কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে ডিজিটাল ছোঁয়া লাগবে কবে?
বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার শিক্ষাক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছেন। শিক্ষাক্ষেত্রের আধুনিকায়ন ও বিশ্বমানে উন্নীত করতে সময়োপযোগী অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন কারিগরি শিক্ষার প্রসারে। কারিগরি শিক্ষার প্রসারে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল কোর্স চালু করেছেন প্রায় দুই যুগের কাছাকাছি। বেসরকারি কারিগরি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসায় কোনো কাঁচামাল নেই,কোনো ব্যবহারিক ক্লাস নেই,শিক্ষকদের কোনো প্রশিক্ষণ নেই। কারিকুলামে ব্যবহারিক ক্লাসের উপর গুরুত্বারোপ করা হলেও বাস্তবায়নে নেই মোটেও। পক্ষান্তরে সরকারি সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থিদের ব্যবহারিক ক্লাসের জন্য সরকার প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ করে। শিক্ষকদের দেশী বিদেশি প্রশিক্ষণ দেয়। উন্নত ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে ক্লাস হয়। শিক্ষকদের ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য দামীয় শিক্ষা উপকরণ প্রদান করা হয়। এতোসব সুযোগ সুবিধার বিপরীতে বেসরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থি ও শিক্ষকদের ব্যাপারে সম্পুর্ন উদাসীন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর ব্যাপারে এতো উদাসীন হলে সরকারের আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। অথচ সরকার কারিগরি শিক্ষার প্রসারে খুবই আন্তরিক। সমস্যা হলো যাদের মাধ্যমে কারিগরি শিক্ষার প্রসারতায় সরকার বিভিন্ন যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে আমার মনে হয় তাদের মধ্যে যুগোপযোগী ও সঠিক কারিগরি জ্ঞানের অভাব আছে। সাধারণ শাখায় বিসিএস ক্যাডারের হাতে কারিগরি শাখার মানোন্নয়নের দায়িত্ব দিলে সুফল আশা করা কঠিন। দেশের একমাত্র কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন বিভিন্ন প্রোগ্রামের কাজেও আছে গাফিলতি। সাধারণ শিক্ষায় ডিজিটাল পদ্ধতির পুরোপুরি ব্যবহার হলেও কারিগরি শিক্ষায় অনেক পিছিয়ে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর( মাউশি) সাধারণ শাখার শিক্ষক কর্মচারীদের বিদ্যমান যাবতীয় কর্মকাণ্ড যতো দ্রুততার সাথে এগোয়, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর তার চেয়ে অনেক পিছিয়ে। অথচ সারাদেশে কারিগরি শাখার শিক্ষক সাধারণ শাখার তুলনায় অনেক কম। কারিগরি শাখার শিক্ষকদের এমপিও সহ অধিদপ্তরে পাঠানো সকল কাগজপত্র হওয়া উচিত অনলাইনভিত্তিক। সরকার যেখানে সবকিছুতে এনালগ পদ্ধতি বাদ দিয়ে ডিজিটাল পদ্ধতির প্রচলন করছে। কারিগরি অধিদপ্তর এখনো সেখানে এনালগ নিয়েই পরে আছে। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ও সরকারের ভিশন বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করার কথা কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের। নাম ও ঠিকানা সংশোধনী সহ বোর্ডের বিভিন্ন কাজও হওয়া উচিত অনলাইনভিত্তিক। বর্তমান সরকার শিক্ষকদের এমপিও কার্যক্রমে ডিজিটাল পদ্ধতির প্রবর্তণ করছেন। প্রতিষ্ঠানে বসে অধিদপ্তরের ঠিকানায় থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ ডাউনলোড করা যায়। মাউশি'র এটি একটি যুগোপযোগী উদ্যো। বিগত সময়ে ঢাকাস্থ ডিজি অফিস থেকে এমপিও সিট উপজেলার স্কুল গুলোয় না পৌঁছালে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে বিল জমা দেওয়া যেতোনা। মার্চ ২০২০ মাসের এমপিও সিট সাধারণ শাখায় অনলাইনে প্রদান করলেও কারিগরি শাখায় চালু করেনি বা করতে পারেনি। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর আগের নিয়মে ডাক যুগে এমপিও সিট পাঠাবে। অথচ কারিগরি শাখায় অনেক আগেই অনলাইনে এমপিও সিট প্রেরণের সুযোগ করা উচিত ছিল। অতি উৎসাহী কিছু কর্তাব্যক্তির কারনে বিগত সময়ে আমরা দেখেছি কারিগরি শাখায় কিছু হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কারিগরি শিক্ষাবান্ধব সরকারের মহৎ উদ্দেশ্যকে ব্যহত করার জন্য অতিউৎসাহী কর্মকর্তাদের হঠকারী সিদ্ধান্ত পরিহার করা উচিত।
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে পেজে লাইক দিয়ে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়।
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
এই বিভাগের আরও খবর