের সংসার চালানো কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। এছাড়াও আগামী ঈদুল ফিতরের অন্ততঃ পনের দিন পূর্বে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা প্রদানের জোর দাবী জানান।
কুমিল্লার শিক্ষক মুহাম্মদ শাহজামান শুভ এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন- বাংলাদে্শের শিক্ষকরা করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের সাথে কাজ করতে আগ্রহী। আমাদের বৈশাখী ভাতার ২৫% করোনা প্রতিরোধে ব্যবহার করার জন্য সরকারকে প্রস্তাব করছি। শিক্ষক হিসেবে এই দূর্যোগ মুহুর্তে আমরা সরকারের সাথে আছি এবং থাকব।
রাজশাহীর মহিশালবাড়ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক মোঃ হায়দার আলী বলেন-বৈশাখী ভাতা, মার্চ মাসের বেতন ছাড় করাই প্রধান মন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রী, মহাপরিচালক মহোদয়কে ধন্যাবাদ জানাই। করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউন চলছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, যান চলাচল বন্ধ, বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারীগণ দারুণ অর্থ কষ্টে আছেন। বেতনের দিকে তাকিয়ে থাকেন, বিভিন্নভাবে খোঁজ নিতে থাকেন। কবে বেতন আসবে, কবে বেতন ব্যাংক থেকে তোলা যাবে। আমার কাছে প্রায় ৫০ জন খোঁজ নিয়েছেন। আর যে সব শিক্ষক কোচিং করান, প্রাইভেট পড়ান তারাও কষ্টে অর্থ কষ্টে আছেন। বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারীগণ বেতনের দিকে তীর্থের কাকের ন্যয় চেয়ে থাকেন। অনেক শিক্ষকগণ আতঙ্কে ছিলেন বেতন ও বৈশাখী ভাতা হয় কি না হয়, দেরীতে হয় নাকি তাদের সে আতঙ্ক কেটে গেছে। এক শ্রেণীর শিক্ষক বেতন ও বৈশাখী ভাতা নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করছিলেন তাদেরকে বলতে চাই শেখ হাসিনার সরকার শিক্ষা বান্ধব সরকার, শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যপকভাবে উন্নয়ন করছেন। তাই সরকারকে সহযোগীতা করা আমাদের দায়িত্ব।
সাতক্ষীরা কলারোয়ার কলারোয়া বেত্রবতী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক মোঃ রাশেদুল হাসান কামরুল বলেন- বৈশাখী ভাতা ছাড়া মার্চ মাসের এমপিও' ছাড়করণ শিক্ষক সমাজের জন্য সুসংবাদ নয়। করোনার প্রভাবে শিক্ষকরা ঘরে বন্ধী অবস্থায় বৈশাখী ভাতা এ সময়ে না পাওয়া শিক্ষকদের জন্য অনেক কষ্টের বিষয়।অবিলম্বে বৈশাখী ভাতা প্রদান করার জোর দাবী জানাচ্ছি।
শিক্ষক সুরক্ষা ফোরামের সভাপতি মোঃ ফয়সল শামীম বলেন- বৈশাখী ভাতা ছাড়া মার্চ মাসের এমপিও' ছাড়করণ শিক্ষক সমাজের জন্য সুসংবাদ নয়। করোনার প্রভাবে শিক্ষকরা ঘরে বন্ধী অবস্থায় বৈশাখী ভাতা এ সময়ে না পাওয়া শিক্ষকদের জন্য অনেক কষ্টের বিষয়। অবিলম্বে বৈশাখী ভাতা প্রদান করার জোর দাবী জানাচ্ছি।
বৈশাখী ভাতা নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এর ডিজি প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক শিক্ষাবার্তা ডট কমকে বলেন-বৈশাখী ভাতা ছাড় হবে কিন্তু ছুটির জন্য দেরি হচ্ছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।