নতুন বছরে একাডেমিক কার্যক্রম নির্বিঘ্ন হোক
কালের স্রোতে ডুবতে যাওয়া আরেকটি বছরের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি আমরা। বিদায়ী ২০১৯ সালও হারিয়ে যাওয়া অন্য বছরগুলোর মতোই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তবে এ বছরের বিশেষ একটি বৈশিষ্ট্য হল, বছরটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অস্থিরতার বছর হিসেবে চিহ্নিত হবে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই বিদায়ী বছরে নানা অস্থিরতার মধ্য দিয়ে গেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ত্বড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক্স প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ ছাত্রলীগের নির্মম নির্যাতনে প্রাণ হারানোর ঘটনা সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল। আবরার ফাহাদকে হত্যার বিচার দাবি ও ছাত্রলীগের টর্চার সেলে নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল বুয়েটসহ অন্যান্য ক্যাম্পাসও।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অনিয়ম, পরীক্ষা ছাড়া বিভিন্ন সাবজেক্টের ইভিনিং কোর্সে ছাত্র ভর্তি, বছরজুড়ে বিভিন্ন সময় ডাকসু ভিপি নূরুল হক নূরের ওপর হামলা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন ছাত্র-শিক্ষকরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির স্বেচ্ছাচারিতা, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসিবিরোধী আন্দোলন ছাড়াও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং ও দলীয় ছাত্ররাজনীতির কোন্দলে অচলাবস্থা তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রেই কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আমরা মনে করি, শিক্ষায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার এসব অঘটনের দায় কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।
বিদায়ী বছরের শেষ দিকে এসে সান্ধ্য কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে ঢাবির সমাবর্তনে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য ও রাষ্ট্রপতি। নতুন বছরে তার দেয়া নির্দেশনাগুলো পালনের মাধ্যমে বিদায়ী বছরের ও অতীতের ব্যর্থতা দূর এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা-গবেষণার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে কর্তৃপক্ষ সচেষ্ট হবে বলে আমরা আশাবাদী। দেশের ভবিষ্যতের কাণ্ডারি তথা আজকের ছাত্রসমাজের জন্য সবকিছু মসৃণ করা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। জ্ঞান-বিজ্ঞানে এগিয়ে যেতে এক্ষেত্রে কোনো ধরনের অবহেলার সুযোগ নেই। সম্পাদকীয় যুগান্তর