প্রাথমিক শিক্ষকের মর্যাদা
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা যথাযোগ্য না হলে হাই স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথাও শিক্ষার্থীদের যোগ্য হয়ে গড়ে ওঠা সম্ভব নয়। এজন্যই জাপান, সিঙ্গাপুর ও ফিনল্যান্ডের মতো উন্নত দেশগুলো তাদের দেশের প্রাথমিক শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়। সেসব দেশে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন ও মর্যাদাও অত্যধিক।
এজন্য সেরা মেধাবীরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট হয়ে যোগদান করেন। অথচ আমাদের দেশে ঠিক তার বিপরীত চিত্র। প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন-মর্যাদা সবচেয়ে নিম্ন।
যেসব মেধাবী শিক্ষক এ পেশায় রয়েছেন তাঁরা অবহেলিত হয়ে এ পেশা ছাড়তে চেষ্টা করেন অথবা মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা দেওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দু ধরনের শিক্ষক রয়েছেন—প্রধানশিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক। উভয় প্রকার শিক্ষক নিয়োগে শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয় স্নাতক।
স্নাতক অধিকাংশ পেশাজীবী ১০ম গ্রেডে বেতন পেলেও প্রাথমিকের প্রধানশিক্ষকরা বেতন পান ১২তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা বেতন পান ১৫তম গ্রেডে। এমনকি বিসিএস নন-ক্যাডার থেকে নিয়োগকৃত অন্য পেশাজীবীরা সবাই ১০ম গ্রেডে নিয়োগে পেলেও একইসঙ্গে যোগদান করা প্রাথমিকের প্রধানশিক্ষকরা যোগদান করেন ১২তম গ্রেডে। অন্যদিকে প্রধানশিক্ষকের ১ ধাপ নিচে সহকারী শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণ হওয়ার কথা হলেও তাঁরা বেতন পান ১৫তম গ্রেডে।
যোগদান করে প্রাথমিক শিক্ষায় ডিপোমা ডিগ্রি অর্জন করে প্রধানশিক্ষকরা বেতন পান ১১তম গ্রেডে ও সহকারী শিক্ষকরা বেতন পান ১৪তম গ্রেডে। অথচ এসএসসি অথবা এইচএসসি পাসের পর ডিপোমা অথবা ট্রেড কোর্স করে অন্য পেশাজীবীরা ১০ম অথবা ১১তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। তাই সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ এই যে, মুজিববর্ষে সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড ও প্রধানশিক্ষকদের ১০ম গ্রেড প্রদান করে তাঁদের আর্থ-সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি করুন।
মাহফিজুর রহমান মামুন
সহকারী শিক্ষক, ভীমদামাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বোদা, পঞ্চগড়