দলবদলের দুয়ার খুলছে ফুটবলে
ডিসেম্বরে যে ফুটবলের নতুন মৌসুম মাঠে গড়াচ্ছে, তা আগেই জানা ছিল। করোনা-পরবর্তীতে ঘরোয়া ফুটবল মাঠে ফেরানোর আগে মূল জটিলতা ছিল খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক ইস্যুটি। ক্লাব ও ফুটবলাররা- দু'পক্ষই নিজেদের দাবিতে ছিল অনড়। দু'পক্ষের অমীমাংসিত ইস্যুর সমাধানে এগিয়ে আসে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
নবনির্বাচিত কমিটির অধীনে গতকাল পেশাদার লিগ কমিটির প্রথম মিটিংয়ে সবার চোখ ছিল খেলোয়াড় এবং ক্লাবের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া জটিলতা নিয়ে। লিগ কমিটির সভায় সেই জটিলতার অবসান হয়েছে। পরিত্যক্ত মৌসুমের বকেয়া টাকা ফুটবলারদের দেওয়া ছাড়াও নতুন মৌসুমের জন্য ৩৫ ভাগ পারিশ্রমিক দিতে হবে ক্লাবগুলোকে। আর ১৯ ডিসেম্বর ফেডারেশন কাপ দিয়ে মাঠে গড়াবে ফুটবলের নতুন মৌসুম।
এতদিন বলা হয়েছিল যে, আগের চুক্তিতে একই ক্লাবে থাকবেন খেলোয়াড়রা। তবে বৃহস্পতিবার জানা গেল, চাইলে যে কোনো ফুটবলার সমঝোতার মাধ্যমে ঠিকানা বদল করতে পারবেন। খেলোয়াড়দের এই সুযোগ দিতে ১ নভেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ফুটবলের দলবদলের তারিখ নির্ধারণ করেছে বাফুফে।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচনের আগে ক্লাবগুলোর সঙ্গে সভা করে লিগ কমিটি। তখন বাফুফে সিদ্ধান্ত নেয় যে, নতুন মৌসুমের জন্য ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিক ফুটবলারদের দেবে ক্লাবগুলো। কিন্তু বাফুফের এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেন খেলোয়াড়রা। তারা সিদ্ধান্ত নেন নির্বাচনের পর সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করবেন।
তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকের পর ইতিবাচক সাড়া পান আশরাফুল ইসলাম রানা-তপু বর্মণরা। বাফুফে সভাপতি তাদের আশ্বস্ত করেছিলেন পারিশ্রমিক ৪০ শতাংশ করে দেবেন।
এর পরই বৃহস্পতিবার ক্লাবগুলোর সঙ্গে মিটিং শেষে পারিশ্রমিক ২৫ থেকে ৩৫ শতাংশ করার কথা জানান পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফে সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী এমপি, 'আগের মিটিংয়ে পারিশ্রমিক ২৫ ভাগ কথা বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে খেলোয়াড়রা সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছেন এবং আমাদের নির্বাহী বোর্ডেও কথা হয়েছে। তারা একেকজন বলেছে ৬০ ভাগ, কেউ বলেছে ৫০ ভাগ। তবে আমরা ক্লাব এবং খেলোয়াড়দের কথা বিবেচনায় এনে এবং নির্বাহী কমিটিতে যে আলোচনা হয়েছে সেই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ২৫ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ ভাগ অর্থাৎ ২০২০-২১ মৌসুমে তাদের ২০১৯-২০ মৌসুমের যে অর্থ বাকি আছে তার সঙ্গে এই ৩৫ ভাগ যোগ করে খেলোয়াড়দের সঙ্গে নতুনভাবে চুক্তি করতে হবে ক্লাবগুলোকে।'
নতুন মৌসুমে প্রতিটি ক্লাব চারজন বিদেশি নিবন্ধন করতে পারবে এবং সবাই খেলতে পারবে। এই চারজনের মধ্যে একজন হতে হবে এশিয়ান কোটায়। চাইলে যে কোনো খেলোয়াড় ক্লাব ছাড়তে পারবেন বলে জানান মুর্শেদী, 'কোনো ক্লাব যদি কোনো খেলোয়াড়কে না রাখতে চায়, তাহলে সেই খেলোয়াড়ের নাম ৩০ অক্টোবরের মধ্যে প্রেরণ করতে হবে। যদি কোনো কারণে ওই খেলোয়াড় সমঝোতার মাধ্যমে কোনো ক্লাবে না যাওয়ার সুযোগ পায়, তাহলে সেই খেলোয়াড়ের ঠিকানা হবে পুরোনো ক্লাবেই।'
ঢাকার আশপাশে ছয়টি ভেন্যুর মধ্যে তিন-চারটি ভেন্যু চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন সালাম মুর্শেদী, 'আমরা মাঠগুলো আগে দেখব। তারপর পরবর্তী মিটিংয়ে ভেন্যু নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। কারণ হলো করোনার কারণে কোনো দলকে নিয়ে কোনো জায়গায় রাত্রিযাপন করা এরকম কোনো ভেন্যুতে আমরা আগামী মৌসুমে যাব না বা যেতে পারব না। আমাদের মতো ক্লাবগুলোরও একই পরামর্শ।'